Dhaka শুক্রবার, ১৫ অগাস্ট ২০২৫, ৩০ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

রমজানে স্কুল খোলা থাকবে : আপিল বিভাগ

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

রমজান মাসে প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্কুল খোলা রাখার সিদ্ধান্ত স্থগিত করে হাইকোর্টের দেওয়া আদেশ স্থগিত করেছেন আপিল বিভাগ। এ আদেশের ফলে রমজানে প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্কুল খোলা রাখতে বাধা নেই বলে জানিয়েছেন আইনজীবীরা।

মঙ্গলবার (১২ মার্চ) দুপুর ১২টার দিকে প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের নেতৃত্বে আপিল বেঞ্চ এ আদেশ দেন।

আদালতে আজ রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল আবু মোহাম্মদ (এ এম) আমিন উদ্দিন। অন্যদিকে রিট আবেদনকারীর পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী এ কে এম ফয়েজ।

শুনানিতে এ কে এম ফয়েজ বলেন, রমজান মাস পবিত্র মাস। করোনার সময় দুই বছর সব প্রতিষ্ঠান বন্ধ ছিল। রমজানে ১০-১৫ দিন স্কুল বন্ধ রাখলে পড়ালেখার কোনো ক্ষতি হবে না। বরং খোলা রাখলে যানজটের সৃষ্টি হবে, অভিভাবকরা সমস্যায় পড়বেন। এ ছাড়া স্কুল বন্ধ রাখতে অভিভাবকরা বিভিন্ন জায়গায় মানববন্ধন করে যাচ্ছেন।

শুনানিতে অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন বলেন, স্কুল খোলা রাখা সরকারের পলিসির বিষয়। হাইকোর্ট এখানে হস্তক্ষেপ করতে পারে না।

এর আগে এক অভিভাবকের করা এ সংক্রান্ত এক রিটের প্রাথমিক শুনানি শেষে রোববার (১০ মার্চ) বিচারপতি কে এম কামরুল কাদের ও বিচারপতি খিজির হায়াতের হাইকোর্ট বেঞ্চ রুলসহ স্থগিতাদেশ দেন।

ওইদিন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী এ কে এম ফয়েজ জানান, রমজানে প্রাথমিক স্কুল ১০ দিন ও হাইস্কুল ১৫ দিন খোলা রেখে সরকারের সিদ্ধান্ত দুই মাসের জন্য স্থগিত করেছেন হাইকোর্ট। একইসঙ্গে হাইকোর্ট রুলও জারি করেছেন।

এ আদেশ স্থগিত চেয়ে সোমবার (১১ মার্চ) আপিল বিভাগে আবেদন করে রাষ্ট্রপক্ষ।

সোমবার হাইকোর্টের আদেশের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষের এ আবেদন মঙ্গলবার আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চে শুনানির জন্য ধার্য করে দেন চেম্বার বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম।

গত ৮ ফেব্রুয়ারি ছুটির তালিকা ও শিক্ষাপঞ্জিকা আংশিক সংশোধন করে রমজানে ১৫ দিন মাধ্যমিক পর্যায়ের স্কুল খোলা রাখার সিদ্ধান্ত জানায় শিক্ষা মন্ত্রণালয়। আর প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় রমজানে ১০ দিন ক্লাস চালু রাখার সিদ্ধান্ত নেয়। সরকারের এই বিজ্ঞপ্তি দুটি চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে রিট করেন এক শিক্ষার্থীর অভিভাবক।

ওই রিট আবেদনের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে গত ১০ মার্চ বিচারপতি কে এম কামরুল কাদের ও বিচারপতি খিজির হায়াতের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ রমজানজুড়ে প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্কুল খোলা রাখার সিদ্ধান্ত স্থগিত করেন। ওই দিন আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট মাহমুদা খানম। অন্যদিকে রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল শেখ মো. সাইফুজ্জামান।

পরে হাইকোর্টের আদেশ স্থগিতত চেয়ে চেম্বার জজ আদালতে আবেদন জানায় রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীরা। তবে আবেদনটি শুনানির জন্য আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চে পাঠানো হয়।

মঙ্গলবার (১২ মার্চ) ছিল রমজানের প্রথম দিন। এ বিষয়ে আগে থেকে সিদ্ধান্ত না থাকায় দ্বিধাদ্বন্দ্বের মধ্যে পড়েন রাজধানীসহ সারা দেশের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর সংশ্লিষ্টরা। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর নিয়ন্ত্রণকারী সংস্থা মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদফতর, কারিগরি শিক্ষা অধিদফতর, মাদ্রাসা শিক্ষা অধিদফতর এবং প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতর থেকেও তাদের কোনও নির্দেশনা দেওয়া হয়নি।

