Dhaka বুধবার, ১৬ জুলাই ২০২৫, ১ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

লুটপাট করতে নয়, লুটপাট বন্ধ করতেই এ বাজেট ঘোষণা করা হয়েছে : কাদের

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

লুটপাট করতে নয়, লুটপাট বন্ধ করতেই এ বাজেট ঘোষণা করা হয়েছে বলে মন্তব্য করে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, দুর্নীতিবাজদের ধরতে নতুন করে আইন করার দরকার নেই। যে আইন আছে সেটা দিয়েই ধরা সম্ভব। প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, আমিও বলব- আদার দিয়েছি, রুই কাতলা ধরা পড়বে।

রোববার (৯ জুন) ২৩ বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতাদের সঙ্গে ঢাকা মহানগর উত্তর-দক্ষিণ, জেলা আওয়ামী লীগ এবং সকল সহযোগী সংগঠনের সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকদের যৌথসভায় তিনি এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, দুর্নীতি করে কেউ কোনো ছাড় পাবে না। আজিজ-বেনজীর আওয়ামী লীগের কেউ না। তারা দুর্নীতি করেছে। তাদের দায়মুক্তি দিয়ে বিচারহীনতার সংস্কৃতি চালু করা হচ্ছে না।

মির্জা ফখরুলের প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, কালো টাকা সাদা করেছেন সাইফুর রহমান, বেগম খালেদা জিয়া। তাহলে তারাও কি দুর্বৃত্ত।

তিনি বলেন, বাজেটটা করা হয়েছে রাঘব-বোয়ালদের লুটপাট বন্ধ করার জন্য। বিএনপি আমলে যে লুটপাটের রাজত্ব সৃষ্টি হয়েছিল, দেশকে ধ্বংসের দিকে নিয়ে গিয়েছিল, তা থেকে দেশকে রক্ষা করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। লুটপাট করে কেউ এখানে পার পাবে না। নিজের লোকদের শায়েস্তা করার সাহস বিএনপি নেই।’

দলের নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘বিএনপি আগুন সন্ত্রাসের যে সংস্কৃতি চালু করেছে, এর বিরুদ্ধে জনগণের জানমাল রক্ষায় আমাদের অবশ্যই শান্তি সমাবেশ করতে হবে। প্রতিরোধ করতে হবে। রাজপথে প্রস্তুত থাকতে হবে।’

সীমান্ত এলাকায় মানুষ হত্যার মহোৎসব চলছে, বিএনপির এমন মন্তব্যের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘সীমান্ত এলাকায় এই ধরনের ঘটনা মাঝেমধ্যে ঘটে। বিএনপির আমলে তো এটা আরও বেশি হয়েছিল। কিন্তু এটা যে মহোৎসব বা উৎসব, এটা তো বলা যায় না। কোনও ঘটনা ঘটলেই দুই দেশ একসঙ্গে বসে আলাপ-আলোচনা করছে, পুনরাবৃত্তি রোধে কার্যকর ব্যবস্থাও নিচ্ছে। হত্যার উৎসব বা মহোৎসব শব্দ বিএনপির আবিষ্কার করা। তারা নিজেরা যা চর্চা করে, এখনও তা-ই মনে করে।’

নিজের লোককে শায়েস্তা করার সাহস বিএনপির নেই উল্লেখ করে তিনি বলেন, বুয়েটে সনি হত্যার বিচার কে করেছে? আর আবরার হত্যায় যে কয়েকজন মৃত্যুদণ্ড পেয়েছে, সবাই ছাত্রলীগ বলে পরিচিত। বিশ্বজিৎ হত্যার বিচার কি হয়নি? তারা কি তাদের সময় তাদের দলের কোনও নেতার একটা বিচার করেছে? আশরাফুল হুদা, রকিবুল হুদা, এসপি কোহিনূর—এদের বিচার কে করেছে? বেনজির, আজিজও দুর্নীতি করে ছাড় পাবেন না। তারা আওয়ামী লীগের লোক নন। একজন পুলিশ অফিসার, আরেকজন সেনা অফিসার। কথা হচ্ছে, দুর্নীতি করে সব ছাড় পেয়েছে, যেটা বিএনপি করেছে। আমরা ইম্পিউনিটি কালচার গড়ে তুলিনি।

