Dhaka শুক্রবার, ০১ অগাস্ট ২০২৫, ১৭ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

লাশের ওপর দিয়ে ক্ষমতায় যাওয়ার চিন্তা অমানবিক : প্রধানমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

‘সাধারণ মানুষকে কেন পুড়িয়ে মারে’ এমন প্রশ্ন করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, যারা জনগণকে হত্যা করে লাশের ওপর দিয়ে ক্ষমতায় যাওয়ার চিন্তা করে, তাদের মতো অমানবিক আর কোথাও দেখি না।

মঙ্গলবার (২১ জানুয়ারি) বিকেলে সশস্ত্র বাহিনী দিবস উপলক্ষে সেনাকুঞ্জে বৈকালিক সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।

শেখ হাসিনা বলেন, মানুষ যখন শান্তিতে, তখন অগ্নিসন্ত্রাস আর হরতাল-অবরোধ করে মানুষের জীবন ব্যাহত করছে তারা। যারা অগ্নিসন্ত্রাস করছে, তারা সে পথ ছেড়ে গণতান্ত্রিক পথে আসুক।

তিনি বলেন, বাংলাদেশ শান্তির দেশ, মানুষ যখন একটু শান্তিতে ছিল, স্বস্তিতে ছিল, মানুষ একটু আশার আলো দেখছিল, সামনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছিল, ঠিক সে সময় অগ্নিসন্ত্রাস, হরতাল ও অবরোধ মানুষের জীবনকে আবার ব্যাহত করছে, শঙ্কার মধ্যে ফেলে দিচ্ছে, এটিই হলো সবচেয়ে কষ্টের বিষয়।

নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সরকারের দাবিতে আন্দোলনরত বিএনপি-জামায়াতের সমালোচনা করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, জনগণকে হত্যা করে সেই লাশের ওপর পা দিয়ে ক্ষমতায় যাওয়ার চিন্তা যারা করে তাদের মতো অমানবিক আমি আর কোথাও দেখি না। ভাবতে অবাক লাগে।

শেখ হাসিনা বলেন, জানি না, সাধারণ মানুষকে পুড়িয়ে মেরে…কেন মারে সেটিই আমার কাছে প্রশ্ন? আর এই যে সাধারণ মানুষকে আগুনে পুড়িয়ে মারা, বাসে আগুন দেওয়া, রাষ্ট্রীয় সম্পদ নষ্ট করা, এটি কী কারণে, তা আমার কাছে এখনো বোধগম্য না।

শান্তি চান জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, আমরা শান্তি চাই। শুধু দেশের অভ্যন্তরে নয়, আঞ্চলিকভাবে এবং সারা বিশ্বে শান্তি চাই। আমাদের পররাষ্ট্রনীতি খুবই স্পষ্ট। সেটি হলো, সবার সাথে বন্ধুত্ব, কারো সাথে বৈরিতা নয়। তবে সার্বভৌমত্বে কোনো আঘাত এলে যাতে প্রতিহত করা যায়, সেই প্রস্তুতি সামরিক বাহিনীতে থাকতে হবে।

জ্বালাও-পোড়াও দেশের মানুষ চায় না জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, মানুষ পুড়িয়ে মারা কেমন আন্দোলন, আমার বোধগম্য নয়। জনগণের লাশের ওপর দিয়ে ক্ষমতায় বসার এ কেমন মানসিকতা? মানুষ যখন স্বস্তিতে ছিল, তখন সহিংসতা, হরতাল-অবরোধের কর্মসূচি মানুষের জীবনকে শঙ্কায় ফেলে দিয়েছে। আমার আশা, যারা এসব করছে, তারা গণতান্ত্রিক ধারায় ফিরবে।

শেখ হাসিনা বলেন, ১৯৭৫ সালের পর দেশে গণতান্ত্রিক ধারাই ছিল না। তবে গণতান্ত্রিক ধারাবাহিকতায় উন্নয়ন সম্ভব হয়েছে। আমরা দেশের মানুষের জন্য উন্নত জীবন নিশ্চিত করতে চাই। দেশের এই অপ্রতিরোধ্য অগ্রগতি বা এগিয়ে চলা কেউ বাধাগ্রস্ত করতে পারবে না।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা একটির পর একটি চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করছি। যেমন, কোভিড-১৯ আমরা মোকাবিলা করলাম। এছাড়া অগ্নিসন্ত্রাস থেকে শুরু করে নানা ধরনের ঝামেলা মাঝে মাঝে শুরু হয়।

