নিজস্ব প্রতিবেদক :
জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহ-সভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ বলেন, রাষ্ট্র সংস্কারের উদ্যোগ অন্তর্বর্তী সরকার পক্ষ থেকে নেওয়া হলেও, প্রকৃতপক্ষে এই দাবি জনগণের।
শনিবার (১২ এপ্রিল) জাতীয় সংসদ ভবন এলাকায় এমপি হোস্টেলে ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে বাংলাদেশ জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জাসদ) আলোচনায় তিনি এ কথা বলেন।
সংলাপে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহ-সভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ ছাড়াও সদস্য হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সফর রাজ হোসেন, বিচারপতি এমদাদুল হক, ড. ইফতেখারুজ্জামান, ড. বদিউল আলম মজুমদার এবং প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মনির হায়দার।
বাংলাদেশ জাসদের সাধারণ সম্পাদক নাজমুল হক প্রধানের নেতৃত্বে ১০ সদস্যের প্রতিনিধিদলে আলোচনায় আরো অংশগ্রহণ করেন ইন্দু নন্দ দত্ত, ডা. মুশতাক হোসেন, এটিএম মহব্বত আলী প্রমুখ।
অধ্যাপক আলী রীয়াজ বলেন, রাষ্ট্র সংস্কারের উদ্যোগ অন্তর্বর্তী সরকার পক্ষ থেকে নেওয়া হলেও, এই দাবি প্রকৃতপক্ষে জনগণের। রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে প্রাথমিক পর্যায়ের আলোচনা মে মাসের মাঝামাঝি সময়ে শেষ করতে চায় কমিশন। এরপর দ্বিতীয় পর্যায়ের আলোচনা শুরু হবে। এই প্রক্রিয়ার মাধ্যমে ঐকমত্য কমিশন রাষ্ট্র সংস্কারের একটি সুনির্দিষ্ট পথ খুঁজে বের করতে পারবে।
তিনি বলেন, আমরা সকলেই একমত, এখানে (দেশে) রাষ্ট্র সংস্কার জরুরি। এ উদ্যোগ অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের পক্ষ থেকে নেওয়া হলেও এ দাবি জনগণের, দীর্ঘদিন ধরে তারা গণতান্ত্রিক সংগ্রামে আছে, সেখানে বাংলাদেশ জাসদের ভূমিকাও রয়েছে। আপনরা সবসময় বলে আসছেন সংস্কারের জন্য। আমরা সেই আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন দেখতে পেয়েছি সমস্ত সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদনে।
ইতোমধ্যে ছয়টি রাজনৈতিক দলের সংলাপ করার কথা জানিয়ে অধ্যাপক আলী রীয়াজ বলেন, আমরা আলোচনা অব্যাহত রাখব। আশা করছি, প্রাথমিক পর্যায়ের আলোচনা মে মাসের মাঝামাঝি সময়ের মধ্যে শেষ করতে পারব। পরবর্তী পর্যায়ে ও ধাপে অন্যান্য এবং যে সমস্ত রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আরও বেশি আলোচনা প্রয়োজন বিভিন্ন বিষয়ে, সেগুলো আমরা করব।
সংলাপে রাজনৈতিক দলগুলোর বক্তব্যের মাধ্যমে পরস্পরকে বোঝার চেষ্টা করা হচ্ছে মন্তব্য করে আলী রীয়াজ বলেন, পরস্পরের মত বিনিময় করব। আমরা আশা করি, বেশ কিছু বিষয়ে একমত হতে পারব।
সংস্কার বিষয়ে জাতীয় ঐকমত্য গঠনের উদ্দেশে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সভাপতিত্বে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন গঠিত হয়েছে। গত ১৫ ফেব্রুয়ারি এই কমিশনের কার্যক্রম শুরু হয়।
উল্লেখ্য, প্রথম পর্যায়ে গঠিত সংস্কার কমিশনগুলোর মধ্যে সংবিধান সংস্কার কমিশন, জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশন, নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশন, বিচার বিভাগ সংস্কার কমিশন এবং দুর্নীতি দমন কমিশন সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদনে উল্লেখিত গুরুত্বপূর্ণ সুপারিশগুলোর ওপর রাজনৈতিক দলের সুনির্দিষ্ট মতামত জানাতে অনুরোধ করে সুপারিশগুলোর স্প্রেডশিট আকারে ৩৯টি রাজনৈতিক দলের কাছে পাঠানো হয়। এ পর্যন্ত ৩২টি রাজনৈতিক দলের কাছ থেকে কমিশন মতামত পেয়েছে।
সংস্কার কমিশনগুলোর করা সুপারিশ চূড়ান্ত করতে গত ২০ মার্চ থেকে আনুষ্ঠানিক আলোচনা শুরু করে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন। ইতোমধ্যে কমিশন সাতটি রাজনৈতিক দলের সঙ্গে প্রাথমিক পর্যায়ের আলোচনা শেষ করেছে।