Dhaka মঙ্গলবার, ২২ জুলাই ২০২৫, ৭ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

লক্ষ্মীপুরে যুবলীগ নেতা হত্যায় পাঁচ আসামির মৃত্যুদণ্ড, ১৪ জনের যাবজ্জীবন

লক্ষ্মীপুর জেলা প্রতিনিধি : 

লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার চন্দ্রগঞ্জ ইউনিয়ন যুবলীগের সহসভাপতি মামুনুর রশীদ হত্যা মামলায় ৫ জনকে মৃত্যুদণ্ড ও ১৪ জনকে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছে আদালত। সেই সঙ্গে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড প্রাপ্ত আসামিদের ২০ হাজার টাকা করে অর্থদণ্ড, অনাদায়ে আরও ১ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।

বুধবার (২৬ জুলাই) দুপুরে অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক সৈয়দা আমিনা ফারহিন এ রায় দেন। এ সময় দুই আসামি আদালতে উপস্থিত ছিলেন। বাকিরা পলাতক রয়েছেন।

জেলা জজ আদালতের সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) জসিম উদ্দিন ঢাকা মেইলকে রায়ের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

পিপি জানান, রায়ের সময় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত মধু ও যাবজ্জীবন দণ্ডপ্রাপ্ত টিপন আদালতে উপস্থিত ছিলেন। তাদেরকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। বাকি আসামিরা পলাতক রয়েছে। তারা আদালতে উপস্থিত ছিলেন না।

মামুনুর রশিদ সদরের চন্দ্রগঞ্জ ইউনিয়ন যুবলীগের সহ-সভাপতি ছিলেন। তিনি চন্দ্রগঞ্জের আমানি লক্ষ্মীপুর গ্রামের আবু তৈয়ব খানের ছেলে।

মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন মো. মধু, মো. মামুন, বাবু ওরফে গলাকাটা বাবু, মো. শামীম, কাউছার ওরফে ছোট কাউছার।

যাবজ্জীবন দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন—জাহাঙ্গীর আলম, নেহাল, মো. বোরহান, মো. তুহিন, জাকির হোসেন, সোহরাব হোসেন, বাছির আহাম্মদ, মো. মিজান, আলমগীর হোসেন, কছির আহম্মেদ, কামরুল ইসলাম, আনোয়ার হোসেন, তারেক আজিজ সুজন, মো. টিপন ওরফে জাহাঙ্গীর আলম।

খালাসপ্রাপ্তরা হলেন মো. সোহেল ও গোলাম রাব্বি।

মামলার এজাহার ও আদালত সূত্র জানায়, রাজনীতি ও সমাজসেবামূলক কাজে জড়িত থাকায় তখনকার কুখ্যাত সন্ত্রাসী সোলায়মান উদ্দিন জিসানের সঙ্গে দ্বন্ধ সৃষ্টি হয়। এতে জিসান বাহিনীর সদস্যরা মামুনকে হত্যার জন্য হুমকি দিত। পরে জিসান র্যাবের হাতে বন্দুকযুদ্ধে নিহত হয়। এতে জিসানের ছোট ভাই তুহিন সন্ত্রাসী বাহিনীর প্রধান হয়ে এলাকায় অরাজকতা সৃষ্টি করে আসছিলেন। আর এ সন্ত্রাসী বাহিনীর লোকজনকে গ্রেফতারে পুলিশকে সহযোগিতা করে মামুন।

এদিকে সন্ত্রাসী জিসান হত্যার ঘটনায় মামুন ও ওমর ফারুক নামে আরও এক ব্যক্তিকে দায়ী করে তুহিন। এ কারণে তুহিন সন্ত্রাসী বাহিনীর সক্রিয়দের নিয়ে মামুন ও ফারুককে হত্যার পরিকল্পনা করে। ২০১৫ সালের ১৮ মে রাতে মোটরসাইকেলযোগে মামুন চাটখিলের দেলিয়ার বাজার থেকে বাড়ির দিকে আসছিলেন। পথে আসামিরা চন্দ্রগঞ্জ ইউনিয়নের পূর্ব আমানি লক্ষ্মীপুর গ্রামে তাকে গুলি করে হত্যা করে। পরদিন মামুনের ভাই ফখরুল ইসলাম বাদী হয়ে ১০ জনের নাম উল্লেখ ও অজ্ঞাত ১৪-১৫ জনকে আসামি করে চন্দ্রগঞ্জ থানায় মামলা দায়ের করেন। ২০১৬ সালের ১০ সেপ্টেম্বর মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও জেলা গোয়েন্দা পুলিশের উপ-পরিদর্শক (এসআই) গোলাম হাক্কানি আদালতে ২১ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। দীর্ঘ শুনানি ও সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে আদালত ৫ জনকে মৃত্যুদণ্ড, ১৪ জনের যাবজ্জীবন ও ২ জনকে বেকসুর খালাস দেওয়া হয়েছে।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