দেশের সশস্ত্র বাহিনীকে বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে আধুনিক করা হয়েছে বলে জানিয়ে তিনি বলেন, গণতান্ত্রিক ধারাবাহিকতা ছাড়া এটা সম্ভব হতো না। সশস্ত্র বাহিনীকে আধুনিক বাহিনী হিসেবে গড়ে তুলতে কাজ করে যাচ্ছে সরকার। সে লক্ষ্যে আর্ম ফোর্সেস গোল ২০৩০ প্রণয়ন করা হয়েছে। সেই সাথে আরও অনেক পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।

সেনা সদস্যদের উদ্দেশে তিনি বলেন, কারও সঙ্গে যুদ্ধ করতে চাই না। কিন্তু সার্বভৌমত্বের প্রশ্নে কোনো আঘাত এলে যাতে প্রতিহত করা যায়, সেই প্রস্তুতি রাখতে হবে।

দেশের আর্থসামাজিক উন্নয়নে সরকার কাজ করছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের উন্নয়ন শুধু রাজধানী পর্যন্ত সীমাবদ্ধ না, প্রত্যেক গ্রামে উন্নয়ন করেছে সরকার। সমাজের কোনো শ্রেণির মানুষ নিচে পড়ে থাকবে না।

অনুষ্ঠানে শিক্ষায় অগ্রগতির বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, শিক্ষায় ব্যাপক সুযোগ সৃষ্টি করেছি। আমরা বিনা পয়সায় বই দিচ্ছি। শিক্ষার্থীদের উপবৃত্তি দেওয়া হচ্ছে। এতে তাদের বাবা-মায়ের ওপর চাপ কমছে। তারা সুশিক্ষায় শিক্ষিত হতে পারছে।

নারীর ক্ষমতায়নের বিষয়ে তিনি বলেন, আমরা দেশের মানুষকে উন্নত জীবন দিতে চাই। বিশেষ করে আমাদের নারীদের। আমাদের সশস্ত্র বাহিনীতে আগে মেয়েদের নেওয়া হতো না। আমি ১৯৯৬ সালে ক্ষমতায় এসে প্রথম সিদ্ধান্ত নিই। মেয়েরা শুধু দেশে না, শান্তিরক্ষা মিশনেও নাম করছে। আমার সঙ্গে সেক্রেটারি জেনারেলের কথা হয়েছে, তিনি আমাদের নারী অফিসার বেশি চান।

আবহাওয়া

৫০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি : গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদ নেতা অপু গ্রেফতার

লাশের ওপর দিয়ে ক্ষমতায় যাওয়ার চিন্তা অমানবিক : প্রধানমন্ত্রী

প্রকাশের সময় : ০৭:৩৬:৫১ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২১ নভেম্বর ২০২৩

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

‘সাধারণ মানুষকে কেন পুড়িয়ে মারে’ এমন প্রশ্ন করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, যারা জনগণকে হত্যা করে লাশের ওপর দিয়ে ক্ষমতায় যাওয়ার চিন্তা করে, তাদের মতো অমানবিক আর কোথাও দেখি না।

মঙ্গলবার (২১ জানুয়ারি) বিকেলে সশস্ত্র বাহিনী দিবস উপলক্ষে সেনাকুঞ্জে বৈকালিক সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।

শেখ হাসিনা বলেন, মানুষ যখন শান্তিতে, তখন অগ্নিসন্ত্রাস আর হরতাল-অবরোধ করে মানুষের জীবন ব্যাহত করছে তারা। যারা অগ্নিসন্ত্রাস করছে, তারা সে পথ ছেড়ে গণতান্ত্রিক পথে আসুক।

তিনি বলেন, বাংলাদেশ শান্তির দেশ, মানুষ যখন একটু শান্তিতে ছিল, স্বস্তিতে ছিল, মানুষ একটু আশার আলো দেখছিল, সামনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছিল, ঠিক সে সময় অগ্নিসন্ত্রাস, হরতাল ও অবরোধ মানুষের জীবনকে আবার ব্যাহত করছে, শঙ্কার মধ্যে ফেলে দিচ্ছে, এটিই হলো সবচেয়ে কষ্টের বিষয়।

নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সরকারের দাবিতে আন্দোলনরত বিএনপি-জামায়াতের সমালোচনা করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, জনগণকে হত্যা করে সেই লাশের ওপর পা দিয়ে ক্ষমতায় যাওয়ার চিন্তা যারা করে তাদের মতো অমানবিক আমি আর কোথাও দেখি না। ভাবতে অবাক লাগে।

শেখ হাসিনা বলেন, জানি না, সাধারণ মানুষকে পুড়িয়ে মেরে…কেন মারে সেটিই আমার কাছে প্রশ্ন? আর এই যে সাধারণ মানুষকে আগুনে পুড়িয়ে মারা, বাসে আগুন দেওয়া, রাষ্ট্রীয় সম্পদ নষ্ট করা, এটি কী কারণে, তা আমার কাছে এখনো বোধগম্য না।

