নিজস্ব প্রতিবেদক :
বাজারে প্রচুর সরবরাহ থাকার পরেও ফের লাগামহীন সবজির দাম। ষাটের নিচে তেমন কোনো সবজি নেই বললেই চলে। বাড়তি দামেই বিক্রি হচ্ছে মাছ-মাংস। কিছুতেই কমছে না পেঁয়াজের ঝাঁঝ। তবে কাঁচা মরিচের দাম কিছুটা কমেছে। প্রতি কেজি কাঁচা মরিচ এখন ১৬০-১৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। যা গেল সপ্তাহে ২০০ টাকার উপরে ছিল।
কাঁচাবাজার ঘুরে দেখা গেছে, লম্বা বেগুন প্রতিকেজি বিক্রি হচ্ছে ৭০-৮০ টাকা, গোল বেগুন ৮০-৯০ টাকা, পেঁপের ৪০-৫০ টাকা, করল্লা ৭০-৮০ টাকা, চিচিঙ্গা বিক্রি হচ্ছে ৫০-৬০ টাকা, ঢেঁড়শ ৭০-৮০ টাকা মান ও সাইজভেদে লাউ ৬০-৮০ টাকা, জালি ৫০-৬০ টাকা, ধুন্দল ৬০-৭০ টাকা, কচুর লতি বিক্রি হচ্ছে ৭০-৮০ টাকায় বিক্রি হতে দেখা গেছে। যা গেল সপ্তাহজুড়ে কিছুটা বিক্রি হয়েছে।
এছাড়াও নতুন সবজি হিসেবে টমেটো ১৪০, মুলা ৬০, কচুর মুখি বিক্রি হচ্ছে ৮০-৯০ টাকা কেজি, পুঁই শাক ৪০ টাকা, পাট শাক আটি ১৫-২০ টাকা, লাল শাক ২০ টাকা, ৩০-৪০ টাকা আটি বিক্রি হতে দেখা গেছে। তবে বাজারে দোকানের তুলনায় ফুটপাতের দোকানগুলোতে প্রত্যেক সবজির দাম ৫-১০ টাকা কমে বিক্রি হচ্ছে।
এদিকে বাজারে পেঁয়াজের সরবরাহ প্রচুর থাকলেও কমছে না দাম। প্রায় সেঞ্চুরিতে অর্থাৎ ৯০-৯৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে দেশি পেঁয়াজ। একটু নিম্ন মানেরটা ৭০-৮০ টাকা। ভারতীয় পেঁয়াজও বিক্রি হচ্ছে ৭০-৮০ টাকা। দেশি আদা ২২০ টাকা, ইন্দোনেশিয়ার আদা ২৬০ টাকা, চায়না রসুন ২৪০ টাকা, দেশি রসুন ২৬০ টাকা, আলু ৪৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
বাজারে ইলিশ মাছ ১৪০০-১৮০০ টাকা, রুই ৩৮০-৪৫০ টাকা, কাতল ৪০০-৫০০ টাকা, চিংড়ি ১০০০-২০০০ টাকা, কাঁচকি ৫০০ টাকা, টেংরা ৭০০ টাকা, কৈ মাছ ২৮০-৩০০ টাকা, পাবদা ৫০০ টাকা, শিং ৫০০-৬০০ টাকা, বোয়াল ৬৫০-৭৫০ টাকা, বেলে মাছ ৬০০-১০০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
মাছ কিনতে আসা রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘সব কিছুর দাম এমনিতেই বেশি। কিন্তু আমি ভাবতেও পারছি না চিংড়ি মাছের কেজি দুই হাজার টাকা। আমার ছেলেমেয়ে চিংড়ি মাছ খেতে পছন্দ করে, কিন্তু এ রকম দাম হলে কীভাবে খাওয়াবো?’
বাজারে ব্রয়লার মুরগি ১৬৬-১৭২ টাকা, কক ২৯০-৩০০, দেশি মুরগি ৫৫০ টাকা, গরুর মাংস ৭৫০-৮০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
ডজন প্রতি ৫-১০ টাকা কমে মুরগীর ডিম বিক্রি হচ্ছে ১৪৫-১৫৫ টাকা ডজন।
মাছের বাজারে তেলাপিয়া ও পাঙাশ মাছের দাম প্রতি কেজি ২৩০ থেকে ২৫০ টাকা। যা গেল সপ্তাহেও একই দামে বিক্রি হয়েছে। অন্য মাছের মধ্যে মাঝারি ও বড় আকারের চাষের রুই, কাতলা ও মৃগেল মাছের দাম প্রতি কেজি ৩২০ থেকে ৪০০ টাকা। এছাড়াও পাবদা, টেংরা, কই, বোয়াল, চিতল, আইড় ও ইলিশ মাছের দাম সাধারণ নাগালের বাইরে চলে যাচ্ছে।
এছাড়া আজ মুদি দোকানের পণ্যের দাম রয়েছে আগের মতোই। প্রতি লিটার বোতলজাত সয়াবিন তেল ১৭৫ টাকা, চিনি ১৩৫ টাকা, মুসর ডাল ১২৫ টাকা, মুগ ডাল ১২০ টাকা, খেসারি ডাল ৭০ টাকা, বুটের ডাল ৮৫ টাকা, ছোলা ৭৫ টাকা, দুই কেজি প্যাকেট ময়দা ১৪০ টাকা, আটা দুই কেজির প্যাকেট ১২০ টাকা, খোলা সরিষার তেল প্রতি লিটার ২২৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
শান্তিনগর বাজারে মুদি দোকানি সোহাগ বলেন, মসুর ডালের দাম এখন কিছুটা বাড়তি। প্রতি বছর বর্ষায় ডালের চাহিদা বাড়ে। সে তুলনায় যোগান কম থাকায় দাম বাড়ছে।
ক্রেতারা জানান, শুক্রবার এলেই বাজার চড়া হয়ে যায়। সরবরাহ সংকটের অজুহাত দিয়ে খেয়ালখুশি মতো দাম বাড়ায় বিক্রেতারা।
সাইফুল নামে এক ক্রেতা বলেন, বাজারে নিত্যপণ্যের দাম বৃদ্ধি নতুন কিছু না। প্রতি সপ্তাহেই দাম বাড়ে। ১ টাকা দাম কমলে; দাম বাড়ে ৫ টাকা। সবজির দাম শুনেই ক্রেতাদের ঘাম ঝরে যাচ্ছে।