Dhaka রবিবার, ১৩ জুলাই ২০২৫, ২৯ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

রুপগঞ্জে জমি নিয়ে সংঘর্ষ, গুলিবিদ্ধ ৮

নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রতিনিধি  : 

নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ কায়েতপাড়া ইউনিয়নের নওড়াপাড়ায় বসতবাড়ি ও জমি দখলকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষ হয়েছে। অভিযোগ উঠেছে, সংঘর্ষ চলাকালীন রংধনু গ্রুপের চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম ওরফে আন্ডা রফিক ও তাঁর সহযোগীরা গুলি চালান। এতে শিশুসহ আটকজন গুলিবিদ্ধ আহত হয়েছেন।

সোমবার (২৫ মার্চ) সকাল সাড়ে ৭টার দিকে রূপগঞ্জের নাওড়া এলাকায় হাজীবাড়ির সামনে এই গুলির ঘটনা ঘটে।

পরে গুরুতর আহতদের উদ্ধার করে দুপুর সাড়ে ১১টার দিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে জরুরি বিভাগে নিয়ে আসা হয়।

আহতরা হলেন আকবর হোসেন (২৫), দ্বিতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থী শিশু আরিফ (৯), মো. রোমান (২০), মুক্তার হোসেন (৬০), জয়নাল (৩৬) ও তাঁর ভাই শামীম (২৫), মো. তাজুল (৩৬) ও নূর হোসেন (২৪)।

আহতের হাসপাতালে নিয়ে আসা নীরব ভূইয়া বলেন, এলাকার মো. রফিক ওরফে আন্ডা রফিক ও তার দোসর কুত্তা মিজানসহ প্রায় ৩০-৪০ জনের সন্ত্রাসী আজ সকালে ধারালো অস্ত্র, পিস্তল ও শটগান নিয়ে আমাদের বসতভিটা দখলের জন্য হামলা চালায়। প্রতিবাদ করতে গিয়ে তারা গুলি চালায়। এতে শিশুসহ ৮ জন গুলিবিদ্ধ হয়। পরে তাদের ঢাকা মেডিকেলের জরুরি বিভাগে চিকিৎসার জন্য আসি। আমরা সরকারের কাছে ন্যায়বিচার চাই। ওই ভূমিদস্যু আন্ডা রফিক ও তাঁর অন্যতম সহযোগী মিজান আজ সকালে পুলিশের সামনেই এই বর্বরোচিত হামলা চালায়।

নীরব ভূইয়া আরও বলেন, এর আগেও তারা আমাদের ওপর এই ধরনের হামলা ও জুলুম, অত্যাচার করেছিল। তখন ওই ঘটনায় ভূমিদস্যুদের গুলিতে এক শিশু নিহত হয়। জানি না আগামীকাল আমি তাদের এই হত্যার শিকার হব কিনা। তাই মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে আমাদের অনুরোধ এই ভূমিদস্যুদের হাত থেকে আমাদের রক্ষা করুন, আমাদের বসতবাড়ি ও আমাদেরকে রক্ষা করুন। স্বাধীন দেশে নিজের বাপ দাদার ভূমিতে আমাদের বেঁচে থাকতে সহায়তা করুন।

আহত জয়নাল আবেদীন বলেন, ‘সাহরির পর কাজের উদ্দেশে রুবেলসহ চারজন সাউদবাড়ি ঘাটে যায়। তখন রফিক বাহিনীর সদস্যরা তিনজনকে আটকে পিটিয়ে আহত করে। আমরা তাদের উদ্ধারের জন্য গেলে আমাদের ওপর অস্ত্রসহ হামলা চালায়। আমিসহ প্রায় আটজন গুলিবিদ্ধ হয়েছি।

