চট্টগ্রাম জেলা প্রতিনিধি :
রেলওয়ে রানিং স্টাফদের ধর্মঘটের কারণে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) শিক্ষার্থীদের যাতায়াতের প্রধান বাহন শাটল ট্রেন বন্ধ রয়েছে। রোববার (১০ সেপ্টেম্বর) সকাল থেকে নগরের বটতলী রেলস্টেশন থেকে কোনো ট্রেন চবি ক্যাম্পাসের উদ্দেশে ছেড়ে যায়নি। এতে করে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা মারাত্মক ভোগান্তিতে পড়েছেন। তবে শিক্ষার্থীদের ক্লাস, পরীক্ষা ও তাৎক্ষণিক সমস্যা বিবেচনায় নিয়ে আটটি বাসের ব্যবস্থা করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
যদিও চবি প্রশাসন শিক্ষার্থীদের জন্য বটতলী রেলস্টেশন থেকে ৩টি এবং ষোলশহর রেলস্টেশন থেকে ৫টি বাসের ব্যবস্থা করেছে। এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা নিজেদের উদ্যোগে ভিন্ন যানবাহনে ক্যাম্পাসের উদ্দেশে রওনা দেয়।
রোববার (১০ সেপ্টেস) সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড. নূরুল আজিম সিকদার বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, আমরা ট্রেন চলাচলের বিষয়ে কাজ করছি। শিক্ষার্থীদের জন্য আটটি বাস বরাদ্দ রাখা হয়েছে। সকাল ৯টায় পাঁচটি ষোলশহর থেকে ক্যাম্পাসের উদ্দেশ্যে ছেড়ে গেছে। আর তিনটি একই সময়ে বটতলী থেকে ক্যাম্পাসের উদ্দেশ্যে ছেড়ে গেছে। ক্লাস-পরীক্ষা যথাসময়ে হবে।
চবি শিক্ষার্থী মুজিবুর রহমান বলেন, ট্রেন বন্ধ হবে আমরা কেউ জানি না। সকালে বটতলী রেলস্টেশন এসে দেখি ট্রেন চলাচল বন্ধ। কোনো ধরনের ঘোষণা ছাড়াই রেলওয়ে শ্রমিকরা নাকি ধর্মঘট ডেকেছে।
শাটলে ওই দুর্ঘটনার জন্য ছাদে ওঠা ছাত্রদের দায়ী করে রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের বিভাগীয় পরিবহন কর্মকর্তা বলেন, যখন শাটলে দুর্ঘটনা হয়েছিল, তখন শাটলের বগি খালি ছিল। শিক্ষার্থীদের ছাদে ভ্রমণের কোনো প্রয়োজন ছিল না। ঝুঁকিপূর্ণভাবে ছাদে ভ্রমণের ফলে ওরা দুর্ঘটনায় পতিত হয়েছিল। সেখানে চালক ও গার্ডের কী দোষ? তাদের কেন মারধর করা হয়েছে? তাই চালকরা নিরাপত্তার অভাবে রয়েছেন। সেজন্য নিরাপত্তাহীনতার কারণ দেখিয়ে গতকাল শনিবার (৯ সেপ্টেম্বর) সকাল থেকে ট্রেন চলাচল বন্ধ রেখেছেন লোকোমাস্টাররা, যা আজও বন্ধ আছে। নিরাপত্তা নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত ট্রেন না চালানোর কথা জানিয়েছেন লোকোমাস্টাররা।
এর আগে গত বৃহস্পতিবার শাটল ট্রেন দুর্ঘটনাকে কেন্দ্র করে ট্রেনের লোকোমাস্টারদের মারধর করেন বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা। একপর্যায়ে ট্রেন স্টেশনে রেখেই দুই লোকমাস্টার ও গার্ড পালিয়ে যান। এরপর থেকে ক্যাম্পাসে নিরাপত্তা নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত শাটল ট্রেন না চালানোর সিদ্ধান্ত নেন লোকমাস্টাররা।
পরবর্তীতে শনিবার রাতে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষের সঙ্গে বৈঠক করে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ঘোষণা দেয়, রোববার থেকে নিয়মিত সময়সূচিতে শাটল ট্রেন চলবে। কর্তৃপক্ষের এমন ঘোষণার পর শিক্ষার্থীরা সকাল থেকে রেলস্টেশনে আসতে শুরু করেন। এসে দেখেন ট্রেন চলছে না।
রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের বিভাগীয় পরিবহন কর্মকর্তা মো. আনিসুর রহমান বলেন, শাটল দুর্ঘটনায় শিক্ষার্থী আহত হওয়ার ঘটনায় আমাদের দুই লোকোমাস্টারকে লাঞ্ছিত করা হয়। নিরাপত্তাহীনতার কারণে ওরা শাটল চালাচ্ছে না। তাই শাটল চলাচল বন্ধ রয়েছে।