Dhaka মঙ্গলবার, ২৯ জুলাই ২০২৫, ১৩ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

রূপগঞ্জে কারখানায় আগুনে নিহত বেড়ে ৫২

রূপগঞ্জে কারখানায় আগুনে নিহতদের স্বজনের আহাজারি

নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে সজীব গ্রুপের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান হাসেম ফুড অ্যান্ড বেভারেজের ফুডস ফ্যাক্টরিতে (সেজান জুসের কারখানা) লাগা আগুনে অন্তত ৫২ জন নিহত হয়েছেন। মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে।

ফায়ার সার্ভিসের উপ-পরিচালক দেবাশীষ বর্ধন জানান, এখন পর্যন্ত কারখানার ভেতর থেকে ৫২ জনের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। এসব লাশ ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ফরেনসিক বিভাগে পাঠানো হয়েছে। সেখানে ডিএনএ পরীক্ষার মাধ্যমে মরদেহ স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হবে।

প্রাথমিকভাবে জানা গেছে, নিহতদের মধ্যে অনেক শিশু শ্রমিক আছে। পরিচয় শনাক্তের জন্য লাশগুলো ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হবে। সেখানে ডিএনএ পরীক্ষার মাধ্যমে লাশগুলো স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হবে।
আগুনের ঘটনায় পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।

কাঞ্চন ফায়ার সার্ভিসের ইনচার্জ শাহ-আলম বলেন, বৃহস্পতিবার মধ্যরাতে আগুন কিছুটা নিয়ন্ত্রণে এলেও শুক্রবার ভোর ৬টার দিকে কারখানার চারতলায় আবারও আগুন বাড়তে থাকে।

ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তরের কন্ট্রোল রুম জানিয়েছে, ১-৪ তলার মধ্যে ৪৯টি লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। ৫ ও ৬ তলায় ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা এখনো প্রবেশ করতে পারেনি। ওই দুই তলায় আরও লাশ রয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

বৃহস্পতিবার বিকেল সাড়ে ৫টার পর ওই কারখানায় আগুন লাগে। সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে তিনজনের মৃত্যুর খবর আসে।

গতকাল প্রত্যক্ষদর্শীরা বলেছিলেন, হাশেম ফুডস লিমিটেডের ৭ তলা ভবনের নিচ তলার একটি ফ্লোরে হঠাৎ করে আগুনের সূত্রপাত ঘটে। সময়ের সাথে সাথে আগুনের লেলিহান শিখা বাড়তে থাকে। একপর্যায়ে আগুন পুরো ভবনে ছড়িয়ে পড়ে। কালো ধোঁয়ায় গোটা কারখানাটি অন্ধকার হয়ে যায়। শ্রমিকরা ছোটাছুটি করতে শুরু করেন। কেউ কেউ ভবনের ছাদে অবস্থান নেন। এ সময় ঘটনাস্থলেই স্বপ্না রানী ও মিনা আক্তার নামে দুই নারী শ্রমিক নিহত হন।

রাত ১১টার দিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে মোরসালিন (২৮) নামে আরও একজনের মৃত্যু হয়।

প্রাণে বাঁচতে ভবন থেকে লাফিয়ে পড়েন অনেকে। লাফিয়ে পড়ে আহত হওয়া অন্তত ছয়জনকে গতকাল ঢামেকে ভর্তি করা হয়।

আগুন লাগার পর থেকেই শঙ্কা ছিল কারখানার ভেতর অনেক শ্রমিক হয়তো আটকা পড়েছেন। রাত ৯টার দিকে দেখা যায়, ভবনের সামনে ও পেছন দিক থেকে আগুন নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করছিল ফায়ার সার্ভিস। কিন্তু আগুনের তীব্রতা বেশি ও প্রচণ্ড কালো ধোঁয়া থাকায় ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা ভবনের ভেতরে প্রবেশ করতে পারছিলেন না।

কারখানাটির সপ্তম তলায় একটি কেমিক্যাল গোডাউন ছিল বলে খবর পাওয়া গেছে। এই গোডাউনের কারণে আগুনের ব্যাপকতা বেড়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

