নিজস্ব প্রতিবেদক :
কুমিল্লার লালমাই উপজেলার পেরুল উত্তর ও বাকই উত্তর ইউনিয়নের যোগাযোগের একমাত্র মাধ্যম হল ডাকাতিয়া নদীর ওপর থাকা একটি মাত্র বাঁশের সাঁকো। দেড় যুগ ধরে এই দুই ইউনিয়নের ১০টি গ্রামের প্রায় ৩০ হাজার মানুষ জীবনের ঝুঁকি নিয়ে বাঁশের সাঁকোতে ভর করেই পার হচ্ছেন নদী। তাই বছরের পর বছর একটি সেতুর জন্য অপেক্ষায় নদীর পশ্চিমপাড়ের বাসিন্দারা।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, কুমিল্লার ডাকাতিয়া নদীর পূর্বপাড়ে (আলীশহর-শেরপুর) অবস্থিত একাধিক স্কুল, কলেজ, মাদরাসা ও হাটবাজার। সেতু না থাকায় চরম ভোগান্তিতে পড়তে হয় স্কুল-কলেজ পড়ুয়া শিক্ষার্থীদের। এছাড়া মালামাল আনা নেওয়ার ক্ষেত্রেও বড় ধরনের সমস্যায় পড়েন ব্যবসায়ীরা। কৃষকদের উৎপাদিত কৃষি পণ্য বাজারজাত করতেও পোহাতে হয় দুর্ভোগ। তাই বাঁশের সাঁকোর পরিবর্তে একটি সেতু নির্মাণের দাবি এলাকাবাসীর দীর্ঘদিনের।
পেরুল উত্তর ভাবকপাড়া গ্রামের কলেজ শিক্ষক শাহাজাদা সরকার বলেন, ‘ব্রিজ না থাকায় স্কুল কলেজ পড়ুয়া শিক্ষাথীদের অনেক কষ্ট করে নদী পাড় হতে হয়। বিশেষ করে কোমলমতি শিশু শিক্ষার্থীরা ভয়ে বিদ্যালয়ে আসতে চায় না। এখানে একাধিক স্কুল কলেজ রয়েছে, সরকারের উচিত যতো দ্রুত সম্ভব একটি ব্রিজ নির্মাণ করে দেওয়া।
একই এলাকার কৃষক আমিন মিয়া বলেন, বাবারে প্রতিদিন নদীর পাড় দিলে সবজি মাথায় নিয়ে অত্যন্ত ঝুঁকিতে সাঁকো পারাপার হতে হয়। নদীর পূর্বপাড়ে আলীশহর বাজারে সবজি নিতে গিয়ে অনেকবার সবজি পড়ে গেছে। কত নেতা আসে আর গেল। আমগোরে কেউ একটা ব্রিজ করে দিলো না।
এলাকাবাসীদের অভিযোগ, নির্বাচন আসলে জনপ্রতিনিধিরা শুধু প্রতিশ্রুতি দিয়ে যান। নির্বাচন শেষ হলে তাদের আর দেখা যায় না। বছরের পর বছর শুধু আশ্বাস দিয়ে গেলেও সেতু নির্মাণে কোনো প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। প্রতিবছর এলাকাবাসীর উদ্যোগে বাঁশ সংগ্রহ করে মেরামত করা হয় সাঁকোটি। একটি পাকা ব্রিজের অভাবে এলাকাবাসী জীবনের ঝুঁকি নিয়ে বাঁশের সাঁকো দিয়ে প্রতিনিয়ত যাতায়াত করছে। কবে সেতু হবে, তাও জানেন না কেউ।
লালমাই উপজেলার বাকই উত্তর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান বলেন, বাকই উত্তর ইউনিয়নের শেষ প্রান্তে অবস্থিত এই জরাজীর্ণ সাঁকোটি দিয়ে ১০গ্রামের মানুষ প্রতিদিন যাতায়াত করেন। এখানে একটি সেতু হোক এটা এই এলাকার মানুষের দীর্ঘদিনের দাবি। এ বিষয়টি নিয়ে আমরা অর্থমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলছি। উনি আশ্বাস দিয়েছেন ব্রিজ করে দেবেন।
লালমাই উপজেলা প্রকৌশলী জাহিদুল ইসলাম বলেন, পূর্বে পাড়া ভাবকপাড়ায় সংযোগ সড়ক ছিল না বলে সেতু নির্মাণের বিষয়ে পদক্ষেপ নেওয়া যায়নি। এখন যেহেতু সংযোগ সড়ক হয়েছে সুতরাং আমরা সংশ্লিষ্ট কার্যালয়ে প্রস্তাবনা পাঠাবো।
লালমাই উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান কামরুল হাসান শাহিন বলেন, আমি অল্প কিছুদিন হলো দায়িত্ব গ্রহণ করেছি। ব্রিজের বিষয়ে সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
নিজস্ব প্রতিবেদক 























