নিজস্ব প্রতিবেদক :
মূল বেতনের সঙ্গে রানিং অ্যালাউন্স যোগ করে পেনশন প্রদান এবং আনুতোষিক সুবিধা দেওয়ার বিষয়ে জটিলতা নিরসন না হওয়ায় রোববার মধ্যরাত ১২টা থেকে কর্মবিরতিতে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছিল রেলওয়ে রানিং স্টাফ ও শ্রমিক কর্মচারী সমিতি। একটু আগে (সন্ধ্যা সাড়ে ৬টা) সেই সিদ্ধান্ত স্থগিত করেছে সংগঠনটি। এতে রাত থেকে ট্রেন চলাচল বন্ধের যে আশঙ্কা ছিল, সেটি কেটে গেছে।
রোববার (২৭ আগস্ট) সন্ধ্যা ৬টা ৪৫ মিনিটে বিষয়টি ঢাকা পোস্টকে নিশ্চিত করেছেন রানিং স্টাফ ও শ্রমিক কর্মচারী সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. মজিবুর রহমান।
তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রীর অফিস থেকে আমাদের আশ্বস্ত করা হয়েছে মঙ্গলবার (২৯ আগস্ট) বিকেলে প্রধানমন্ত্রীর মুখ্যসচিব মো. তোফাজ্জল হোসেন মিয়ার সঙ্গে আমাদের বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। উচ্চ পর্যায়ের এই আশ্বাসে আমরা আগামী ১০ কার্যদিবস আমাদের কর্মবিরতি স্থগিত করেছি। পরে এ বিষয়ে বিস্তারিত জানানো হবে।
রেলওয়ের রানিং স্টাফরা জানিয়েছেন, আইন অনুযায়ী হেডকোয়ার্টারে তাদের ৮ ঘণ্টার ডিউটি শেষে ১২ ঘণ্টা বিশ্রাম করার কথা। কিন্তু রেলওয়ের কর্মী সংকট থাকায় তারা ৭/৮ ঘণ্টা বিশ্রাম করার পর আবার কাজে নেমে যান। রেলের কর্মীরা রেলের স্বার্থে কাজ করতে চান। কিন্তু রেলওয়ে তাদের স্বার্থের বিষয়ে আন্তরিক নয়।
অবসরের পর পেনশনের সঙ্গে ‘মাইলেজ’ সুবিধা পুনর্বহালের দাবিতে দেড় বছরেরও বেশি সময় ধরে আন্দোলন করছেন রানিং স্টাফরা। কয়েক দফায় অতিরিক্ত কাজ থেকে বিরত থাকা এবং ধর্মঘট পালন করেন তারা। তবে বিভিন্ন সময়ে রেলওয়ের মহাপরিচালক, রেলসচিব, রেলমন্ত্রীসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের আশ্বাসে আন্দোলন থেকে সরে আসেন তারা।
এবার তারা দাবি আদায়ে অনির্দষ্ট কালের কর্মবিরতিতে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছিলেন।
মাইলেজ সুবিধা পুনর্বহালের দাবিতে দেড় বছরেরও বেশি সময় ধরে আন্দোলন করছেন রানিং স্টাফরা। কয়েক দফায় অতিরিক্ত কাজ থেকে বিরত থাকা এবং ধর্মঘট পালন করেছেন তারা। তবে বিভিন্ন সময়ে রেলওয়ের মহাপরিচালক, রেলসচিব, রেলমন্ত্রীসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের আশ্বাসে আন্দোলন থেকে সরে আসেন তারা। কিন্তু শেষ পর্যন্ত কোনো সমাধান না হওয়ায় ২৮ আগস্ট থেকে টানা কর্মবিরতিতে যাওয়ার ঘোষণা দেন তারা। যদিও সন্ধ্যায় তা স্থগিত করা হয়।
শ্রমিক সমিতি সূত্রে জানা যায়, রেলওয়ের কর্মীরা তাদের দৈনিক শ্রমঘণ্টার বাইরে প্রতিদিন যে ওভারটাইম করেন, তা পেনশন-আনুতোষিক (পার্ট অব পে) প্রদানের সঙ্গে যুক্ত হওয়ার বিধান ছিল। রেলওয়ে বিধি-বিধান অনুযায়ী পার্ট অব পের ফলে মূল পেনশনের সঙ্গে অতিরিক্ত ৭৫ শতাংশ সুবিধা পাওয়া যেত, যা ১৬০ বছর ধরে চলে আসছে।
কিন্তু অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে এ সুবিধা প্রত্যাহার করার নির্দেশনা দেওয়ায় এবং অবসরে যাওয়া শ্রমিকদের পেনশনের ফাইল আটকে যাওয়ায় ২০২০ সালের ২৬ আগস্ট থেকে আন্দোলন করে আসছেন রেলকর্মীরা।
শ্রমিক সমিতির নেতাদের অভিযোগ, রেলমন্ত্রী সেদিন তাদের সঙ্গে ভালো ব্যবহার করতে পারেননি। তিনি হুমকি দেন। তাদের আন্দোলন তো নিয়মতান্ত্রিক ছিল। আর এর মধ্যে প্রায় তিন থেকে সাড়ে তিন বছর সময় দেওয়া হয়েছে। এটি নতুন কোনো বিষয় নয়। ১৬০ বছর ধরে চলে আসছে। ১৬০ বছর ধরে চলে আসা একটা বিষয় হুট করে বন্ধ করে দেওয়া হবে, এটা তো রেলের কোনো স্টাফ মেনে নিতে পারেন না।
শ্রমিকরা বলছেন, বারবার আন্দোলন করেছি, বারবার প্রত্যাহার করেছি। কিন্তু এবার আর কোনো কিছু করার সুযোগ নেই।