তিনি বলেন, আমাদের ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম অনেক দিন ধরে আমাদের জমি বিক্রি করে এলাকা ছেড়ে চলে যেতে চাপ দিচ্ছে। আমরা জমি বিক্রি করতে রাজি না হওয়ায় কয়েক দিন পরপর তার সন্ত্রাসীরা আমাদের ওপর অস্ত্র নিয়ে হামলা চালায়। কেউ একা এলাকা থেকে বের হলে তাকে পিটিয়ে আহত করে। আমরা এর বিচার চাই।

গুলিবিদ্ধ শামীম জানান, তাঁদের বসতবাড়ির জমি দখলের চেষ্টা করে আসছিল স্থানীয় প্রভাবশালী একটি মহল। সকালে স্থানীয় আন্ডা রফিক, কুত্তা মিজানের অনুসারী আলাদিন, নাজমুল, আলাল, বকুল, আলমামুন, ইউসুফ, ফরিদ, শাহীনসহ অন্তত ৫০ জন সশস্ত্রভাবে তাঁদের ওপর আক্রমণ করে। পরে স্থানীয়রা একত্র হয়ে বাধা দিলে তাঁদের ব্যাপক মারধর করা হয়। এ সময় শটগানের গুলিতে আটজন গুলিবিদ্ধ হন।

বিষয়টি নিশ্চিত করে ঢামেক হাসপাতালের পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ ইন্সপেক্টর মো. বাচ্চু মিয়া বলেন, ‘সোমবার সাড়ে ১১টার দিকে নারায়ণগঞ্জ থেকে রক্তাক্ত জখম অবস্থায় শিশুসহ ৮ জনকে জরুরি বিভাগে আনা হয়। এরপর তাদের চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়। বর্তমানে জরুরি বিভাগসহ ঢাকা মেডিকেলের বিভিন্ন ওয়ার্ডে তাদের চিকিৎসা চলছে। আমরা বিষয়টি সংশ্লিষ্ট থানা পুলিশকে জানিয়েছি।’

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

নৌকা তৈরিতেই ফিরছে আগৈলঝাড়ার অর্ধ শতাধিক পরিবারের সচ্ছলতা

রুপগঞ্জে জমি নিয়ে সংঘর্ষ, গুলিবিদ্ধ ৮

প্রকাশের সময় : ০৪:২৪:০৮ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৫ মার্চ ২০২৪

নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রতিনিধি  : 

নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ কায়েতপাড়া ইউনিয়নের নওড়াপাড়ায় বসতবাড়ি ও জমি দখলকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষ হয়েছে। অভিযোগ উঠেছে, সংঘর্ষ চলাকালীন রংধনু গ্রুপের চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম ওরফে আন্ডা রফিক ও তাঁর সহযোগীরা গুলি চালান। এতে শিশুসহ আটকজন গুলিবিদ্ধ আহত হয়েছেন।

সোমবার (২৫ মার্চ) সকাল সাড়ে ৭টার দিকে রূপগঞ্জের নাওড়া এলাকায় হাজীবাড়ির সামনে এই গুলির ঘটনা ঘটে।

পরে গুরুতর আহতদের উদ্ধার করে দুপুর সাড়ে ১১টার দিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে জরুরি বিভাগে নিয়ে আসা হয়।

আহতরা হলেন আকবর হোসেন (২৫), দ্বিতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থী শিশু আরিফ (৯), মো. রোমান (২০), মুক্তার হোসেন (৬০), জয়নাল (৩৬) ও তাঁর ভাই শামীম (২৫), মো. তাজুল (৩৬) ও নূর হোসেন (২৪)।

