Dhaka বৃহস্পতিবার, ১৭ জুলাই ২০২৫, ২ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

রেলে আয়ের চেয়ে ১৫২৪ কোটি টাকা বেশি ব্যয় হয়েছে: রেলমন্ত্রী

  • নিজস্ব প্রতিবেদক
  • প্রকাশের সময় : ০৯:০১:৩৪ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৫ ফেব্রুয়ারী ২০২৪
  • ১৮৯ জন দেখেছেন

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

গত অর্থ বছরে রেলওয়ের আয়ের তুলনায় ১৫২৪ কোটি টাকা ব্যয় বেশি হয়েছে বলে জানিয়েছেন রেলমন্ত্রী জিল্লুল হাকিম।

বৃহস্পতিবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) জাতীয় সংসদের অধিবেশনে স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য মুহাম্মদ সাইফুল ইসলামের এক প্রশ্নের লিখিত উত্তরে রেলমন্ত্রী এ তথ্য জানান। এ সময় স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী অধিবেশনে সভাপতিত্ব করেন।

রেলমন্ত্রী জিল্লুল হাকিম বলেন, ২০২২-২০২৩ অর্থ বছরের রেলওয়ের ব্যয় ছিল ৩৩০৭ কোটি টাকা, পক্ষান্তরে রেলওয়ের আয় ছিল ১৭৮৩ কোটি টাকা। আয়ের তুলনায় ১৫২৪ কোটি টাকা ব্যয় বেশি হয়েছে। এ ব্যয়ের মধ্যে বাংলাদেশ রেলওয়ের অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন-ভাতা, পেনশন ইত্যাদি অন্তর্ভুক্ত ছিল।

এছাড়া রেলওয়ে পুলিশ, রেলওয়ে নিরাপত্তা বাহিনী, স্কুল, হাসপাতালের মাধ্যমেও দেশের জনগণ সামাজিক ও নিরাপত্তামূলক সেবা পেয়ে আসছে, যার ব্যয় রেলওয়ে থেকে নির্বাহ করা হয়। এতে রেলওয়ের ব্যয় বৃদ্ধি পাচ্ছে। মূলত স্বল্প খরচে জনগণকে সেবা দেওয়ার সরকারি নীতির কারণে ভাড়া বৃদ্ধিপূর্বক আয়-ব্যয়ের সমন্বয় করা হচ্ছে না।

রেলমন্ত্রী বলেন, সরকারের পলিসি অনুযায়ী বাংলাদেশ রেলওয়েকে বাণিজ্যিক তথা লাভজনক/অলাভজনক প্রতিষ্ঠান হিসেবে নয়, সেবাদানকারী সংস্থা হিসেবেই বিবেচনা করা হয়ে থাকে।

দেশের ৬৪টি জেলার মধ্যে ৪৩টি জেলায় রেল সংযোগ রয়েছে বলে জানান মন্ত্রী। তিনি বলেন, বাকি ২১টি জেলাকে রেল নেটওয়ার্কে যুক্ত করা প্রক্রিয়াধীন।

অপর সংসদ সদস্য মোরশেদ আলমের অপর এক প্রশ্নের জবাবে রেলমন্ত্রী বলেন, রেলওয়ে একটি সেবামূলক সংস্থা। আওয়ামী লীগ সরকার গঠনের পর ২০০৯ সাল থেকে এ পর্যন্ত মোট ৯৯টি নতুন প্রকল্প নেওয়া হয়েছে। ২০২৩-২৪ অর্থবছরের এডিপিতে বাংলাদেশ রেলওয়েতে ২৫টি বিনিয়োগ প্রকল্প এবং ৩টি কারিগরি সহায়তা প্রকল্প অর্থাৎ মোট ২৮টি উন্নয়ন প্রকল্প চলমান।

গত এক যুগে সরকার দেশে ৯৪৮ কিলোমিটার নতুন রেললাইন নির্মাণ, ৩৪০ দশমিক ১৭ কিলোমিটার মিটারগেজ রেললাইনকে ডুয়েলগেজে রূপান্তর, ১ হাজার ৩৯১ দশমিক ৩২ কিলোমিটার রেললাইন পুনর্র্নিমাণ, ১৪৮টি নতুন স্টেশন বিল্ডিং নির্মাণ, ২৩৮টি স্টেশন বিল্ডিং পুনর্র্নিমাণ, ১ হাজার ৬২টি নতুন রেলসেতু নির্মাণ, ৭৯৪টি রেলসেতু পুনর্র্নিমাণ, ১৩৭টি স্টেশনে সিগন্যালিং ব্যবস্থার উন্নয়ন ও আধুনিকায়ন করা হয়েছে বলে জানান রেলমন্ত্রী।

