Dhaka বুধবার, ১৫ অক্টোবর ২০২৫, ২৯ আশ্বিন ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

রাজনৈতিক ভুলে ফ্যাসিস্টদের কবলে পড়া যাবে না : মির্জা ফখরুল

ঠাকুরগাঁও জেলা প্রতিনিধি : 

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, সামনে সতর্কতার সঙ্গে পা ফেলতে হবে। রাজনৈতিক ভুলে ফ্যাসিস্টদের কবলে পড়া যাবে না। আর ফ্যাসিস্ট দেখতে চাই না।

মঙ্গলবার (১৪ অক্টোবর) দুপুরে ঠাকুরগাঁও জেলা শিল্পকলা একাডেমির হলরুমে সদর উপজেলা ও রুহিয়া থানা বিএনপির বর্ধিত সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।

তিনি বলেন, দেশের মানুষ নির্বাচন চায়। তাদের প্রতিনিধি নির্বাচিত করে তাদের সরকার প্রতিষ্ঠা করতে চায়। যার মাধ্যমে গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র গঠন হবে। যারা ফ্যাসিস্ট বিরোধী ও গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনার আন্দোলনে ছিলেন, তাদের কেউ কেউ ভিন্নমত দিচ্ছেন। রাজপথে আন্দোলন করছেন যেসব দাবিতে, সেই দাবি নির্বাচিত পার্লামেন্টে সমাধান করতে হবে।

মির্জা ফখরুল বলেন, গণতন্ত্রের বিকল্প শুধুই গণতন্ত্র। গণভোটের বিষয়ে বিএনপি তাদের মতামত দিয়েছে। বিএনপির মত জাতীয় নির্বাচনের দিন হতে পারে গণভোট।

তিনি বলেন, নির্বাচন যত দ্রুত হবে দেশের সংকট তত দ্রুত কাটবে। দেশে গণতন্ত্রের বিকল্প নেই। গণতন্ত্রই গণতন্ত্রের বিকল্প। আগামী নির্বাচনের ওপর দেশের রাজনৈতিক-অর্থনৈতিক ভবিষ্যৎ নির্ভর করছে। নির্বাচনের মাধ্যমে রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক সংকট মোকাবিলা করা সম্ভব হবে।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, দানবীয় দুঃশাসনের পর ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে একটা গণতন্ত্র ফিরে এসেছে। অনেকে নির্যাতনের স্বীকার হয়েছেন। মিথ্যা মামলায় জেলে গেছেন। এখন মুক্তভাবে নিশ্বাস নিতে পারি। নেতাকর্মীরা রাতে নিশ্চিন্তে ঘুমাতে পারেন। যারা এ গণঅভ্যুত্থানে যোগ দিয়েছেন সবার প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি।

বিগত সরকারের শাসন আমলের কথা স্মরণ করে মির্জা ফখরুল বলেন, বিএনপি সবচেয়ে বেশি নির্যাতিত হয়েছে। ৬ বছর বেগম জিয়া কারাভোগ করেছেন। গুম, খুন, নির্যাতন হয়েছে। তারেক রহমান মিথ্যা মামলায় নির্বাসিত জীবনযাপন করছেন। তিনি ফিরতে পারেননি এখনো।

বিএনপি সবচেয়ে বেশি নির্যাতিত দল উল্লেখ করে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া ছয় বছর কারাভোগ করেছেন। আমাদের নেতাকর্মীদের ওপর গুম-খুন-নির্যাতন হয়েছে। তারেক রহমানকে মিথ্যা মামলায় নির্বাসিত জীবনযাপন করতে হচ্ছে। তিনি এখনো দেশে ফিরতে পারেননি।’

সংস্কারের বিষয়ে তিনি বলেন, বিএনপি সংস্কার চায়। শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের হাত ধরেই সংস্কারের সূচনা হয়েছে, যা এখনো চলমান।

গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের প্রতি আহ্বান জানিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, চটকদার খবর নয়, দেশের কল্যাণে কাজ করতে হবে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমও যেন দায়িত্বশীল আচরণ করে।

তিনি বলেন, ১৭ অক্টোবর রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে একটি গণতান্ত্রিক সনদে সই হবে। সাংবিধানিক সংস্কার কমিশনের যেসব বিষয়ে ঐকমত্য হয়েছে, তা সনদে অন্তর্ভুক্ত করা হবে। আর যেসব বিষয়ে একমত হয়নি, সেগুলো নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলো নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণের রায় নেবে।

তিনি বলেন, ঠাকুরগাঁওয়ে মনোনিত হওয়ার পরে কখনো জয়ী হয়েছি, কখনো পরাজিত হয়েছি, কিন্তু কখনো কাউকে ছেড়ে যাইনি। নতুন করে গণতন্ত্র ফিরে পাওয়ার যে সুযোগটা পেয়েছি, সেটা যেন ভুলবশত না হারাই। ফ্যাসিস্টদের কবলে যেন আর না পড়ি। ফ্যাসিস্টদের মানুষ আর দেখতে চায় না।

এ সময় ঠাকুরগাঁও জেলা বিএনপির সভাপতি মির্জা ফয়সল আমিন, সাধারণ সম্পাদক পয়গাম আলী, পৌর বিএনপির সভাপতি শরিফুল ইসলাম শরিফসহ রুহিয়া ও সদর বিএনপির নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

