ইবি (কুষ্টিয়া) প্রতিনিধি :
দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান বলেন, গত ১৬ বছরে বাংলাদেশের যত সন্ত্রাসী কার্যক্রম বা ঘটনা ঘটেছে, তার জন্য দায়ী ছাত্রলীগ। ছাত্রলীগকে সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে নিষিদ্ধ করার জন্য আমি সাত দিনের সময় দিয়েছিলাম। আগামী রোববারের মধ্যে যদি ছাত্রলীগকে নিষিদ্ধ করা না হয় তাহলে সোমবার থেকে আমার দাবির সমর্থনে আপনারা এখানে আন্দোলন শুরু করবেন। নিষিদ্ধ না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাবেন। আমি ঢাকায় মাঠে থাকব। আপনারা এখানে মাঠে থাকবেন। আওয়ামী লীগ থেকে মুক্তি পেতে হলে আগে ছাত্রলীগ নামক সন্ত্রাসীদের থেকে মুক্তি পেতে হবে।
বৃহস্পতিবার (১০ অক্টোবর) দুপুর ১২টায় ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) শিক্ষার্থীদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় এ আহ্বান জানান ড. মাহমুদুর রহমান। বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের (টিএসসিসি) করিডোরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন এই মতবিনিময় সভার আয়োজন করে।
মাহমুদুর রহমান বলেন, আওয়ামী লীগ থেকে মুক্তি পেতে হলে আগে ছাত্রলীগ নামক সন্ত্রাসীদের থেকে আগে মুক্তি পেতে হবে। বাংলাদেশের একমাত্র জঙ্গি সংগঠন হলো এই ছাত্রলীগ। আগে ছাত্রলীগকে দিয়ে শুরু করি পরে আওয়ামী লীগকে ধরবো। কিন্তু সরকার এখন পর্যন্ত তাদের শক্তি দেখাতে পারেনি। সরকার খুব স্লো। তারা আওয়ামী লীগ এবং ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে এখনও কোনো অর্থবহ একশন নিতে পারেনি।
তিনি বলেন, দুটো লক্ষ্যে ছাত্র-জনতার আন্দোলন হয়েছিল। প্রথম লক্ষ্য ছিল ফ্যাসিবাদ সরকারের পতন ঘটানো। দ্বিতীয়ত ভারতীয় আধিপত্যবাদকে নির্মূল করা। আমাদের প্রথম লক্ষ্য অর্জিত হয়েছে। কিন্তু দ্বিতীয়টা আমরা এখনও অর্জন করতে পারিনি। এখন সুযোগ এসেছে, ভারতীয় আধিপত্যবাদকে চিরতরে উৎখাত করার। এজন্য অন্তর্বর্তী সরকারকে টিকিয়ে রাখতে সকল চেষ্টা অব্যাহত রাখতে হবে। কারণ, এই সরকার না টিকলে ভারতীয় সাম্রাজ্যবাদ আবার মাথাচাড়া দিয়ে উঠবে। সরকারকে টিকিয়ে রাখতে সীসাঢালা ঐক্য লাগবে। ১৮ কোটি জনগণ যদি এক থাকে তাহলেই ভারতীয় আধিপত্যবাদের উৎখাত সম্ভব।
তিনি বলেন, সরকারের দিকেও আমাদের নজর রাখতে হবে। যাতে তারা বিপথগামী না হয়। সবাইকে এই দায়িত্ব নিতে হবে। ভারতীয় আধিপত্যের বিরুদ্ধে লড়তে গিয়ে আবরার শহীদ হয়েছে। আমাদের এ লড়াইকে অব্যাহত রাখতে হবে। অর্জিত বিপ্লবকে কোনোভাবেই বিপথগামী করা যাবে না।
এছাড়া সরকারের সমালোচনা করে সম্পাদক বলেন, সরকার এখন পর্যন্ত তাদের শক্তি দেখাতে পারেনি। সরকার খুব স্লো। তারা আওয়ামী লীগ এবং ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে এখনো কোনো অর্থবহ অ্যাকশন নিতে পারেনি। শেখ হাসিনাকে ফিরিয়ে আনার জন্য কোনো পদক্ষেপ নেয়নি। কোন আইনে সে ভারতে বসে আছে। সম্পূর্ণ বেআইনিভাবে আছে। আমি মামলা করার জন্য কুষ্টিয়ায় এসেছি। আমার মামলার ১নং আসামি হাসিনা। মামলার ভিত্তিতে তাকে দেশে ফিরিয়ে আনার জন্য আমি দাবি জানাবো।
শেখ হাসিনাকে দিল্লীর ঘৃণ্য এজেন্ট হিসেবে উল্লেখ করে মাহমুদুর রহমান বলেন, ১৬ বছর ধরে বাংলাদেশে যে ফ্যাসিস্ট ও ইসলামবিরোধী সরকার ছিল সেটি সরাসরি দিল্লি থেকে পরিচালিত হয়েছে। ১৯৮১ সালে ইসলাম এবং বাংলাদেশকে ধ্বংস করার জন্য সে দিল্লী থেকে এসেছিল। পতনের পর এখন আবার প্রভুর কাছেই আশ্রয় নিয়েছে। দিল্লী ছাড়া তার আর যাওয়ার জায়গা নেই।
মতবিনিময় সভায় জাতীয় প্রেসক্লাবের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও আমার দেশ পত্রিকার নির্বাহী সম্পাদক সৈয়দ আবদাল আহমেদ, ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের সাবেক সভাপতি ও আমার দেশ পত্রিকার নগর সম্পাদক এম. আব্দুল্লাহ, এবি পার্টির আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. মেজর আব্দুল ওয়াহাব মিনার, ইবির প্রক্টর অধ্যাপক ড. শাহীনুজ্জামান, ছাত্র উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. ওবায়দুল ইসলাম এবং বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ইবির সমন্বয়ক এস এম সুইটসহ বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা উপস্থিত ছিলেন।