নিজস্ব প্রতিবেদক :
আগামী তিনদিন অর্থাৎ রোববার, সোমবার ও মঙ্গলবার প্রতিদিন ১১ ঘণ্টা করে ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ ও গাজীপুরে কারফিউ শিথিল থাকবে। এ তিনদিন সকাল ৭টা থেকে বিকেল ৬টা পর্যন্ত শিথিল থাকবে কারফিউ। একই সঙ্গে এ তিনদিন বিকেল ৬টা থেকে সকাল ৭টা পর্যন্ত চলমান কারফিউ বলবৎ থাকবে।
শনিবার (২৭ জুলাই) রাত ১১টার দিকে রাজধানীর ধানমন্ডিতে নিজ বাসভবনে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এসব তথ্য জানান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ঢাকা, গাজীপুর, নারায়ণগঞ্জ ও নরসিংদী জেলায় আগামী তিন দিন (রবি, সোম ও মঙ্গলবার) কারফিউ অব্যাহত থাকবে। তবে এই তিন দিন কারফিউ শিথিলের সময় আরও দুই ঘণ্টা করে বাড়ানো হয়েছে। সে হিসেবে সকাল ৭টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত কারফিউ শিথিল থাকবে।
তিনি বলেন, যেহেতু পরিস্থিতির ধীরে ধীরে উন্নতি হচ্ছে। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ভালোর দিকে যাচ্ছে। সে জন্য আমরা আমাদের যে কারফিউ চলছে, সেটি আরেকটু শিথিল করতে চাচ্ছি। ঢাকা মহানগর ও ঢাকা জেলা, গাজীপুর মহানগর ও গাজীপুর জেলা, নারায়ণগঞ্জ ও নরসিংদী জেলায় আগামী তিন দিন কারফিউ শিথিল থাকবে সকাল সাতটা থেকে সন্ধ্যা ছয়টা পর্যন্ত।
বাকি জেলাগুলোতে সংশ্লিষ্ট জেলা প্রশাসক ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সমন্বয় করে তাদের নিজ নিজ জেলায় কারফিউ দেওয়ার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবেন বলে জানান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।
আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, নারায়ণগঞ্জে পুলিশ সন্দেহে এক ব্যক্তিকে পেটানোর পর মৃত ভেবে চলে যায়। পরে পুলিশ তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করেছে। এখন সে মৃত্যুর সঙ্গে লড়াই লড়ছে।
পুলিশকে হত্যা করে রশি দিয়ে ঝুলিয়ে রাখার একটি স্থিরচিত্রও দেখান তিনি। এ ছাড়া হাইওয়ে পুলিশের দায়িত্বে থাকা ১২ পুলিশ সদস্যকে হত্যার উদ্দেশ্যে নারায়ণগঞ্জের একটি হাসপাতালে আগুন লাগিয়ে দেওয়ার কথা উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, র্যাব হেলিকপ্টার দিয়ে তাদের উদ্ধার করেছে।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আরও বলেন, সর্বোচ্চ আদালতের সিদ্ধান্তের পরও কোটার নামে এই বর্বরতা কেন, এটাই জাতির কাছে জিজ্ঞাসা। এর দায়ভার কে নেবে? এর দায়ভার অবশ্যই যারা আন্দোলনের ডাক দিয়েছিলেন, তাদের থেকে আন্দোলন ভিন্ন খাতে (ডাইভার্ট) যারা নিয়ে গেছেন, সবাইকে এই দায়িত্ব নিতে হবে। ছাত্র ভাইয়েরা যারা এখনও আন্দোলন প্রত্যাহার করেনি, তাদের (আন্দোলন) প্রত্যাহার করার অনুরোধ করব। তারা যদি প্রত্যাহার না করেন, এই দায় এড়াতে পারবেন না।
কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে রাজধানীসহ সারাদেশে তাণ্ডব শুরু হলে শুক্রবার (১৯ জুলাই) দিনগত রাত ১২টা থেকে রোববার (২১ জুলাই) সকাল ১০টা পর্যন্ত কারফিউ জারি করে সরকার। এরপর অনির্দিষ্টকালের জন্য কারফিউ বাড়ানো হয়। যদিও প্রতিদিনই কয়েক ঘণ্টার জন্য কারফিউ শিথিল করা হচ্ছে।