রাকিবের গোলে হংকংয়ের বিপক্ষে ড্র করল বাংলাদেশ

রাজনৈতিক ভুলে ফ্যাসিস্টদের কবলে পড়া যাবে না : মির্জা ফখরুল

প্রকাশের সময় : ০৮:৫৮:০৩ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৪ অক্টোবর ২০২৫

ঠাকুরগাঁও জেলা প্রতিনিধি : 

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, সামনে সতর্কতার সঙ্গে পা ফেলতে হবে। রাজনৈতিক ভুলে ফ্যাসিস্টদের কবলে পড়া যাবে না। আর ফ্যাসিস্ট দেখতে চাই না।

মঙ্গলবার (১৪ অক্টোবর) দুপুরে ঠাকুরগাঁও জেলা শিল্পকলা একাডেমির হলরুমে সদর উপজেলা ও রুহিয়া থানা বিএনপির বর্ধিত সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।

তিনি বলেন, দেশের মানুষ নির্বাচন চায়। তাদের প্রতিনিধি নির্বাচিত করে তাদের সরকার প্রতিষ্ঠা করতে চায়। যার মাধ্যমে গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র গঠন হবে। যারা ফ্যাসিস্ট বিরোধী ও গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনার আন্দোলনে ছিলেন, তাদের কেউ কেউ ভিন্নমত দিচ্ছেন। রাজপথে আন্দোলন করছেন যেসব দাবিতে, সেই দাবি নির্বাচিত পার্লামেন্টে সমাধান করতে হবে।

মির্জা ফখরুল বলেন, গণতন্ত্রের বিকল্প শুধুই গণতন্ত্র। গণভোটের বিষয়ে বিএনপি তাদের মতামত দিয়েছে। বিএনপির মত জাতীয় নির্বাচনের দিন হতে পারে গণভোট।

তিনি বলেন, নির্বাচন যত দ্রুত হবে দেশের সংকট তত দ্রুত কাটবে। দেশে গণতন্ত্রের বিকল্প নেই। গণতন্ত্রই গণতন্ত্রের বিকল্প। আগামী নির্বাচনের ওপর দেশের রাজনৈতিক-অর্থনৈতিক ভবিষ্যৎ নির্ভর করছে। নির্বাচনের মাধ্যমে রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক সংকট মোকাবিলা করা সম্ভব হবে।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, দানবীয় দুঃশাসনের পর ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে একটা গণতন্ত্র ফিরে এসেছে। অনেকে নির্যাতনের স্বীকার হয়েছেন। মিথ্যা মামলায় জেলে গেছেন। এখন মুক্তভাবে নিশ্বাস নিতে পারি। নেতাকর্মীরা রাতে নিশ্চিন্তে ঘুমাতে পারেন। যারা এ গণঅভ্যুত্থানে যোগ দিয়েছেন সবার প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি।

বিগত সরকারের শাসন আমলের কথা স্মরণ করে মির্জা ফখরুল বলেন, বিএনপি সবচেয়ে বেশি নির্যাতিত হয়েছে। ৬ বছর বেগম জিয়া কারাভোগ করেছেন। গুম, খুন, নির্যাতন হয়েছে। তারেক রহমান মিথ্যা মামলায় নির্বাসিত জীবনযাপন করছেন। তিনি ফিরতে পারেননি এখনো।

বিএনপি সবচেয়ে বেশি নির্যাতিত দল উল্লেখ করে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া ছয় বছর কারাভোগ করেছেন। আমাদের নেতাকর্মীদের ওপর গুম-খুন-নির্যাতন হয়েছে। তারেক রহমানকে মিথ্যা মামলায় নির্বাসিত জীবনযাপন করতে হচ্ছে। তিনি এখনো দেশে ফিরতে পারেননি।’

সংস্কারের বিষয়ে তিনি বলেন, বিএনপি সংস্কার চায়। শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের হাত ধরেই সংস্কারের সূচনা হয়েছে, যা এখনো চলমান।

গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের প্রতি আহ্বান জানিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, চটকদার খবর নয়, দেশের কল্যাণে কাজ করতে হবে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমও যেন দায়িত্বশীল আচরণ করে।

তিনি বলেন, ১৭ অক্টোবর রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে একটি গণতান্ত্রিক সনদে সই হবে। সাংবিধানিক সংস্কার কমিশনের যেসব বিষয়ে ঐকমত্য হয়েছে, তা সনদে অন্তর্ভুক্ত করা হবে। আর যেসব বিষয়ে একমত হয়নি, সেগুলো নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলো নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণের রায় নেবে।

তিনি বলেন, ঠাকুরগাঁওয়ে মনোনিত হওয়ার পরে কখনো জয়ী হয়েছি, কখনো পরাজিত হয়েছি, কিন্তু কখনো কাউকে ছেড়ে যাইনি। নতুন করে গণতন্ত্র ফিরে পাওয়ার যে সুযোগটা পেয়েছি, সেটা যেন ভুলবশত না হারাই। ফ্যাসিস্টদের কবলে যেন আর না পড়ি। ফ্যাসিস্টদের মানুষ আর দেখতে চায় না।

এ সময় ঠাকুরগাঁও জেলা বিএনপির সভাপতি মির্জা ফয়সল আমিন, সাধারণ সম্পাদক পয়গাম আলী, পৌর বিএনপির সভাপতি শরিফুল ইসলাম শরিফসহ রুহিয়া ও সদর বিএনপির নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।