Dhaka শনিবার, ১২ জুলাই ২০২৫, ২৮ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

শপথ নিচ্ছেন না জাপার সংসদ সদস্যরা

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

এবারের নির্বাচনের জাতীয় পার্টি (জাপা) থেকে নির্বাচিত সংসদ সদস্যরা বুধবার (১০ জানুয়ারি) শপথ না নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বলে জানা গেছে। বরং আগামীকাল দলের সঙ্গে বৈঠক করে তাদের করণীয় নির্ধারণ করবেন বলে জানা গেছে।

মঙ্গলবার (৯ জানুয়ারি) দলটির মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নু এ তথ্য জানান।

তিনি চুন্নু বলেন, আগামীকালকের পরে আমরা শপথ নেব। কালকে (১০ জানুয়ারি) আমরা শপথ নিচ্ছি না।

বুধবার (১০ জানুয়ারি) সকাল ১০টায় জাতীয় সংসদ ভবনের শপথ কক্ষে অনুষ্ঠিত হবে। স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী এই শপথবাক্য পাঠ করাবেন।

শপথ গ্রহণের বিষয়ে জানতে চাইলে জাতীয় পার্টি মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নু গণমাধ্যমকে বলেন, আমি এলাকায় আছি। আজকে ঢাকায় ফিরব। এরপর দলের বৈঠক হবে তারপর সিদ্ধান্ত হবে। দলের সঙ্গে বৈঠক না করে কিছু বলতে পারব না।

চুন্নু জানান, পরশু (বৃহস্পতিবার) সকাল ১১টায় জাতীয় সংসদে একাদশ জাতীয় সংসদের উপনেতা জি এম কাদেরের অফিসে এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। বৈঠকে আলাপ-আলোচনা করে ঠিক করা হবে শপথের বিষয়টি।

এদিকে জাতীয় পার্টির কো-চেয়ারম্যান ও পটুয়াখালী-১ আসনের সংসদ সদস্য এ বি এম রুহুল আমিন হাওলাদার বলেন, শপথের সিদ্ধান্ত দলীয়ভাবে নেওয়া হবে। অবশ্য চেয়ারম্যান এবং মহাসচিব দুজনই ঢাকার বাইরে। আমি যোগাযোগ করেছিলাম। কিন্তু এখনো বুধবার শপথ নেওয়ার বিষয় এখনো কিছু জানানো হয়নি।

জাপা সূত্রে জানা গেছে, বৃহস্পতিবার বেলা ১১টার দিকে জাতীয় সংসদের বিরোধীদলীয় উপনেতা জিএম কাদেরের অফিসে বৈঠক করবেন জাপার নীতিনির্ধারকেরা। সেখান থেকে পরবর্তী করণীয় নির্ধারণ করা হবে।

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের সঙ্গে আসন সমঝোতা করে নির্বাচনে অংশ নেয় সংসদের বিরোধী দল জাতীয় পার্টি। ফলে জাপাকে ২৬টি আসনে ছাড় দিয়ে সেসব আসনে নৌকা প্রতীকের প্রার্থী সরিয়ে নেওয়া হয়। কিন্তু নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন বঞ্চিত ১৫ স্বতন্ত্র প্রার্থীর কাছে হেরে যান জাতীয় পার্টির লাঙ্গল প্রতীকের প্রার্থীরা। দলটির মাত্র ১১ প্রার্থী জয়ী হতে পেরেছেন।

হেরে যাওয়া প্রার্থীদের মধ্যে রয়েছেন দলের চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ কাদেরের স্ত্রী শেরিফা কাদের, যিনি ঢাকা-১৮ আসন থেকে নির্বাচনে অংশ নেন। তাকে ছাড় দিয়ে এ আসন থেকে নৌকা প্রতীকের প্রার্থী সরিয়ে নেয় আওয়ামী লীগ। তারপরও আওয়ামী লীগের স্বতন্ত্র প্রার্থী খসরু চৌধুরীর কাছে জামানত বাজেয়াপ্ত হয়ে হেরে যান শেরিফা কাদের।

বেসরকারি ফলাফল অনুযায়ী জাপার জয়লাভ করা প্রার্থীরা হচ্ছেন দলের চেয়ারম্যান জি এম কাদের (রংপুর-৩), মহাসচিব মো. মুজিবুল হক চুন্নু (কিশোরগঞ্চ-৩), কো-চেয়ারম্যান আনিসুল ইসলাম মাহমুদ (চট্টগ্রাম-৫), এ বি এম রুহুল আমিন হাওলাদার (পটুয়াখালী-১), প্রেসিডিয়াম সদস্য মাসুদ উদ্দিন চৌধুরী (ফেনী-৩), হাফিজ উদ্দিন আহমেদ (ঠাকুরগাঁও-৩), গোলাম কিবরিয়া (বরিশাল-৩), এ কে এম সেলিম ওসমান (নারায়ণগঞ্জ-৫), মো. আশরাফুজ্জামান (সাতক্ষীরা-২), এ কে এম মোস্তাফিজুর রহমান (কুড়িগ্রাম-১) ও শরিফুল ইসলাম (বগুড়া-২)। তাদের মধ্যে রুহুল আমিন হাওলাদার ও আশরাফুজ্জামান ছাড়া বাকিরা বর্তমান সংসদে এমপি হিসেবে আছেন।

জাতীয় পার্টির বর্তমান সংসদ সদস্যদের মধ্যে নির্বাচনে পরাজিত হয়েছেন– সৈয়দ আবু হোসেন বাবলা, শামীম হায়দার পাটোয়ারী, ফখরুল ইমাম, পীর ফজলুর রহমান, পনির উদ্দিন আহমেদ, আহসান আদেলুর রহমান, রানা মোহাম্মদ সোহেল, শরিফুল ইসলাম, লিয়াকত হোসেন, নাসরিন জাহান, নুরুল ইসলাম তালুকদার। এর বাইরে রওশন এরশাদ ও সাদ এরশাদ নির্বাচনে অংশ নেননি। আর দলের বহিষ্কৃত সাবেক মহাসচিব মসিউর রহমান রাঙা স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করেও জয়ী হতে পারেননি। অন্যদিকে আওয়ামী লীগের কাছ থেকে ছাড় পাওয়ায় শেষ মুহূর্তে মনোনয়ন প্রত্যাহর করে সরে দাড়ান দলের প্রেসিডিয়াম সদস্য কাজী ফিরোজ রশীদ। এ ছাড়া দলের আরেক সংসদ সদস্য রুস্তম আলী ফরাজি স্বতন্ত্রভাবে নির্বাচন করে হেরে গেছেন।

দলের বহিষ্কৃত সাবেক মহাসচিব মসিউর রহমান রাঙা স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করেও জয়ী হতে পারেননি। অন্যদিকে আওয়ামী লীগের কাছ থেকে ছাড় পাওয়ায় শেষ মুহূর্তে মনোনয়ন প্রত্যাহর করে সরে দাড়ান দলের প্রেসিডিয়াম সদস্য কাজী ফিরোজ রশীদ। এ ছাড়া দলের আরেক সংসদ সদস্য রুস্তম আলী ফরাজি স্বতন্ত্রভাবে নির্বাচন করে হেরে গেছেন।

বর্তমানে নিজ নিজ নির্বাচনী এলাকায় অবস্থান করছেন দলের চেয়ারম্যান জিএম কাদের, মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নু, সিনিয়র কো-চেয়ারম্যান আনিসুল ইসলাম মাহমুদ।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

চাঁদাবাজি নয়, ভাঙারি দোকান দখল দ্বন্দ্বেই মিটফোর্ড হত্যাকাণ্ড: ডিএমপি

শপথ নিচ্ছেন না জাপার সংসদ সদস্যরা

প্রকাশের সময় : ০৩:৫৮:৪৫ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৯ জানুয়ারী ২০২৪

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

এবারের নির্বাচনের জাতীয় পার্টি (জাপা) থেকে নির্বাচিত সংসদ সদস্যরা বুধবার (১০ জানুয়ারি) শপথ না নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বলে জানা গেছে। বরং আগামীকাল দলের সঙ্গে বৈঠক করে তাদের করণীয় নির্ধারণ করবেন বলে জানা গেছে।

মঙ্গলবার (৯ জানুয়ারি) দলটির মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নু এ তথ্য জানান।

তিনি চুন্নু বলেন, আগামীকালকের পরে আমরা শপথ নেব। কালকে (১০ জানুয়ারি) আমরা শপথ নিচ্ছি না।

বুধবার (১০ জানুয়ারি) সকাল ১০টায় জাতীয় সংসদ ভবনের শপথ কক্ষে অনুষ্ঠিত হবে। স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী এই শপথবাক্য পাঠ করাবেন।

শপথ গ্রহণের বিষয়ে জানতে চাইলে জাতীয় পার্টি মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নু গণমাধ্যমকে বলেন, আমি এলাকায় আছি। আজকে ঢাকায় ফিরব। এরপর দলের বৈঠক হবে তারপর সিদ্ধান্ত হবে। দলের সঙ্গে বৈঠক না করে কিছু বলতে পারব না।

চুন্নু জানান, পরশু (বৃহস্পতিবার) সকাল ১১টায় জাতীয় সংসদে একাদশ জাতীয় সংসদের উপনেতা জি এম কাদেরের অফিসে এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। বৈঠকে আলাপ-আলোচনা করে ঠিক করা হবে শপথের বিষয়টি।

এদিকে জাতীয় পার্টির কো-চেয়ারম্যান ও পটুয়াখালী-১ আসনের সংসদ সদস্য এ বি এম রুহুল আমিন হাওলাদার বলেন, শপথের সিদ্ধান্ত দলীয়ভাবে নেওয়া হবে। অবশ্য চেয়ারম্যান এবং মহাসচিব দুজনই ঢাকার বাইরে। আমি যোগাযোগ করেছিলাম। কিন্তু এখনো বুধবার শপথ নেওয়ার বিষয় এখনো কিছু জানানো হয়নি।

জাপা সূত্রে জানা গেছে, বৃহস্পতিবার বেলা ১১টার দিকে জাতীয় সংসদের বিরোধীদলীয় উপনেতা জিএম কাদেরের অফিসে বৈঠক করবেন জাপার নীতিনির্ধারকেরা। সেখান থেকে পরবর্তী করণীয় নির্ধারণ করা হবে।

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের সঙ্গে আসন সমঝোতা করে নির্বাচনে অংশ নেয় সংসদের বিরোধী দল জাতীয় পার্টি। ফলে জাপাকে ২৬টি আসনে ছাড় দিয়ে সেসব আসনে নৌকা প্রতীকের প্রার্থী সরিয়ে নেওয়া হয়। কিন্তু নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন বঞ্চিত ১৫ স্বতন্ত্র প্রার্থীর কাছে হেরে যান জাতীয় পার্টির লাঙ্গল প্রতীকের প্রার্থীরা। দলটির মাত্র ১১ প্রার্থী জয়ী হতে পেরেছেন।

হেরে যাওয়া প্রার্থীদের মধ্যে রয়েছেন দলের চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ কাদেরের স্ত্রী শেরিফা কাদের, যিনি ঢাকা-১৮ আসন থেকে নির্বাচনে অংশ নেন। তাকে ছাড় দিয়ে এ আসন থেকে নৌকা প্রতীকের প্রার্থী সরিয়ে নেয় আওয়ামী লীগ। তারপরও আওয়ামী লীগের স্বতন্ত্র প্রার্থী খসরু চৌধুরীর কাছে জামানত বাজেয়াপ্ত হয়ে হেরে যান শেরিফা কাদের।

বেসরকারি ফলাফল অনুযায়ী জাপার জয়লাভ করা প্রার্থীরা হচ্ছেন দলের চেয়ারম্যান জি এম কাদের (রংপুর-৩), মহাসচিব মো. মুজিবুল হক চুন্নু (কিশোরগঞ্চ-৩), কো-চেয়ারম্যান আনিসুল ইসলাম মাহমুদ (চট্টগ্রাম-৫), এ বি এম রুহুল আমিন হাওলাদার (পটুয়াখালী-১), প্রেসিডিয়াম সদস্য মাসুদ উদ্দিন চৌধুরী (ফেনী-৩), হাফিজ উদ্দিন আহমেদ (ঠাকুরগাঁও-৩), গোলাম কিবরিয়া (বরিশাল-৩), এ কে এম সেলিম ওসমান (নারায়ণগঞ্জ-৫), মো. আশরাফুজ্জামান (সাতক্ষীরা-২), এ কে এম মোস্তাফিজুর রহমান (কুড়িগ্রাম-১) ও শরিফুল ইসলাম (বগুড়া-২)। তাদের মধ্যে রুহুল আমিন হাওলাদার ও আশরাফুজ্জামান ছাড়া বাকিরা বর্তমান সংসদে এমপি হিসেবে আছেন।

জাতীয় পার্টির বর্তমান সংসদ সদস্যদের মধ্যে নির্বাচনে পরাজিত হয়েছেন– সৈয়দ আবু হোসেন বাবলা, শামীম হায়দার পাটোয়ারী, ফখরুল ইমাম, পীর ফজলুর রহমান, পনির উদ্দিন আহমেদ, আহসান আদেলুর রহমান, রানা মোহাম্মদ সোহেল, শরিফুল ইসলাম, লিয়াকত হোসেন, নাসরিন জাহান, নুরুল ইসলাম তালুকদার। এর বাইরে রওশন এরশাদ ও সাদ এরশাদ নির্বাচনে অংশ নেননি। আর দলের বহিষ্কৃত সাবেক মহাসচিব মসিউর রহমান রাঙা স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করেও জয়ী হতে পারেননি। অন্যদিকে আওয়ামী লীগের কাছ থেকে ছাড় পাওয়ায় শেষ মুহূর্তে মনোনয়ন প্রত্যাহর করে সরে দাড়ান দলের প্রেসিডিয়াম সদস্য কাজী ফিরোজ রশীদ। এ ছাড়া দলের আরেক সংসদ সদস্য রুস্তম আলী ফরাজি স্বতন্ত্রভাবে নির্বাচন করে হেরে গেছেন।

দলের বহিষ্কৃত সাবেক মহাসচিব মসিউর রহমান রাঙা স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করেও জয়ী হতে পারেননি। অন্যদিকে আওয়ামী লীগের কাছ থেকে ছাড় পাওয়ায় শেষ মুহূর্তে মনোনয়ন প্রত্যাহর করে সরে দাড়ান দলের প্রেসিডিয়াম সদস্য কাজী ফিরোজ রশীদ। এ ছাড়া দলের আরেক সংসদ সদস্য রুস্তম আলী ফরাজি স্বতন্ত্রভাবে নির্বাচন করে হেরে গেছেন।

বর্তমানে নিজ নিজ নির্বাচনী এলাকায় অবস্থান করছেন দলের চেয়ারম্যান জিএম কাদের, মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নু, সিনিয়র কো-চেয়ারম্যান আনিসুল ইসলাম মাহমুদ।