নিজস্ব প্রতিবেদক :
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনকে ঘিরে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রার্থীদের অ্যাকাউন্টে সাইবার হামলার অভিযোগ উঠেছে। এ বিষয়ে ছাত্রদল মনোনীত ভিপি পদপ্রার্থী আবিদুল ইসলাম খান অভিযোগ করে বলেছেন, রাজনৈতিকভাবে মোকাবেলা করতে না পেরে সাইবার হামলা, সাইবার বুলিংয়ের পথ বেছে নিয়েছে।
সোমবার (৮ সেপ্টেম্বর) দুপুরে সাইবার আক্রমণ (সাইবার অ্যাটাক) প্রসঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের মধুর ক্যান্টিনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
আবিদুল ইসলাম খান বলেন, আজ সকালে ঘুম থেকে উঠে দেখি আমার ভেরিফায়েড আইডি নাই হয়ে গেছে। প্রমাণাদি দিয়ে প্রাথমিকভাবে ফিরে পেলেও একটি পোস্ট করার পর আবারও ডিজেবল করে দেওয়া হয়েছে। নির্বাচনের আগে আদৌ আইডি ফিরে পাব কি না জানি না। অথচ এই আইডিতে আমি নির্বাচনী প্রচারণা চালাতাম, যেখানে প্রচুর রিচ হতো। রাজনৈতিকভাবে মোকাবিলায় ব্যর্থ হয়ে আমাদের ওপর সাইবার আক্রমণ চালানো হচ্ছে।
সংবাদ সম্মেলনে তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, আমার আইডি ডিজেবল করে দেয়া হয়েছে। ফেসবুক কর্তৃপক্ষের কাছে আপিল করে রেখেছি। জানি না কখনো আমার এই আইডিটা আমি আবার ফিরে পাব কিনা। আমরা আমাদের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের আইডিগুলোতে প্রচার কার্যক্রম চালাতাম। সেগুলো প্রচুর রিচ হচ্ছিল।
তিনি আরো বলেন, আজকের এই প্রেস ব্রিফিং একেবারেই অনাকাঙ্ক্ষিত ছিল। আমাদের নির্বাচন নিয়ে ব্যস্ত থাকার কথা ছিল। কিন্তু যারা রাজনৈতিকভাবে মোকাবেলা করতে না পেরে সাইবার অ্যাটাক, সাইবার বুলিংয়ের পথ বেছে নিয়েছে, মঙ্গলবার (৯ সেপ্টেম্বর) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা তাদেরকে ব্যালটে জবাব দেবে বলে আমরা বিশ্বাস করি।
আবিদুল ইসলাম খান বলেন, রাজনৈতিকভাবে মোকাবিলা করতে ব্যর্থ হয়ে সাইবার অ্যাটাক করে ডিজেবল করা হয়েছে। ৫ আগস্টের পরে এমন ঘটনা বেদনাদায়ক।
শিক্ষার্থীদের আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, দীর্ঘ পর্যায়ের মধ্যে দিয়ে আমরা আজ এই পর্যায়ে এসে দাঁড়িয়েছি। জীবনে কখনও শিক্ষার্থী ও বাংলাদেশের স্বাধীনতা রক্ষার্থে কখনও আপস করিনি। মিথ্যার শক্তিতে কেউ বিভ্রান্ত হবেন না, সত্যের জয় নিশ্চিত। প্রতিকূল পরিবেশসহ আগামীকাল যাই থাকুক আপনারা ভোটের মাধ্যমে তার জবাব দিবেন।
তিনি আরো বলেন, ঝড় থাকুক, বৃষ্টি থাকুক, প্রতিকূল আবহাওয়া থাকুক মঙ্গলবার (৯ সেপ্টেম্বর) সকল অপপ্রচারকারীদের জবাব ব্যালটের মাধ্যমে দিতে হবে। হয়তো আমাদের আইডি দিয়ে আর প্রচারণা চালানো যাবে না, কিন্তু আপনারাই ব্যালটের মাধ্যমে আমাদের কণ্ঠস্বর হবেন।
প্যানেলের সাধারণ সম্পাদক (জিএস) প্রার্থী তানভীর বারী হামিম অভিযোগ করে বলেন, আমাদের তিনজনের আইডিতে সাইবার আক্রমণ চালানো হয়েছে। এর পেছনে সুস্পষ্টভাবে পরাজয়ের আশঙ্কা কাজ করছে। আজ আইডি গায়েব হচ্ছে, কাল নির্বাচিত হলে তারা ৪০ হাজার শিক্ষার্থীর আইডি ডিজেবল করে দেবে। আগে মানুষ গুম করা হতো, এখন হচ্ছে সাইবার গুম। আমি শিক্ষার্থীদের আহ্বান জানাব– যারা সাইবার আক্রমণ চালাচ্ছে, মঙ্গলবার (৯ সেপ্টেম্বর) ব্যালট অ্যাটাকের মাধ্যমে তাদের বিরুদ্ধে জবাব দিন।
তিনি বলেন, পূর্বে রাষ্ট্রের পক্ষে দেশপ্রেমিকতার সঙ্গে যারা কথা বলেছে, তাদের গুম করা হতো। আর এখন যারা দেশপ্রেমিকতার পক্ষে কথা বলেন, দেশের পক্ষে কথা বলেন, তাদের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমগুলো সাইবার আক্রমণের মাধ্যমে বন্ধ করে দেওয়া হচ্ছে। এই দুটোই সমান অপরাধ। এই প্র্যাকটিস বা অনুশীলনটি শুরু হয়েছে গত ১৭ বছর ধরে আওয়ামী ছাত্রলীগের সঙ্গে মিশে থাকা একটি গোষ্ঠীর মাধ্যমে। এটাই আমাদের বিশ্বাস।