Dhaka শনিবার, ১৮ অক্টোবর ২০২৫, ৩ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

রাস্তায় নয়, সব কর্মকাণ্ড সংসদকেন্দ্রিক করতে হবে : মির্জা ফখরুল

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

আর রাস্তায় নয়, সব রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডকে সংসদকেন্দ্রিক করার আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

শনিবার (১৮ অক্টোবর) বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড জাতীয়তাবাদী শ্রমিক কর্মচারি ইউনিয়নের একটি অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, আওয়ামী লীগ ১৫ বছরে যে জঞ্জাল সৃষ্টি করে গেছে, সবকিছু ধ্বংস করে দিয়েছে, সেগুলোকে এক বছরের মধ্যে ঠিক করে ফেলা কারও পক্ষেই সম্ভব নয়। রাজনৈতিক দলগুলোকে দায়িত্বশীলতার সঙ্গে একটি আবাধ-সুষ্ঠ নির্বাচনের মধ্য দিয়ে যে সংসদ আসবে সেই সংসদীয় ব্যবস্থাকে শক্তিশালী করার জন্য নজর দিতে হবে। সব কর্মকাণ্ডকে সংসদকেন্দ্রিক করতে হবে।

তিনি বলেন, এটি না করলে সংসদীয় গণতন্ত্র কাজ করবে না। পৃথিবীর যেসব দেশে সংসদীয় গণতন্ত্র সফল হয়েছে সবগুলোতে কিন্তু সংসদ হচ্ছে রাজনীতির কেন্দ্রবিন্দু। রাস্তা থেকে উঠে চলে আসতে হবে সংসদে। আর কত দিন রাস্তায় থাকবেন? ৫০ বছর তো আমরা রাস্তায় চলছি। এগুলোকে ঠিক করে, এই জুলাই জাতীয় সনদের মাধ্যমে গণতন্ত্রকে যদি আমরা একটি সংস্কৃতিতে পরিণত করতে পারি, সেই চেষ্টা আমাদের করতে হবে।

আসন্ন জাতীয় নির্বাচনে সবাইকে অংশ নেওয়ার আহ্বান জানিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, সবাই যেভাবে ছোটখাট ভিন্নতা-দূরত্ব দূর করে সনদ স্বাক্ষর করতে পেরেছি, আসুন সেভাবে আমাদের দূরত্বকে দূর করে নির্বাচনটিকে একটি সত্যিকার অর্থে অর্থপূর্ণ নির্বাচনে পরিণত করি। অর্থাৎ একটি অবাধ, নিরপেক্ষ নির্বাচন হোক। সেই নির্বাচনের মধ্য দিয়ে যারা নির্বাচিত হবেন, তারা আমাদের সংসদকে সত্যিকার অর্থে প্রাণবন্ত করে গড়ে তুলবেন, অর্থবহ করবেন এবং সেই সংসদ হবে আমাদের রাজনৈতিক কেন্দ্রবিন্দু। এভাবে আমরা যেন সামনের দিকে এগিয়ে যেতে পারি। গণতন্ত্রকে যদি আমরা সত্যিকার অর্থে প্রতিষ্ঠিত করতে সক্ষম হই, তাহলে আমার ধারণা, আমার বিশ্বাস, সেখানে সব শ্রেণির দাবি-দাওয়া পূরণ হবে, স্বীকৃত হবে।

মির্জা ফখরুল বলেন, গতকাল একটা ঐতিহাসিক বলতে গেলে পলিটিক্যাল ইভেন্ট হয়েছে। বেশিরভাগ রাজনৈতিক দল ঐতিহাসিক জুলাই সনদে স্বাক্ষর করেছি এবং এটা সত্যি বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাসে অনন্য ঘটনা যে রাষ্ট্র কাঠামো পরিবর্তন, মূলনীতির সংশোধন এবং একই সঙ্গে আমাদের রাজনীতিকে আরো স্বচ্ছ করা জনগণের কাছে পৌঁছে দেওয়া, গণতন্ত্রকে সত্যিকার অর্থেই যে প্রতিষ্ঠানগুলো আছে সেগুলোকে প্রাতিষ্ঠানিকভাবে আরো বেশি উন্নত করা, গণতন্ত্রকে গণতন্ত্রের মতো চলতে দেয়া এবং গণতান্ত্রিক কৃষ্টি অর্থাৎ ডেমোক্রেটিক কালচার পুরোটা এই ব্যাপারগুলো সমাজের মধ্যে সবগুলো নিয়ে আসতে সক্ষম হয়েছে।