আহতের হাসপাতালে নিয়ে আসা নীরব ভূইয়া বলেন, এলাকার মো. রফিক ওরফে আন্ডা রফিক ও তার দোসর কুত্তা মিজানসহ প্রায় ৩০-৪০ জনের সন্ত্রাসী আজ সকালে ধারালো অস্ত্র, পিস্তল ও শটগান নিয়ে আমাদের বসতভিটা দখলের জন্য হামলা চালায়। প্রতিবাদ করতে গিয়ে তারা গুলি চালায়। এতে শিশুসহ ৮ জন গুলিবিদ্ধ হয়। পরে তাদের ঢাকা মেডিকেলের জরুরি বিভাগে চিকিৎসার জন্য আসি। আমরা সরকারের কাছে ন্যায়বিচার চাই। ওই ভূমিদস্যু আন্ডা রফিক ও তাঁর অন্যতম সহযোগী মিজান আজ সকালে পুলিশের সামনেই এই বর্বরোচিত হামলা চালায়।

নীরব ভূইয়া আরও বলেন, এর আগেও তারা আমাদের ওপর এই ধরনের হামলা ও জুলুম, অত্যাচার করেছিল। তখন ওই ঘটনায় ভূমিদস্যুদের গুলিতে এক শিশু নিহত হয়। জানি না আগামীকাল আমি তাদের এই হত্যার শিকার হব কিনা। তাই মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে আমাদের অনুরোধ এই ভূমিদস্যুদের হাত থেকে আমাদের রক্ষা করুন, আমাদের বসতবাড়ি ও আমাদেরকে রক্ষা করুন। স্বাধীন দেশে নিজের বাপ দাদার ভূমিতে আমাদের বেঁচে থাকতে সহায়তা করুন।

আহত জয়নাল আবেদীন বলেন, ‘সাহরির পর কাজের উদ্দেশে রুবেলসহ চারজন সাউদবাড়ি ঘাটে যায়। তখন রফিক বাহিনীর সদস্যরা তিনজনকে আটকে পিটিয়ে আহত করে। আমরা তাদের উদ্ধারের জন্য গেলে আমাদের ওপর অস্ত্রসহ হামলা চালায়। আমিসহ প্রায় আটজন গুলিবিদ্ধ হয়েছি।

তিনি বলেন, আমাদের ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম অনেক দিন ধরে আমাদের জমি বিক্রি করে এলাকা ছেড়ে চলে যেতে চাপ দিচ্ছে। আমরা জমি বিক্রি করতে রাজি না হওয়ায় কয়েক দিন পরপর তার সন্ত্রাসীরা আমাদের ওপর অস্ত্র নিয়ে হামলা চালায়। কেউ একা এলাকা থেকে বের হলে তাকে পিটিয়ে আহত করে। আমরা এর বিচার চাই।

গুলিবিদ্ধ শামীম জানান, তাঁদের বসতবাড়ির জমি দখলের চেষ্টা করে আসছিল স্থানীয় প্রভাবশালী একটি মহল। সকালে স্থানীয় আন্ডা রফিক, কুত্তা মিজানের অনুসারী আলাদিন, নাজমুল, আলাল, বকুল, আলমামুন, ইউসুফ, ফরিদ, শাহীনসহ অন্তত ৫০ জন সশস্ত্রভাবে তাঁদের ওপর আক্রমণ করে। পরে স্থানীয়রা একত্র হয়ে বাধা দিলে তাঁদের ব্যাপক মারধর করা হয়। এ সময় শটগানের গুলিতে আটজন গুলিবিদ্ধ হন।

বিষয়টি নিশ্চিত করে ঢামেক হাসপাতালের পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ ইন্সপেক্টর মো. বাচ্চু মিয়া বলেন, ‘সোমবার সাড়ে ১১টার দিকে নারায়ণগঞ্জ থেকে রক্তাক্ত জখম অবস্থায় শিশুসহ ৮ জনকে জরুরি বিভাগে আনা হয়। এরপর তাদের চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়। বর্তমানে জরুরি বিভাগসহ ঢাকা মেডিকেলের বিভিন্ন ওয়ার্ডে তাদের চিকিৎসা চলছে। আমরা বিষয়টি সংশ্লিষ্ট থানা পুলিশকে জানিয়েছি।’