লক্ষ্মীপুরে যুবলীগ নেতা হত্যায় পাঁচ আসামির মৃত্যুদণ্ড, ১৪ জনের যাবজ্জীবন

প্রকাশের সময় : ০২:২৭:২৪ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৬ জুলাই ২০২৩

লক্ষ্মীপুর জেলা প্রতিনিধি : 

লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার চন্দ্রগঞ্জ ইউনিয়ন যুবলীগের সহসভাপতি মামুনুর রশীদ হত্যা মামলায় ৫ জনকে মৃত্যুদণ্ড ও ১৪ জনকে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছে আদালত। সেই সঙ্গে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড প্রাপ্ত আসামিদের ২০ হাজার টাকা করে অর্থদণ্ড, অনাদায়ে আরও ১ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।

বুধবার (২৬ জুলাই) দুপুরে অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক সৈয়দা আমিনা ফারহিন এ রায় দেন। এ সময় দুই আসামি আদালতে উপস্থিত ছিলেন। বাকিরা পলাতক রয়েছেন।

জেলা জজ আদালতের সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) জসিম উদ্দিন ঢাকা মেইলকে রায়ের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

পিপি জানান, রায়ের সময় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত মধু ও যাবজ্জীবন দণ্ডপ্রাপ্ত টিপন আদালতে উপস্থিত ছিলেন। তাদেরকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। বাকি আসামিরা পলাতক রয়েছে। তারা আদালতে উপস্থিত ছিলেন না।

মামুনুর রশিদ সদরের চন্দ্রগঞ্জ ইউনিয়ন যুবলীগের সহ-সভাপতি ছিলেন। তিনি চন্দ্রগঞ্জের আমানি লক্ষ্মীপুর গ্রামের আবু তৈয়ব খানের ছেলে।

মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন মো. মধু, মো. মামুন, বাবু ওরফে গলাকাটা বাবু, মো. শামীম, কাউছার ওরফে ছোট কাউছার।

যাবজ্জীবন দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন—জাহাঙ্গীর আলম, নেহাল, মো. বোরহান, মো. তুহিন, জাকির হোসেন, সোহরাব হোসেন, বাছির আহাম্মদ, মো. মিজান, আলমগীর হোসেন, কছির আহম্মেদ, কামরুল ইসলাম, আনোয়ার হোসেন, তারেক আজিজ সুজন, মো. টিপন ওরফে জাহাঙ্গীর আলম।

খালাসপ্রাপ্তরা হলেন মো. সোহেল ও গোলাম রাব্বি।

মামলার এজাহার ও আদালত সূত্র জানায়, রাজনীতি ও সমাজসেবামূলক কাজে জড়িত থাকায় তখনকার কুখ্যাত সন্ত্রাসী সোলায়মান উদ্দিন জিসানের সঙ্গে দ্বন্ধ সৃষ্টি হয়। এতে জিসান বাহিনীর সদস্যরা মামুনকে হত্যার জন্য হুমকি দিত। পরে জিসান র্যাবের হাতে বন্দুকযুদ্ধে নিহত হয়। এতে জিসানের ছোট ভাই তুহিন সন্ত্রাসী বাহিনীর প্রধান হয়ে এলাকায় অরাজকতা সৃষ্টি করে আসছিলেন। আর এ সন্ত্রাসী বাহিনীর লোকজনকে গ্রেফতারে পুলিশকে সহযোগিতা করে মামুন।

এদিকে সন্ত্রাসী জিসান হত্যার ঘটনায় মামুন ও ওমর ফারুক নামে আরও এক ব্যক্তিকে দায়ী করে তুহিন। এ কারণে তুহিন সন্ত্রাসী বাহিনীর সক্রিয়দের নিয়ে মামুন ও ফারুককে হত্যার পরিকল্পনা করে। ২০১৫ সালের ১৮ মে রাতে মোটরসাইকেলযোগে মামুন চাটখিলের দেলিয়ার বাজার থেকে বাড়ির দিকে আসছিলেন। পথে আসামিরা চন্দ্রগঞ্জ ইউনিয়নের পূর্ব আমানি লক্ষ্মীপুর গ্রামে তাকে গুলি করে হত্যা করে। পরদিন মামুনের ভাই ফখরুল ইসলাম বাদী হয়ে ১০ জনের নাম উল্লেখ ও অজ্ঞাত ১৪-১৫ জনকে আসামি করে চন্দ্রগঞ্জ থানায় মামলা দায়ের করেন। ২০১৬ সালের ১০ সেপ্টেম্বর মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও জেলা গোয়েন্দা পুলিশের উপ-পরিদর্শক (এসআই) গোলাম হাক্কানি আদালতে ২১ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। দীর্ঘ শুনানি ও সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে আদালত ৫ জনকে মৃত্যুদণ্ড, ১৪ জনের যাবজ্জীবন ও ২ জনকে বেকসুর খালাস দেওয়া হয়েছে।