ওবায়দুল কাদের বলেন, আমরা সবাই চোখেও দেখি না, কানেও শুনি না। আমরা সবাই যেন বধির হয়ে গেছি। ৯ মাস পর চার জন হোস্টেসকে উদ্ধার করলো, তাতে মনে হচ্ছে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রীই যেন বিশ্বনেতা। আন্তর্জাতিক সব মিডিয়া তাকে মহামানব বানিয়েছে। আর বাইডেন সাহেব ফ্রান্সে বসে তাকে অভিনন্দন জানাচ্ছেন। নেতানিয়াহু প্রশংসাজনক কাজ করেছেন, সে জন্য অভিনন্দন জানিয়েছেন।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট বাইডেনের সমালোচনা করে তিনি বলেন, পৃথিবীর মানুষ সাক্ষী, শেখ হাসিনা ছাড়া একজন রাষ্টনেতা বলবেন না ২১৩ জন সাধারণ নারী-শিশুসহ হত্যা করে চার জনকে উদ্ধার করেছে। এই ২১৩ জনের কথা বলার কি কেউ নেই? এই শিশুদের কী অপরাধ? এরা কি হামাস? এই সিভিলিয়ান হত্যার বিচার কি হবে না? একটা কথাও বলেননি মার্কিন প্রেসিডেন্ট। আর আমাদের আরব বিশ্ব মনে হচ্ছে ঘুমাচ্ছে।’

বিএনপির আন্দোলনের হুমকির সমালোচনা করে তিনি বলেন, ‘আওয়ামী লীগকে পালানোর হুমকি দিয়ে বিএনপি নিজেরাই পালিয়ে গেছে। ২৮ অক্টোবর লাশের ওপর দাঁড়িয়ে রাজনীতি করতে চেয়েছিল বিএনপি। সেজন্য তাদের শাস্তি পেতে হবে।’

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘বিএনপি যখন আন্দোলনের কথা বলে তখন হাসি পায়। বিএনপি আওয়ামী লীগকে হুমকি দিয়ে নিজেরাই পল্টন থেকে পালিয়ে যায়। বিএনপি আন্দোলন করতে পারবে না। বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় ডিবি অফিসে কোরাল মাছ দিয়ে ভাত খেয়ে কোথায় যে চলে গেলেন।’

কাদের বলেন, ‘৭ জানুয়ারি নির্বাচনের আগে বিরোধী দলের আন্দোলনের সময় অফিসগুলো সরগরম ছিল। বিএনপি আন্দোলন করেছিল। তাদের আন্দোলন মানে সন্ত্রাস। অন্যদিকে আওয়ামী লীগ দলীয় নেতাদের সঙ্গে আলোচনা করে শান্তি ও উন্নয়ন সমাবেশ করেছিল। আমরা আন্দোলন ভয় পাই না। ভয় পাই আগুন সন্ত্রাস।’

বিরোধীরাও বসে নেই, তারাও কর্মসূচি দেবে জানিয়ে কাদের আওয়ামী লীগের ৭৫তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উপলক্ষে যে কর্মসূচি নেওয়া হচ্ছে তা সফল করার জন্য সকল পর্যায়ের নেতাদের অফিসমুখী হওয়ার আহ্বান জানান।

যৌথ সভায় উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ, আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, সাংগঠনিক সম্পাদক বিএম মোজাম্মেল হক, এসএম কামাল জোসেন, মির্জা আজম, সুজিত রায় নন্দী, উপদপ্তর সম্পাদক সায়েম খানসহ ঢাকা মহানগর উত্তর-দক্ষিণ, জেলা আওয়ামী লীগ এবং সব সহযোগী সংগঠনের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকরা।