প্রায় দীর্ঘ সাত আট মাস কাজ করে তারা এটা নিয়ে এসেছে বলে উল্লেখ করেন বিএনপির মহাসচিব।

তিনি বলেন, এসময় এ ধরনের ঘটনাগুলো গণতন্ত্রকে সাহায্য করবে না। আমার মনে হয় যে সবার দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করা উচিত, কারণ এটি অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। এ সরকার এখন পর্যন্ত যতগুলো কাজ করেছে তারা ভালো করার চেষ্টা করেছে। আমরা যে যতই বলি, এক বছরের মধ্যে সব জঞ্জাল শেষ করে ফেলা সম্ভব নয়।

মির্জা ফখরুল বলেন, একটা আনফরচুনেট ইনসিডেন্ট ঘটেছে যে, কালকে ছেলেরা একটা গ্রুপ তারা সংসদ ভবনের অনুষ্ঠানের সামনে এসে বসে যায়। তারপরে একটা আনফরচুনেট ঘটনা ঘটে। পুলিশ এবং ছাত্রদের মধ্যে, বলা যেতে পারে যে একটা ভায়োলেন্সের ঘটনা ঘটছে। এই সময়ে এই ধরনের ঘটনাগুলো গণতন্ত্রকে সাহায্য করবে না। আমার মনে হয় যে সবার দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করা উচিত কারণ এটা কি অন্তবর্তীকালীন সরকার। এই সরকার এখন পর্যন্ত যতগুলো কাজ করছে তারা ভালো কাজ করার চেষ্টা করেছে। আমরা যে যতই বলি, এক বছরের মধ্যে সমস্ত জঞ্জালগুলো শেষ করে ফেলা সম্ভব নয়।
পানি উন্নয়ন বোর্ড জাতীয়তাবাদী শ্রমিক দলের দাবি-দাওয়ার প্রতি নিজের এবং তার দলের সমর্থনের কথাও ব্যক্ত করেন বিএনপি মহাসচিব।

অনুষ্ঠান শেষে মঞ্জুরুল ইসলাম মঞ্জুকে সভাপতি ও হুমায়ুন কবিরকে সাধারণ সম্পাদক করে নতুন কমিটি ঘোষণা করা হয়। বিএনপি মহাসচিব এ শ্রমিক ইউনিয়নের দাবি-দাওয়ার প্রতি তার পূর্ণ সমর্থনের কথা জানান।

পানি উন্নয়ন বোর্ড জাতীয়তাবাদী শ্রমিক কর্মচারী ইউনিয়নের সভাপতি মঞ্জুরুল ইসলাম মঞ্জুর সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক সাধারণ সম্পাদক হুমায়ুন কবিরের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে শ্রমিক দলের প্রধান সমন্বয়কারী শামছুর রহমান শিমুল বিশ্বাস, শ্রম সংস্কার কমিশনের প্রধান সৈয়দ সুলতান উদ্দিন আহমদ, শ্রমিক দলের সভাপতি আনোয়ার হোসাইন, সাধারণ সম্পাদক নুরুল ইসলাম নাসিম, পানি উন্নয়ন বোর্ডের মোস্তফা খান, আইয়ুব আলী, আবু সালেহ মো. তোফায়েল চৌধুরী, ফরিদ উদ্দিন খান, মাহমুদুল করীম, মাহবুবুল হক রিপন, বিদ্যু শ্রমিক ইউনিয়নের আবুল কালাম আজাদ, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ শ্রমিক দলের সুমন ভূঁইয়া, উত্তরের কামরুজ্জামান প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

দেশের উন্নয়নপ্রক্রিয়ায় জনগণকে সম্পৃক্ত করতে না পারলে কোনো পরিকল্পনাই সফল হবে না : মঈন খান