শান্তি চান জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, আমরা শান্তি চাই। শুধু দেশের অভ্যন্তরে নয়, আঞ্চলিকভাবে এবং সারা বিশ্বে শান্তি চাই। আমাদের পররাষ্ট্রনীতি খুবই স্পষ্ট। সেটি হলো, সবার সাথে বন্ধুত্ব, কারো সাথে বৈরিতা নয়। তবে সার্বভৌমত্বে কোনো আঘাত এলে যাতে প্রতিহত করা যায়, সেই প্রস্তুতি সামরিক বাহিনীতে থাকতে হবে।

জ্বালাও-পোড়াও দেশের মানুষ চায় না জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, মানুষ পুড়িয়ে মারা কেমন আন্দোলন, আমার বোধগম্য নয়। জনগণের লাশের ওপর দিয়ে ক্ষমতায় বসার এ কেমন মানসিকতা? মানুষ যখন স্বস্তিতে ছিল, তখন সহিংসতা, হরতাল-অবরোধের কর্মসূচি মানুষের জীবনকে শঙ্কায় ফেলে দিয়েছে। আমার আশা, যারা এসব করছে, তারা গণতান্ত্রিক ধারায় ফিরবে।

শেখ হাসিনা বলেন, ১৯৭৫ সালের পর দেশে গণতান্ত্রিক ধারাই ছিল না। তবে গণতান্ত্রিক ধারাবাহিকতায় উন্নয়ন সম্ভব হয়েছে। আমরা দেশের মানুষের জন্য উন্নত জীবন নিশ্চিত করতে চাই। দেশের এই অপ্রতিরোধ্য অগ্রগতি বা এগিয়ে চলা কেউ বাধাগ্রস্ত করতে পারবে না।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা একটির পর একটি চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করছি। যেমন, কোভিড-১৯ আমরা মোকাবিলা করলাম। এছাড়া অগ্নিসন্ত্রাস থেকে শুরু করে নানা ধরনের ঝামেলা মাঝে মাঝে শুরু হয়।

দেশের সশস্ত্র বাহিনীকে বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে আধুনিক করা হয়েছে বলে জানিয়ে তিনি বলেন, গণতান্ত্রিক ধারাবাহিকতা ছাড়া এটা সম্ভব হতো না। সশস্ত্র বাহিনীকে আধুনিক বাহিনী হিসেবে গড়ে তুলতে কাজ করে যাচ্ছে সরকার। সে লক্ষ্যে আর্ম ফোর্সেস গোল ২০৩০ প্রণয়ন করা হয়েছে। সেই সাথে আরও অনেক পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।

সেনা সদস্যদের উদ্দেশে তিনি বলেন, কারও সঙ্গে যুদ্ধ করতে চাই না। কিন্তু সার্বভৌমত্বের প্রশ্নে কোনো আঘাত এলে যাতে প্রতিহত করা যায়, সেই প্রস্তুতি রাখতে হবে।

দেশের আর্থসামাজিক উন্নয়নে সরকার কাজ করছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের উন্নয়ন শুধু রাজধানী পর্যন্ত সীমাবদ্ধ না, প্রত্যেক গ্রামে উন্নয়ন করেছে সরকার। সমাজের কোনো শ্রেণির মানুষ নিচে পড়ে থাকবে না।

অনুষ্ঠানে শিক্ষায় অগ্রগতির বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, শিক্ষায় ব্যাপক সুযোগ সৃষ্টি করেছি। আমরা বিনা পয়সায় বই দিচ্ছি। শিক্ষার্থীদের উপবৃত্তি দেওয়া হচ্ছে। এতে তাদের বাবা-মায়ের ওপর চাপ কমছে। তারা সুশিক্ষায় শিক্ষিত হতে পারছে।

নারীর ক্ষমতায়নের বিষয়ে তিনি বলেন, আমরা দেশের মানুষকে উন্নত জীবন দিতে চাই। বিশেষ করে আমাদের নারীদের। আমাদের সশস্ত্র বাহিনীতে আগে মেয়েদের নেওয়া হতো না। আমি ১৯৯৬ সালে ক্ষমতায় এসে প্রথম সিদ্ধান্ত নিই। মেয়েরা শুধু দেশে না, শান্তিরক্ষা মিশনেও নাম করছে। আমার সঙ্গে সেক্রেটারি জেনারেলের কথা হয়েছে, তিনি আমাদের নারী অফিসার বেশি চান।