আবহাওয়া

বদলির চিঠি প্রকাশ্যে ছিঁড়ে ফেলায় ৮ কর কর্মকর্তা বরখাস্ত

লুটপাট করতে নয়, লুটপাট বন্ধ করতেই এ বাজেট ঘোষণা করা হয়েছে : কাদের

প্রকাশের সময় : ০৩:৩৭:২৯ অপরাহ্ন, রবিবার, ৯ জুন ২০২৪

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

লুটপাট করতে নয়, লুটপাট বন্ধ করতেই এ বাজেট ঘোষণা করা হয়েছে বলে মন্তব্য করে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, দুর্নীতিবাজদের ধরতে নতুন করে আইন করার দরকার নেই। যে আইন আছে সেটা দিয়েই ধরা সম্ভব। প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, আমিও বলব- আদার দিয়েছি, রুই কাতলা ধরা পড়বে।

রোববার (৯ জুন) ২৩ বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতাদের সঙ্গে ঢাকা মহানগর উত্তর-দক্ষিণ, জেলা আওয়ামী লীগ এবং সকল সহযোগী সংগঠনের সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকদের যৌথসভায় তিনি এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, দুর্নীতি করে কেউ কোনো ছাড় পাবে না। আজিজ-বেনজীর আওয়ামী লীগের কেউ না। তারা দুর্নীতি করেছে। তাদের দায়মুক্তি দিয়ে বিচারহীনতার সংস্কৃতি চালু করা হচ্ছে না।

মির্জা ফখরুলের প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, কালো টাকা সাদা করেছেন সাইফুর রহমান, বেগম খালেদা জিয়া। তাহলে তারাও কি দুর্বৃত্ত।

তিনি বলেন, বাজেটটা করা হয়েছে রাঘব-বোয়ালদের লুটপাট বন্ধ করার জন্য। বিএনপি আমলে যে লুটপাটের রাজত্ব সৃষ্টি হয়েছিল, দেশকে ধ্বংসের দিকে নিয়ে গিয়েছিল, তা থেকে দেশকে রক্ষা করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। লুটপাট করে কেউ এখানে পার পাবে না। নিজের লোকদের শায়েস্তা করার সাহস বিএনপি নেই।’

দলের নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘বিএনপি আগুন সন্ত্রাসের যে সংস্কৃতি চালু করেছে, এর বিরুদ্ধে জনগণের জানমাল রক্ষায় আমাদের অবশ্যই শান্তি সমাবেশ করতে হবে। প্রতিরোধ করতে হবে। রাজপথে প্রস্তুত থাকতে হবে।’

সীমান্ত এলাকায় মানুষ হত্যার মহোৎসব চলছে, বিএনপির এমন মন্তব্যের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘সীমান্ত এলাকায় এই ধরনের ঘটনা মাঝেমধ্যে ঘটে। বিএনপির আমলে তো এটা আরও বেশি হয়েছিল। কিন্তু এটা যে মহোৎসব বা উৎসব, এটা তো বলা যায় না। কোনও ঘটনা ঘটলেই দুই দেশ একসঙ্গে বসে আলাপ-আলোচনা করছে, পুনরাবৃত্তি রোধে কার্যকর ব্যবস্থাও নিচ্ছে। হত্যার উৎসব বা মহোৎসব শব্দ বিএনপির আবিষ্কার করা। তারা নিজেরা যা চর্চা করে, এখনও তা-ই মনে করে।’

নিজের লোককে শায়েস্তা করার সাহস বিএনপির নেই উল্লেখ করে তিনি বলেন, বুয়েটে সনি হত্যার বিচার কে করেছে? আর আবরার হত্যায় যে কয়েকজন মৃত্যুদণ্ড পেয়েছে, সবাই ছাত্রলীগ বলে পরিচিত। বিশ্বজিৎ হত্যার বিচার কি হয়নি? তারা কি তাদের সময় তাদের দলের কোনও নেতার একটা বিচার করেছে? আশরাফুল হুদা, রকিবুল হুদা, এসপি কোহিনূর—এদের বিচার কে করেছে? বেনজির, আজিজও দুর্নীতি করে ছাড় পাবেন না। তারা আওয়ামী লীগের লোক নন। একজন পুলিশ অফিসার, আরেকজন সেনা অফিসার। কথা হচ্ছে, দুর্নীতি করে সব ছাড় পেয়েছে, যেটা বিএনপি করেছে। আমরা ইম্পিউনিটি কালচার গড়ে তুলিনি।

