নিজস্ব প্রতিবেদক :
অ্যাটর্নি জেনারেল অ্যাডভোকেট মো. আসাদুজ্জামান বলেন, আমরা মনে করি আবরার ফাহাদের বাবা ন্যায়-বিচার পেয়েছেন। গোটা জাতি ন্যায়-বিচার পেয়েছে। একটি দেশে শৃঙ্খলা আনার জন্যে, ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার জন্যে যেমন রায় দরকার ছিলো ঠিক তেমনই হয়েছে।
রোববার (১৬ মার্চ) বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদ হত্যা মামলার রায় ঘোষণা শেষে গণমাধ্যমকে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, রায়ে রাষ্ট্রপক্ষ হিসেবে আমরা সন্তুষ্ট। আমরা মনে করি আবরার ফাহাদের বাবা ন্যায়বিচার পেয়েছেন। দেশের মানুষের মাঝে ন্যায়বিচারের বার্তা গেছে। এ ধরনের রায়ের মধ্য দিয়ে রাষ্ট্র ও সমাজব্যবস্থায় ডিসিপ্লিন আনার জন্য, ন্যায়বিচার নিশ্চিত করার জন্য বিচার বিভাগের যে ধারণা, সেটা প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।
অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, ২০ জনের ফাঁসি এবং ৫ জনের যাবজ্জীবন বহাল রয়েছে উচ্চ আদালতে। ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত চার আসামি পলাতক রয়েছেন। উচ্চ আদালতে আদেশ বহাল থাকায় গোটা জাতি ন্যায়বিচার পেয়েছে।
আবরার ফাহাদের রায়ের মধ্য দিয়ে সমাজে কি বার্তা পৌঁছাল প্রশ্নে অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, নিম্ন আদালতের রায় হাইকোর্ট বহাল রেখেছে। অপরাধী যত বড় শক্তিশালী ও ক্ষমতাবান হোক না কেন তাকে বিচারের সম্মুখীন হতে হবে। এই রায়ের মাধ্যমে অপরাধীদের টনক নড়বে আশা করি।
তিনি বলেন, নিম্ন আদালত তার রায়ে যে ফাইন্ডিংস দিয়েছেন, সেটাতে হস্তক্ষেপ করার মতো কিছু পাননি আদালত। আবরার ফাহাদ হত্যা মামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত চারজন আসামি পলাতক রয়েছেন। এই রায়ের বিরুদ্ধে অবশ্যই আপিল হবে। আসামিরা অধিকার অনুযায়ী আপিলের সুযোগ পাবেন। তারপরে দণ্ড কার্যকরের বিষয় দেখা যাবে।
মো. আসাদুজ্জামান বলেন, আবরার ফাহাদ তার জীবন দিয়ে অসংখ্য শিক্ষার্থীর জীবন রক্ষা করে গেছে। আশাকরি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে এ ধরনের নিশৃংস হত্যাকাণ্ড আর হবে না। অপরাধীরা অপরাধ করার আগে অন্তত এই রায় দেখে চিন্তা করবে।
তিনি বলেন, আপনি যত শক্তিশালী হোন না কেন, পেছনে যেই থাকুক না কেন, সত্য প্রতিষ্ঠিত হবে। আবরারের মৃত্যু পাহাড়ের মতো ভারী হয়ে আছে।
অ্যাডভোকেট মো. আসাদুজ্জামান বলেন, ফ্যাসিবাদ যত শক্তিশালী হোক না কেন, তা দুমড়েমুচড়ে দেওয়ার বার্তা দিয়ে গেছেন আবরার ফাহাদ। তার মৃত্যুর মধ্যে দিয়ে বাংলাদেশের মেধাবী ছাত্ররা নতুন জীবন পেয়েছেন।
এর আগের, আজ দুপুরে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদ হত্যা মামলায় ২০ জনের মৃত্যুদণ্ডের আদেশ বহাল রেখেছেন হাইকোর্ট। এ ছাড়া, ৫ জনের যাবজ্জীবন বহাল রাখা হয়েছে। বিচারপতি এ কে এম আসাদুজ্জামান ও বিচারপতি সৈয়দ এনায়েত হোসেনের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রায় ঘোষণা করেন।
হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার দায়ে ২০২১ সালের ৮ ডিসেম্বর বুয়েটের ২০ শিক্ষার্থীকে মৃত্যুদণ্ড দেন আদালত। এ মামলায় আরও পাঁচ শিক্ষার্থীকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। নিম্ন আদালতের রায় খতিয়ে দেখতে ডেথ রেফারেন্স হিসেবে ২০২২ সালের ৬ জানুয়ারি মামলার নথি হাইকোর্টে পৌঁছায়। গত বছরের ২৮ নভেম্বর হাইকোর্ট বেঞ্চে এ বিষয়ে শুনানি শুরু হয়।
এর আগে, ২০১৯ সালের ৭ অক্টোবর রাতে বুয়েটের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র আবরার ফাহাদকে ছাত্রলীগের একদল নেতাকর্মী পিটিয়ে হত্যা করেন।