সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ব্যতীত বর্তমানে দেশের সারাদেশে গণপরিবহণ থেকে শুরু করে মার্কেটসহ প্রায় সবকিছু খুলে দেওয়া হয়েছে। খোলা হয়েছে দেশের অন্যতম বৃহৎ পাইকারি কাপড়ের বাজার গাউছিয়া মার্কেট। সোমবার ও মঙ্গলবার সপ্তাহে দুইদিন গাউছিয়া মার্কেটে হাঁট বসে বলে জানা গেছে। এ হাটে অনেক লোকের সমাগমে স্বাস্থ্যবিধি ও সামাজিক দূরত্ব বজায় না থাকায় করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ে আবারো সংক্রমণ বাড়তে পারে বলে মনে করছে সংশ্লিষ্ট মহল।

মার্কেটের মালিকপক্ষ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, দেশের অন্যতম কাপড়ের পাইকারি বাজার গাউছিয়া মার্কেটে প্রায় ৭ হাজার দোকান রয়েছে। এসকল দোকান গুলোর সিংহভাগেই পাইকারিভাবে থ্রি-পিছ, কাপড়, শাড়িসহ বিভিন্ন ধরনের কাপড় পাইকারিভাবে বিক্রি করা হয়।

সোমবার ও মঙ্গলবার সপ্তাহে দুইদিন গাউছিয়া মার্কেটে হাঁট জমে উঠে। আর বাকী দিন গুলোতে কিছু দোকানে খুচরাভাবে বেচাবিক্রি চললেও পাইকারি দোকান গুলো হাঁটের দিন ছাড়া খোলা হয় না। হাটের দিনে গাজীপুর, ঢাকা, ভৈরব, রাজশাহী, ফরিদপুর, টঙ্গীসহ দেশের দূর দূরান্ত থেকে এখানে ক্রেতা আসেন পাইকারিভাবে কাপড় কিনতে। হাটের দিন গুলোতে মার্কেটে প্রায় দেড়- দুই লাখ লোকের সমাগম হয় বলে জানা গেছে।

হাটের দিন সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত সরেজমিনে গাউছিয়া মার্কেটে সরেজমিনে গিয়ে উপচেপড়া ভিড় দেখা গেছে। স্বাস্থ্যবিধি ও সামাজিক দূরত্বের তোয়াক্কা করা হয়নি মার্কেটের ভেতরে। কাপড় কিনতে আসা ক্রেতার বেশির ভাগকেই মুখে মাস্ক পড়তে দেখা যায়নি। আবার কাউকে কাউকে মাস্ক মুখের নিচে ও কানে ঝুলিয়ে রাখতেও দেখা গেছে।

এছাড়া মার্কেটের প্রবেশমূখে হাত ধোয়ার কোন ব্যবস্থা ও জীবানুনাশক স্প্রের কোন প্রকার ব্যবস্থা ছিল না। ফলে ক্রেতারা যে যারভাবে অসচেতনভাবে মার্কেটে কেনাকাটা করছে। বর্তমানে করোনা ভাইরাস সংক্রমণের সংখ্যা রূপগঞ্জে কমে গেলেও এসকল কারণে পূণরায় করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ছড়ানোর আশঙ্কা রয়েছে বলে জানান সচেতন মহল।

আরও পড়ুন : টাঙ্গাইলে কোরআন অবমাননার প্রতিবাদে সড়ক অবরোধ

রূপগঞ্জ উপজেলায় বর্তমানে মোট করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ১৪৩০ জন। যার মাঝে বেশিরভাগই সুস্থ্য হয়ে উঠেছে। আর মৃত্যু হয়েছে ১২ জনের। মার্কেটের ভেতরে ঘুরে কথা হয় ২০/২৫ ক্রেতার সঙ্গে তারা বেশিরভাগই দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে নিজেদের দোকানের জন্য এখানে পাইকারীভাবে কাপড় কিনতে এসেছেন। তাদের কারো মুখে মাস্ক ছিল না।

এদের মধ্যে গাজীপুর থেকে কাপড় কিনতে আসা রাশেদ হাসানের সঙ্গে তিনি দোকানের জন্য কাপড় কিনতে এসেছেন। তবে তার মূখে মাস্ক বা তেমন কোন সচেতনতা ছিল না। তাকে মাস্ক না পড়ার কারণ জিজ্ঞাসা তিনি বলেন, ভাই অহন আর দেশে করোনা নাই তাইলে মাস্ক পইড়া কি অইব।

গাউছিয়া মার্কেট কমিটির ম্যানেজার আব্দুল আউয়াল বলেন, মার্কেটের প্রবেশূখে হাত ধোয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে। আমরা সাধারণ মানুষকে মাস্ক পড়ার কথা বললেও তারা মানছে না।

উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার বলেন, মার্কেটের ভেতরে স্বাস্থ্যবিধি মেনে না ক্রেতা ও বিক্রেতা উভয়ই আক্রান্ত হতে পারে। দেশের অন্যতম বড় পাইকারী কাপড়ের বাজার গাউছিয়া মার্কেটে এখানে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে লোকজন আসে কাপড় কিনতে এখান থেকেও করোনা ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) শাহ্ নূসরাত জাহান বলেন, গাউছিয়া মার্কেটের ভেতরে সাধারণ মানুষকে স্বাস্থ্যবিধি মানাতে মাইকিংয়ের করতে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। আগামী রবিবার রূপগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে করোনা সচেতনতায় একটি সেমিনার করা হবে।