তিনি বলেন, রেলের সেবা আরও আধুনিক করার জন্য বর্তমান সরকারের পরিকল্পনাগুলোর মধ্যে রেলের সক্ষমতা বাড়ানো, নতুন রেল লাইন নির্মাণ, রোলিং স্টক সংকট নিরসন, বাংলাদেশ-ভারতের মধ্যে নতুন রেল সংযোগ স্থাপন, সিগনালিং ব্যবস্থার আধুনিকায়ন, নতুন ট্রেন চালু করা, রেল ডিজিটালাইজেশন, এছাড়া ২৮টি নতুন ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে।

সরকার দলীয় সংসদ সদস্য নুর উদ্দিন চৌধুরী নয়নের প্রশ্নের জবাবে রেলপথ বলেন, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রাক্কালে বিএনপি, জামায়াত ও তাদের দোসর অগ্নিসন্ত্রাসের মাধ্যমে রেলে আগুন দিয়েছে। প্রাথমিক তথ্য অনুযায়ী এতে রেলওয়ের আনুমানিক আর্থিক ক্ষতির পরিমাণ ৯ কোটি ২৮ লাখ ৫৬ হাজার ৩০৪ টাকা।

স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য মুহাম্মদ সাইফুল ইসলামের লিখিত প্রশ্নের জবাবে রেলপথ মন্ত্রী জানান, ২০২২-২৩ অর্থ বছরে রেলের আয় ছিল এক হাজার ৭৮৩ কোটি টাকা ও ব্যয় ছিল ৩ হাজার ৩০৭ কোটি টাকা। এ অর্থ বছরে রেলের মোট লোকসান হয় এক হাজার ৫২৪ কোটি টাকা। তবে এ ব্যয়ের মধ্যে রেলের অবসারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন-ভাতা, পেনশন ইত্যাদি অন্তর্ভুক্ত ছিল। এছাড়া রেলের পুলিশ, নিরাপত্তা বাহিনী-আরএনবি, স্কুল, হাসপাতালের ব্যয় বাড়ায় রেলের ব্যয় বেড়েছে, সেজন্য রেলের লোকসান কিছুটা বাড়ছে।

তিনি আরো জানান, রেলের যাত্রীবাহী ট্রেনের দৈনিক গড় আয় যেখানে সাড়ে তিন লাখ টাকা, সেখানে একটি মালবাহী ট্রেনের গড় আয় প্রায় ৭-৮ লাখ টাকা। তবে ৩৫০টির অধিক যাত্রীবাহী ট্রেন চলাচল করলেও মালবাহী ট্রেন মাত্র ২০-২৫টি চলাচল করে বিধায় রেলের আয় কিছুটা কম হচ্ছে।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

চলতি বর্ষা যশোরের বিভিন্ন সড়ক-মহাসড়ক চলাচলের অযোগ্য, দুর্ভোগে পথচারীরা

রেলে আয়ের চেয়ে ১৫২৪ কোটি টাকা বেশি ব্যয় হয়েছে: রেলমন্ত্রী

প্রকাশের সময় : ০৯:০১:৩৪ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৫ ফেব্রুয়ারী ২০২৪

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

গত অর্থ বছরে রেলওয়ের আয়ের তুলনায় ১৫২৪ কোটি টাকা ব্যয় বেশি হয়েছে বলে জানিয়েছেন রেলমন্ত্রী জিল্লুল হাকিম।

বৃহস্পতিবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) জাতীয় সংসদের অধিবেশনে স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য মুহাম্মদ সাইফুল ইসলামের এক প্রশ্নের লিখিত উত্তরে রেলমন্ত্রী এ তথ্য জানান। এ সময় স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী অধিবেশনে সভাপতিত্ব করেন।

রেলমন্ত্রী জিল্লুল হাকিম বলেন, ২০২২-২০২৩ অর্থ বছরের রেলওয়ের ব্যয় ছিল ৩৩০৭ কোটি টাকা, পক্ষান্তরে রেলওয়ের আয় ছিল ১৭৮৩ কোটি টাকা। আয়ের তুলনায় ১৫২৪ কোটি টাকা ব্যয় বেশি হয়েছে। এ ব্যয়ের মধ্যে বাংলাদেশ রেলওয়ের অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন-ভাতা, পেনশন ইত্যাদি অন্তর্ভুক্ত ছিল।

এছাড়া রেলওয়ে পুলিশ, রেলওয়ে নিরাপত্তা বাহিনী, স্কুল, হাসপাতালের মাধ্যমেও দেশের জনগণ সামাজিক ও নিরাপত্তামূলক সেবা পেয়ে আসছে, যার ব্যয় রেলওয়ে থেকে নির্বাহ করা হয়। এতে রেলওয়ের ব্যয় বৃদ্ধি পাচ্ছে। মূলত স্বল্প খরচে জনগণকে সেবা দেওয়ার সরকারি নীতির কারণে ভাড়া বৃদ্ধিপূর্বক আয়-ব্যয়ের সমন্বয় করা হচ্ছে না।

রেলমন্ত্রী বলেন, সরকারের পলিসি অনুযায়ী বাংলাদেশ রেলওয়েকে বাণিজ্যিক তথা লাভজনক/অলাভজনক প্রতিষ্ঠান হিসেবে নয়, সেবাদানকারী সংস্থা হিসেবেই বিবেচনা করা হয়ে থাকে।

দেশের ৬৪টি জেলার মধ্যে ৪৩টি জেলায় রেল সংযোগ রয়েছে বলে জানান মন্ত্রী। তিনি বলেন, বাকি ২১টি জেলাকে রেল নেটওয়ার্কে যুক্ত করা প্রক্রিয়াধীন।

অপর সংসদ সদস্য মোরশেদ আলমের অপর এক প্রশ্নের জবাবে রেলমন্ত্রী বলেন, রেলওয়ে একটি সেবামূলক সংস্থা। আওয়ামী লীগ সরকার গঠনের পর ২০০৯ সাল থেকে এ পর্যন্ত মোট ৯৯টি নতুন প্রকল্প নেওয়া হয়েছে। ২০২৩-২৪ অর্থবছরের এডিপিতে বাংলাদেশ রেলওয়েতে ২৫টি বিনিয়োগ প্রকল্প এবং ৩টি কারিগরি সহায়তা প্রকল্প অর্থাৎ মোট ২৮টি উন্নয়ন প্রকল্প চলমান।

গত এক যুগে সরকার দেশে ৯৪৮ কিলোমিটার নতুন রেললাইন নির্মাণ, ৩৪০ দশমিক ১৭ কিলোমিটার মিটারগেজ রেললাইনকে ডুয়েলগেজে রূপান্তর, ১ হাজার ৩৯১ দশমিক ৩২ কিলোমিটার রেললাইন পুনর্র্নিমাণ, ১৪৮টি নতুন স্টেশন বিল্ডিং নির্মাণ, ২৩৮টি স্টেশন বিল্ডিং পুনর্র্নিমাণ, ১ হাজার ৬২টি নতুন রেলসেতু নির্মাণ, ৭৯৪টি রেলসেতু পুনর্র্নিমাণ, ১৩৭টি স্টেশনে সিগন্যালিং ব্যবস্থার উন্নয়ন ও আধুনিকায়ন করা হয়েছে বলে জানান রেলমন্ত্রী।

তিনি বলেন, রেলের সেবা আরও আধুনিক করার জন্য বর্তমান সরকারের পরিকল্পনাগুলোর মধ্যে রেলের সক্ষমতা বাড়ানো, নতুন রেল লাইন নির্মাণ, রোলিং স্টক সংকট নিরসন, বাংলাদেশ-ভারতের মধ্যে নতুন রেল সংযোগ স্থাপন, সিগনালিং ব্যবস্থার আধুনিকায়ন, নতুন ট্রেন চালু করা, রেল ডিজিটালাইজেশন, এছাড়া ২৮টি নতুন ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে।

সরকার দলীয় সংসদ সদস্য নুর উদ্দিন চৌধুরী নয়নের প্রশ্নের জবাবে রেলপথ বলেন, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রাক্কালে বিএনপি, জামায়াত ও তাদের দোসর অগ্নিসন্ত্রাসের মাধ্যমে রেলে আগুন দিয়েছে। প্রাথমিক তথ্য অনুযায়ী এতে রেলওয়ের আনুমানিক আর্থিক ক্ষতির পরিমাণ ৯ কোটি ২৮ লাখ ৫৬ হাজার ৩০৪ টাকা।

স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য মুহাম্মদ সাইফুল ইসলামের লিখিত প্রশ্নের জবাবে রেলপথ মন্ত্রী জানান, ২০২২-২৩ অর্থ বছরে রেলের আয় ছিল এক হাজার ৭৮৩ কোটি টাকা ও ব্যয় ছিল ৩ হাজার ৩০৭ কোটি টাকা। এ অর্থ বছরে রেলের মোট লোকসান হয় এক হাজার ৫২৪ কোটি টাকা। তবে এ ব্যয়ের মধ্যে রেলের অবসারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন-ভাতা, পেনশন ইত্যাদি অন্তর্ভুক্ত ছিল। এছাড়া রেলের পুলিশ, নিরাপত্তা বাহিনী-আরএনবি, স্কুল, হাসপাতালের ব্যয় বাড়ায় রেলের ব্যয় বেড়েছে, সেজন্য রেলের লোকসান কিছুটা বাড়ছে।

তিনি আরো জানান, রেলের যাত্রীবাহী ট্রেনের দৈনিক গড় আয় যেখানে সাড়ে তিন লাখ টাকা, সেখানে একটি মালবাহী ট্রেনের গড় আয় প্রায় ৭-৮ লাখ টাকা। তবে ৩৫০টির অধিক যাত্রীবাহী ট্রেন চলাচল করলেও মালবাহী ট্রেন মাত্র ২০-২৫টি চলাচল করে বিধায় রেলের আয় কিছুটা কম হচ্ছে।