ওবায়দুল কাদের বলেন, আমরা সবাই চোখেও দেখি না, কানেও শুনি না। আমরা সবাই যেন বধির হয়ে গেছি। ৯ মাস পর চার জন হোস্টেসকে উদ্ধার করলো, তাতে মনে হচ্ছে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রীই যেন বিশ্বনেতা। আন্তর্জাতিক সব মিডিয়া তাকে মহামানব বানিয়েছে। আর বাইডেন সাহেব ফ্রান্সে বসে তাকে অভিনন্দন জানাচ্ছেন। নেতানিয়াহু প্রশংসাজনক কাজ করেছেন, সে জন্য অভিনন্দন জানিয়েছেন।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট বাইডেনের সমালোচনা করে তিনি বলেন, পৃথিবীর মানুষ সাক্ষী, শেখ হাসিনা ছাড়া একজন রাষ্টনেতা বলবেন না ২১৩ জন সাধারণ নারী-শিশুসহ হত্যা করে চার জনকে উদ্ধার করেছে। এই ২১৩ জনের কথা বলার কি কেউ নেই? এই শিশুদের কী অপরাধ? এরা কি হামাস? এই সিভিলিয়ান হত্যার বিচার কি হবে না? একটা কথাও বলেননি মার্কিন প্রেসিডেন্ট। আর আমাদের আরব বিশ্ব মনে হচ্ছে ঘুমাচ্ছে।’

বিএনপির আন্দোলনের হুমকির সমালোচনা করে তিনি বলেন, ‘আওয়ামী লীগকে পালানোর হুমকি দিয়ে বিএনপি নিজেরাই পালিয়ে গেছে। ২৮ অক্টোবর লাশের ওপর দাঁড়িয়ে রাজনীতি করতে চেয়েছিল বিএনপি। সেজন্য তাদের শাস্তি পেতে হবে।’

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘বিএনপি যখন আন্দোলনের কথা বলে তখন হাসি পায়। বিএনপি আওয়ামী লীগকে হুমকি দিয়ে নিজেরাই পল্টন থেকে পালিয়ে যায়। বিএনপি আন্দোলন করতে পারবে না। বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় ডিবি অফিসে কোরাল মাছ দিয়ে ভাত খেয়ে কোথায় যে চলে গেলেন।’

কাদের বলেন, ‘৭ জানুয়ারি নির্বাচনের আগে বিরোধী দলের আন্দোলনের সময় অফিসগুলো সরগরম ছিল। বিএনপি আন্দোলন করেছিল। তাদের আন্দোলন মানে সন্ত্রাস। অন্যদিকে আওয়ামী লীগ দলীয় নেতাদের সঙ্গে আলোচনা করে শান্তি ও উন্নয়ন সমাবেশ করেছিল। আমরা আন্দোলন ভয় পাই না। ভয় পাই আগুন সন্ত্রাস।’

বিরোধীরাও বসে নেই, তারাও কর্মসূচি দেবে জানিয়ে কাদের আওয়ামী লীগের ৭৫তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উপলক্ষে যে কর্মসূচি নেওয়া হচ্ছে তা সফল করার জন্য সকল পর্যায়ের নেতাদের অফিসমুখী হওয়ার আহ্বান জানান।

যৌথ সভায় উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ, আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, সাংগঠনিক সম্পাদক বিএম মোজাম্মেল হক, এসএম কামাল জোসেন, মির্জা আজম, সুজিত রায় নন্দী, উপদপ্তর সম্পাদক সায়েম খানসহ ঢাকা মহানগর উত্তর-দক্ষিণ, জেলা আওয়ামী লীগ এবং সব সহযোগী সংগঠনের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকরা।