নিজস্ব প্রতিবেদক :
লেবানন থেকে প্রথম দফায় ফেরত এসেছেন ৫৪ জন বাংলাদেশি প্রবাসী। সোমবার (২১ অক্টোবর) সন্ধ্যায় এসব বাংলাদেশি বিমানযোগে ঢাকা শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছান।
৫৪ জন প্রবাসী বাংলাদেশি বৈরুত থেকে বিমানযোগে প্রথমে জেদ্দায় পৌঁছায়। সেখান থেকে সোমবার সন্ধ্যায় তারা দেশে পৌঁছান।
জানা গেছে, ২৬ জন পুরুষ, ২০ জন নারী, ছয় শিশু এবং দুই নবজাতকসহ মোট ৫৪ জনের দলটি জেদ্দায় ট্রানজিট বিরতির পর সন্ধ্যা ৬টায় হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করে। দলটি স্থানীয় সময় রোববার রাত ১০টা ৫০ মিনিটে বৈরুত থেকে রওনা হয় এবং আজ সকাল স্থানীয় সময় ৮টা ২০ মিনিটে জেদ্দায় পৌঁছায়। পরে ফ্লাইটটি জেদ্দা থেকে স্থানীয় সময় দুপুর ১টা ২০ মিনিটে ঢাকার উদ্দেশে রওয়ানা হয়।
এসময় হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে তাদের খোঁজ-খবর নেন প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান বিষয়ক উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল।
এসময় তিনি বলেন, আমি লেবাননের বাংলাদেশ দূতাবাসের কর্মকর্তাদের ধন্যবাদ জানাচ্ছি, কারণ ফিরে যারা আসছেন তারা দূতাবাসের প্রশংসা করছেন। উনারা সেখানে প্রাণের ঝুঁকি নিয়ে দিন-রাত কাজ করছেন।
সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে আসিফ নজরুল বলেন, আমরা দেখবো ফিরে যারা আসছেন তাদের পুনর্বাসন করা যায় কিনা। লেবাননের পরিস্থিতি ঠিক হলে উনারা আবার যাবেন। আমরা এখানে উনাদেরকে ছেড়ে দেবো না। আমরা দেশে অথবা বিদেশে পুনর্বাসনের চেষ্টা করবো।
আসিফ নজরুল বলেন, রেমিট্যান্সযোদ্ধা যারা দেশে আসছেন আমরা তাদেরকে ভিআইপি সুবিধা দেওয়ার চেষ্টা করছি। প্রবাসীদের এই সেবা দিতে আমরা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। অচিরেই আমরা প্রবাসীদের জন্য লাউঞ্জ তৈরি করছি, দুই সপ্তাহের মতো লাগবে। আমরা আশা করি বড় অনুষ্ঠান করে উদ্বোধন করতে পারবো। আমাদের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের স্বপ্ন, প্রবাসীরা যেন ভিআইপি ট্রিটমেন্ট পায়।
এর আগে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন গণমাধ্যমকে জানিয়েছিলেন, সরকার লেবানন থেকে নথিভুক্ত বাংলাদেশি নাগরিকদের প্রত্যাবাসন শুরু করেছে। বৈরুত থেকে বহির্গামী ফ্লাইটে পর্যাপ্ত আসন না পাওয়ায় প্রাথমিক পর্যায়ে সীমিত সংখ্যক প্রবাসীকে ফিরিয়ে আনা হচ্ছে। তিনি বলেন, সামর্থ্যের সীমাবদ্ধতার পরিপ্রেক্ষিতে আমরা একটি বড় দলকে সমুদ্রপথে তুরস্কে পাঠানোর বিকল্প খুঁজছি। সেখান থেকে তারা বিমানে করে বাংলাদেশে ফিরতে পারবেন।
উল্লেখ্য, লেবাননে চলমান যুদ্ধ পরিস্থিতিতে প্রবাসী বাংলাদেশিরা আতঙ্কে রয়েছেন। অনেকেই আশ্রয়কেন্দ্র কিংবা নিরাপদ স্থানে আশ্রয় নিয়েছেন। এসব প্রবাসীদের ফিরিয়ে আনতে উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। লেবাননে আনুমানিক ৭০ হাজার থেকে ১ লাখ বাংলাদেশি নাগরিক রয়েছেন। তবে এর মধ্যে প্রায় এক হাজার ৮০০ জন দেশে ফেরার আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। এর মধ্যে প্রায় ১৬০ জনের প্রত্যাবাসনের জন্য প্রয়োজনীয় আইনি নথিপত্র রয়েছে। এরই অংশ হিসেবে প্রথম দফায় ফিরেছেন ৫৪ জন বাংলাদেশি। দ্বিতীয় ধাপে আগামী মঙ্গলবার (২২ অক্টোবর) আরও ৬৫ বাংলাদেশির দেশে ফেরার কথা রয়েছে। তারা ঢাকায় এসে পৌঁছাবেন ২৩ অক্টোবর।