রূপগঞ্জে কারখানায় আগুনে নিহত বেড়ে ৫২

প্রকাশের সময় : ০১:০৩:৪৫ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৯ জুলাই ২০২১

নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে সজীব গ্রুপের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান হাসেম ফুড অ্যান্ড বেভারেজের ফুডস ফ্যাক্টরিতে (সেজান জুসের কারখানা) লাগা আগুনে অন্তত ৫২ জন নিহত হয়েছেন। মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে।

ফায়ার সার্ভিসের উপ-পরিচালক দেবাশীষ বর্ধন জানান, এখন পর্যন্ত কারখানার ভেতর থেকে ৫২ জনের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। এসব লাশ ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ফরেনসিক বিভাগে পাঠানো হয়েছে। সেখানে ডিএনএ পরীক্ষার মাধ্যমে মরদেহ স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হবে।

প্রাথমিকভাবে জানা গেছে, নিহতদের মধ্যে অনেক শিশু শ্রমিক আছে। পরিচয় শনাক্তের জন্য লাশগুলো ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হবে। সেখানে ডিএনএ পরীক্ষার মাধ্যমে লাশগুলো স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হবে।
আগুনের ঘটনায় পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।

কাঞ্চন ফায়ার সার্ভিসের ইনচার্জ শাহ-আলম বলেন, বৃহস্পতিবার মধ্যরাতে আগুন কিছুটা নিয়ন্ত্রণে এলেও শুক্রবার ভোর ৬টার দিকে কারখানার চারতলায় আবারও আগুন বাড়তে থাকে।

ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তরের কন্ট্রোল রুম জানিয়েছে, ১-৪ তলার মধ্যে ৪৯টি লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। ৫ ও ৬ তলায় ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা এখনো প্রবেশ করতে পারেনি। ওই দুই তলায় আরও লাশ রয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

বৃহস্পতিবার বিকেল সাড়ে ৫টার পর ওই কারখানায় আগুন লাগে। সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে তিনজনের মৃত্যুর খবর আসে।

গতকাল প্রত্যক্ষদর্শীরা বলেছিলেন, হাশেম ফুডস লিমিটেডের ৭ তলা ভবনের নিচ তলার একটি ফ্লোরে হঠাৎ করে আগুনের সূত্রপাত ঘটে। সময়ের সাথে সাথে আগুনের লেলিহান শিখা বাড়তে থাকে। একপর্যায়ে আগুন পুরো ভবনে ছড়িয়ে পড়ে। কালো ধোঁয়ায় গোটা কারখানাটি অন্ধকার হয়ে যায়। শ্রমিকরা ছোটাছুটি করতে শুরু করেন। কেউ কেউ ভবনের ছাদে অবস্থান নেন। এ সময় ঘটনাস্থলেই স্বপ্না রানী ও মিনা আক্তার নামে দুই নারী শ্রমিক নিহত হন।

রাত ১১টার দিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে মোরসালিন (২৮) নামে আরও একজনের মৃত্যু হয়।

প্রাণে বাঁচতে ভবন থেকে লাফিয়ে পড়েন অনেকে। লাফিয়ে পড়ে আহত হওয়া অন্তত ছয়জনকে গতকাল ঢামেকে ভর্তি করা হয়।

আগুন লাগার পর থেকেই শঙ্কা ছিল কারখানার ভেতর অনেক শ্রমিক হয়তো আটকা পড়েছেন। রাত ৯টার দিকে দেখা যায়, ভবনের সামনে ও পেছন দিক থেকে আগুন নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করছিল ফায়ার সার্ভিস। কিন্তু আগুনের তীব্রতা বেশি ও প্রচণ্ড কালো ধোঁয়া থাকায় ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা ভবনের ভেতরে প্রবেশ করতে পারছিলেন না।

কারখানাটির সপ্তম তলায় একটি কেমিক্যাল গোডাউন ছিল বলে খবর পাওয়া গেছে। এই গোডাউনের কারণে আগুনের ব্যাপকতা বেড়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।