রাজশাহী জেলা প্রতিনিধি :
রাজশাহী থেকে ঢাকাগামী যাত্রীবাহী বাস চলাচল বন্ধ করে দিয়েছেন শ্রমিকরা। বাসের চালক, সুপারভাইজার ও সহকারীর বেতন বৃদ্ধির দাবিতে এই বাস চলাচল বন্ধ আছে। এতে ভোগান্তিতে পড়েছেন সাধারণ যাত্রীরা। তবে শুধুমাত্র একতা বাস চলাচল স্বাভাবিক রয়েছে।
রোববার (৭ সেপ্টেম্বর) রাত ৯টা থেকে এ কর্মসূচি শুরু হয়।
শ্রমিকদের অভিযোগ, প্রায় ১০ বছর ধরে একই হারে বেতন দেওয়া হচ্ছে। প্রতি ট্রিপে চালক পান ১১০০ টাকা, সুপারভাইজার ৫০০ টাকা এবং সহকারী মাত্র ৪০০ টাকা। কোনো কোনো পরিবহনে চালকদের দেওয়া হয় ১২০০ টাকা। শ্রমিকরা এই বেতন বাড়িয়ে অন্তত দুই হাজার টাকা করার দাবি তুলেছেন।
তাদের দাবি, ড্রাইভারকে ২ হাজার, হেলপারের বেতন এক হাজার ও সুপারভাইজারের বেতন ১১০০ টাকা করতে হবে। সেই সঙ্গে কানসাট চাঁপাইনবাবগঞ্জ গেলে সেটি আরও বাড়াতে হবে।
ন্যাশনাল ট্রাভেলসের চালক আলী হোসেন জাানন, ১০ বছর থেকে আমাদের ১১০০ টাকা করে বেতন দেয়া হচ্ছে। এর আগে আমরা গত ২৩ আগস্ট শুধু ন্যাশনাল ট্রাভেলস বন্ধ রেখেছিলাম। সে সময় কর্তৃপক্ষ দুইদিনের মধ্যে আমাদের বেতন বৃদ্ধির আশ্বাস দিলে আবারও বাস চালু করা হয়। কিন্তু দুই সপ্তাহ পার হয়ে গেলেও আগের বেতন দেয়া হচ্ছে। তাই অন্য সব বাসের শ্রমিকরা আমাদের সঙ্গে একাত্মতা ঘোষণা করে একতা ট্রান্সপোর্ট বাদে সব বাস বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। বেতন বৃদ্ধি না হওয়া পর্যন্ত বাস চলাচল বন্ধ থাকবে।
এদিকে বাস বন্ধ হয়ে যাওয়ায় যাত্রীদের চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। অনেকেই বাধ্য হয়ে বিকল্প পরিবহন ব্যবহার করছেন।
ঢাকাগামী যাত্রী আব্দুল করিম বলেন, রাতেই জরুরি কাজে ঢাকায় যেতে হতো। কিন্তু বাস বন্ধ থাকায় বিপাকে পড়েছি। বিকল্প গাড়ির ভাড়া দ্বিগুণ, সেটাও ঠিকমতো পাওয়া যাচ্ছে না। যাত্রীদের এমন হয়রানি না করেও আন্দোলন করা যেত। তাহলে আমাদের ভোগান্তিতে পড়তে হতো না।
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী তানজিলা হক বলেন, পরীক্ষার জন্য ঢাকায় যেতে হবে। কিন্তু বাস না থাকায় খুব দুশ্চিন্তায় আছি। ট্রেনের টিকিট আগেই শেষ হয়ে গেছে। এখন লোকাল বাসই ভরসা। তবে শেষ পর্যন্ত কতক্ষণে যেতে পারবো সেটা জানি না।
যাত্রী সুমাইয়া আক্তার বলেন, হঠাৎ করে এভাবে বাস বন্ধ করলে আমরা যাত্রীরা ভোগান্তিতে পড়ি। শ্রমিকদের দাবি মানা উচিত, কিন্তু যাত্রীদের কষ্টও কমানো দরকার।
রাজশাহী জেলা মোটর শ্রমিক ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক রফিকুল ইসলাম পাখি বলেন, শ্রমিকদের দাবি যৌক্তিক। এর আগে মালিকরা মাত্র ১০০ টাকা বাড়াতে রাজি হয়েছিল। কিন্তু শ্রমিকরা তা মানছে না। আমরা আবারও মালিকদের সঙ্গে বসে সমাধানের চেষ্টা করব।
এ বিষয়ে জানতে রাজশাহী সড়ক পরিবহন গ্রুপের সাধারণ সম্পাদক নজরুল ইসলাম হেলালের মোবাইলে যোগাযোগ করা হলে বলেন, আমি ভারতে আছি। গাড়ি বন্ধ হয়েছে শুনেছি। তবে কী কারণে সেটি বলতে পারব না।