রাস্তায় নয়, সব কর্মকাণ্ড সংসদকেন্দ্রিক করতে হবে : মির্জা ফখরুল

প্রকাশের সময় : ০৭:৩৬:২০ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৮ অক্টোবর ২০২৫

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

আর রাস্তায় নয়, সব রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডকে সংসদকেন্দ্রিক করার আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

শনিবার (১৮ অক্টোবর) বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড জাতীয়তাবাদী শ্রমিক কর্মচারি ইউনিয়নের একটি অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, আওয়ামী লীগ ১৫ বছরে যে জঞ্জাল সৃষ্টি করে গেছে, সবকিছু ধ্বংস করে দিয়েছে, সেগুলোকে এক বছরের মধ্যে ঠিক করে ফেলা কারও পক্ষেই সম্ভব নয়। রাজনৈতিক দলগুলোকে দায়িত্বশীলতার সঙ্গে একটি আবাধ-সুষ্ঠ নির্বাচনের মধ্য দিয়ে যে সংসদ আসবে সেই সংসদীয় ব্যবস্থাকে শক্তিশালী করার জন্য নজর দিতে হবে। সব কর্মকাণ্ডকে সংসদকেন্দ্রিক করতে হবে।

তিনি বলেন, এটি না করলে সংসদীয় গণতন্ত্র কাজ করবে না। পৃথিবীর যেসব দেশে সংসদীয় গণতন্ত্র সফল হয়েছে সবগুলোতে কিন্তু সংসদ হচ্ছে রাজনীতির কেন্দ্রবিন্দু। রাস্তা থেকে উঠে চলে আসতে হবে সংসদে। আর কত দিন রাস্তায় থাকবেন? ৫০ বছর তো আমরা রাস্তায় চলছি। এগুলোকে ঠিক করে, এই জুলাই জাতীয় সনদের মাধ্যমে গণতন্ত্রকে যদি আমরা একটি সংস্কৃতিতে পরিণত করতে পারি, সেই চেষ্টা আমাদের করতে হবে।

আসন্ন জাতীয় নির্বাচনে সবাইকে অংশ নেওয়ার আহ্বান জানিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, সবাই যেভাবে ছোটখাট ভিন্নতা-দূরত্ব দূর করে সনদ স্বাক্ষর করতে পেরেছি, আসুন সেভাবে আমাদের দূরত্বকে দূর করে নির্বাচনটিকে একটি সত্যিকার অর্থে অর্থপূর্ণ নির্বাচনে পরিণত করি। অর্থাৎ একটি অবাধ, নিরপেক্ষ নির্বাচন হোক। সেই নির্বাচনের মধ্য দিয়ে যারা নির্বাচিত হবেন, তারা আমাদের সংসদকে সত্যিকার অর্থে প্রাণবন্ত করে গড়ে তুলবেন, অর্থবহ করবেন এবং সেই সংসদ হবে আমাদের রাজনৈতিক কেন্দ্রবিন্দু। এভাবে আমরা যেন সামনের দিকে এগিয়ে যেতে পারি। গণতন্ত্রকে যদি আমরা সত্যিকার অর্থে প্রতিষ্ঠিত করতে সক্ষম হই, তাহলে আমার ধারণা, আমার বিশ্বাস, সেখানে সব শ্রেণির দাবি-দাওয়া পূরণ হবে, স্বীকৃত হবে।

মির্জা ফখরুল বলেন, গতকাল একটা ঐতিহাসিক বলতে গেলে পলিটিক্যাল ইভেন্ট হয়েছে। বেশিরভাগ রাজনৈতিক দল ঐতিহাসিক জুলাই সনদে স্বাক্ষর করেছি এবং এটা সত্যি বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাসে অনন্য ঘটনা যে রাষ্ট্র কাঠামো পরিবর্তন, মূলনীতির সংশোধন এবং একই সঙ্গে আমাদের রাজনীতিকে আরো স্বচ্ছ করা জনগণের কাছে পৌঁছে দেওয়া, গণতন্ত্রকে সত্যিকার অর্থেই যে প্রতিষ্ঠানগুলো আছে সেগুলোকে প্রাতিষ্ঠানিকভাবে আরো বেশি উন্নত করা, গণতন্ত্রকে গণতন্ত্রের মতো চলতে দেয়া এবং গণতান্ত্রিক কৃষ্টি অর্থাৎ ডেমোক্রেটিক কালচার পুরোটা এই ব্যাপারগুলো সমাজের মধ্যে সবগুলো নিয়ে আসতে সক্ষম হয়েছে।

