শরীয়তপুর জেলা প্রতিনিধি :
শরীয়তপুর ডামুড্যায় জমিসংক্রান্ত বিরোধের জেরে প্রতিপক্ষের হামলায় সিরাজুল ইসলাম মাঝি (৫৫) নামে এক জামায়াত নেতা নিহত হয়েছেন।
বুধবার (১৬ অক্টোবর) সকালে উপজেলার সিড্যা ইউনিয়নের মধ্য সিড্যা এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
নিহত সিরাজুল ইসলাম মাঝি সিড্যা ইউনিয়ন জামায়াতের বাইতুলমাল সম্পাদক ও মৃত নুরু বক্স মাঝির ছেলে।
পুলিশ ও পরিবার সূত্রে জানা যায়, দীর্ঘদিন ধরে নিহত সিরাজুল ইসলাম মাঝির সঙ্গে অভিযুক্ত শরীফ মাঝির পরিবারের জমিজমা নিয়ে বিরোধ চলে আসছে। শরীফ মাঝির পরিবার আওয়ামী লীগের প্রভাব ব্যবহার করে সিরাজুল ইসলাম মাঝির জমি জোরপূর্বক দখলে নিয়ে বেড়া দিয়ে রেখেছিলেন। সরকার পতনের পর সেই জমি স্থানীয় সালিশের মাধ্যমে মেপে বুঝে নেন সিরাজুল।
বুধবার সকালে তিনি জমির দখল নিয়ে বেড়া খুলতে গেলে শরিফ মাঝি সিরাজুল ও তার স্ত্রীকে মারধর শুরু করেন। মারধরের একপর্যায়ে জামায়াত নেতা অসুস্থ হয়ে পড়েন। পরে স্থানীয় ও তার পরিবারের লোকজন ভেদরগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। এ ঘটনায় একজনকে আসামি করে ডামুড্যা থানায় মামলা করা হয়েছে। দোষী ব্যক্তির দ্রুত বিচার দাবি করেছেন পরিবার ও স্থানীয়রা।
নিহতের স্ত্রী বলেন, ‘আমাদের জায়গা আওয়ামী লীগের নেতাদের দিয়ে জোর করে দখল করে বেড়া দিয়ে রেখেছিল শরীফ মাঝি। আজ আমাদের জমিতে বেড়া খুলতে গেলে শরীফ এসে বাধা দেয়। একপর্যায়ে সে আমাদের মারধর শুরু করে। পরে কী হয়েছে, তা আমি জানি না।’
সিড্যা ইউনিয়নের প্যানেল চেয়ারম্যান আমির হোসেন বলেন, বিগত সরকারের আমলে জোর করে নিহত সিরাজুল ইসলামের জমি দখল করে বেড়া দিয়ে রেখেছিল। আমরা স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিরা মিলে মেপে তার জমি তাকে বুঝিয়ে দিই। সেই জমির বেড়া খুলতে গেলে তার ওপর হামলা করে তাকে মেরে ফেলা হয়।’
ভেদরগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিকেল অফিসার ডা. আরমান বলেন, সিরাজুল ইসলামকে মৃত অবস্থায় হাসপাতালে আনা হয়েছিল। তার শরীরে তেমন কোনো বড় আঘাতের চিহ্ন পাওয়া যায়নি। ময়নাতদন্ত শেষে বলা যাবে কি কারণে তার মৃত্যু হয়েছে।
ডামুড্যা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ হাফিজুর রহমান জানান, জমিজমা নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ ছিল নিহত সিরাজুল ইসলাম মাঝি ও শরীফ মাঝির পরিবারের। সকালে সেই জমিতে কাজ করতে গেলে সিরাজুল ইসলাম মাঝিকে ধাক্কা দিলে তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন। হাসপাতালে নিলে তাকে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
ওসি বলেন, নিহত সিরাজুল ইসলাম হার্টের রোগী ছিলেন। সুরতহাল করা হচ্ছে, তদন্ত সাপেক্ষে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।