প্রায় দীর্ঘ সাত আট মাস কাজ করে তারা এটা নিয়ে এসেছে বলে উল্লেখ করেন বিএনপির মহাসচিব।

তিনি বলেন, এসময় এ ধরনের ঘটনাগুলো গণতন্ত্রকে সাহায্য করবে না। আমার মনে হয় যে সবার দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করা উচিত, কারণ এটি অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। এ সরকার এখন পর্যন্ত যতগুলো কাজ করেছে তারা ভালো করার চেষ্টা করেছে। আমরা যে যতই বলি, এক বছরের মধ্যে সব জঞ্জাল শেষ করে ফেলা সম্ভব নয়।

মির্জা ফখরুল বলেন, একটা আনফরচুনেট ইনসিডেন্ট ঘটেছে যে, কালকে ছেলেরা একটা গ্রুপ তারা সংসদ ভবনের অনুষ্ঠানের সামনে এসে বসে যায়। তারপরে একটা আনফরচুনেট ঘটনা ঘটে। পুলিশ এবং ছাত্রদের মধ্যে, বলা যেতে পারে যে একটা ভায়োলেন্সের ঘটনা ঘটছে। এই সময়ে এই ধরনের ঘটনাগুলো গণতন্ত্রকে সাহায্য করবে না। আমার মনে হয় যে সবার দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করা উচিত কারণ এটা কি অন্তবর্তীকালীন সরকার। এই সরকার এখন পর্যন্ত যতগুলো কাজ করছে তারা ভালো কাজ করার চেষ্টা করেছে। আমরা যে যতই বলি, এক বছরের মধ্যে সমস্ত জঞ্জালগুলো শেষ করে ফেলা সম্ভব নয়।
পানি উন্নয়ন বোর্ড জাতীয়তাবাদী শ্রমিক দলের দাবি-দাওয়ার প্রতি নিজের এবং তার দলের সমর্থনের কথাও ব্যক্ত করেন বিএনপি মহাসচিব।

অনুষ্ঠান শেষে মঞ্জুরুল ইসলাম মঞ্জুকে সভাপতি ও হুমায়ুন কবিরকে সাধারণ সম্পাদক করে নতুন কমিটি ঘোষণা করা হয়। বিএনপি মহাসচিব এ শ্রমিক ইউনিয়নের দাবি-দাওয়ার প্রতি তার পূর্ণ সমর্থনের কথা জানান।

পানি উন্নয়ন বোর্ড জাতীয়তাবাদী শ্রমিক কর্মচারী ইউনিয়নের সভাপতি মঞ্জুরুল ইসলাম মঞ্জুর সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক সাধারণ সম্পাদক হুমায়ুন কবিরের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে শ্রমিক দলের প্রধান সমন্বয়কারী শামছুর রহমান শিমুল বিশ্বাস, শ্রম সংস্কার কমিশনের প্রধান সৈয়দ সুলতান উদ্দিন আহমদ, শ্রমিক দলের সভাপতি আনোয়ার হোসাইন, সাধারণ সম্পাদক নুরুল ইসলাম নাসিম, পানি উন্নয়ন বোর্ডের মোস্তফা খান, আইয়ুব আলী, আবু সালেহ মো. তোফায়েল চৌধুরী, ফরিদ উদ্দিন খান, মাহমুদুল করীম, মাহবুবুল হক রিপন, বিদ্যু শ্রমিক ইউনিয়নের আবুল কালাম আজাদ, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ শ্রমিক দলের সুমন ভূঁইয়া, উত্তরের কামরুজ্জামান প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।