এই অবস্থায় অনিশ্চয়তার মধ্যে রাজধানীর অনেক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান নিজেরাই বন্ধ ঘোষণা করেছে। আবার অনেক প্রতিষ্ঠান এখনও সিদ্ধান্ত নিতে পারেনি, স্কুল খোলা রেখেছে। অনেক প্রতিষ্ঠান থেকে বাংলা ট্রিবিউনকে ফোন করে জানতে চেয়েছে, ক্লাস হবে নাকি বন্ধ থাকবে। আজ এই আদেশের ফলে এই দ্বিধার অবসান ঘটলো।

এদিকে আপিল বিভাগের এই আদেশের পর প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় এক বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে, সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলো ১০ রমজান পর্যন্ত খোলা থাকবে।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

আমতলী-তালতলী আঞ্চলিক সড়ক বেহাল, দুর্ভোগে স্থানীয়রা

রমজানে স্কুল খোলা থাকবে : আপিল বিভাগ

প্রকাশের সময় : ০১:০৭:৫৩ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১২ মার্চ ২০২৪

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

রমজান মাসে প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্কুল খোলা রাখার সিদ্ধান্ত স্থগিত করে হাইকোর্টের দেওয়া আদেশ স্থগিত করেছেন আপিল বিভাগ। এ আদেশের ফলে রমজানে প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্কুল খোলা রাখতে বাধা নেই বলে জানিয়েছেন আইনজীবীরা।

মঙ্গলবার (১২ মার্চ) দুপুর ১২টার দিকে প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের নেতৃত্বে আপিল বেঞ্চ এ আদেশ দেন।

আদালতে আজ রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল আবু মোহাম্মদ (এ এম) আমিন উদ্দিন। অন্যদিকে রিট আবেদনকারীর পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী এ কে এম ফয়েজ।

শুনানিতে এ কে এম ফয়েজ বলেন, রমজান মাস পবিত্র মাস। করোনার সময় দুই বছর সব প্রতিষ্ঠান বন্ধ ছিল। রমজানে ১০-১৫ দিন স্কুল বন্ধ রাখলে পড়ালেখার কোনো ক্ষতি হবে না। বরং খোলা রাখলে যানজটের সৃষ্টি হবে, অভিভাবকরা সমস্যায় পড়বেন। এ ছাড়া স্কুল বন্ধ রাখতে অভিভাবকরা বিভিন্ন জায়গায় মানববন্ধন করে যাচ্ছেন।

শুনানিতে অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন বলেন, স্কুল খোলা রাখা সরকারের পলিসির বিষয়। হাইকোর্ট এখানে হস্তক্ষেপ করতে পারে না।

এর আগে এক অভিভাবকের করা এ সংক্রান্ত এক রিটের প্রাথমিক শুনানি শেষে রোববার (১০ মার্চ) বিচারপতি কে এম কামরুল কাদের ও বিচারপতি খিজির হায়াতের হাইকোর্ট বেঞ্চ রুলসহ স্থগিতাদেশ দেন।

ওইদিন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী এ কে এম ফয়েজ জানান, রমজানে প্রাথমিক স্কুল ১০ দিন ও হাইস্কুল ১৫ দিন খোলা রেখে সরকারের সিদ্ধান্ত দুই মাসের জন্য স্থগিত করেছেন হাইকোর্ট। একইসঙ্গে হাইকোর্ট রুলও জারি করেছেন।

এ আদেশ স্থগিত চেয়ে সোমবার (১১ মার্চ) আপিল বিভাগে আবেদন করে রাষ্ট্রপক্ষ।

সোমবার হাইকোর্টের আদেশের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষের এ আবেদন মঙ্গলবার আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চে শুনানির জন্য ধার্য করে দেন চেম্বার বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম।

গত ৮ ফেব্রুয়ারি ছুটির তালিকা ও শিক্ষাপঞ্জিকা আংশিক সংশোধন করে রমজানে ১৫ দিন মাধ্যমিক পর্যায়ের স্কুল খোলা রাখার সিদ্ধান্ত জানায় শিক্ষা মন্ত্রণালয়। আর প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় রমজানে ১০ দিন ক্লাস চালু রাখার সিদ্ধান্ত নেয়। সরকারের এই বিজ্ঞপ্তি দুটি চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে রিট করেন এক শিক্ষার্থীর অভিভাবক।

ওই রিট আবেদনের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে গত ১০ মার্চ বিচারপতি কে এম কামরুল কাদের ও বিচারপতি খিজির হায়াতের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ রমজানজুড়ে প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্কুল খোলা রাখার সিদ্ধান্ত স্থগিত করেন। ওই দিন আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট মাহমুদা খানম। অন্যদিকে রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল শেখ মো. সাইফুজ্জামান।

পরে হাইকোর্টের আদেশ স্থগিতত চেয়ে চেম্বার জজ আদালতে আবেদন জানায় রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীরা। তবে আবেদনটি শুনানির জন্য আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চে পাঠানো হয়।

মঙ্গলবার (১২ মার্চ) ছিল রমজানের প্রথম দিন। এ বিষয়ে আগে থেকে সিদ্ধান্ত না থাকায় দ্বিধাদ্বন্দ্বের মধ্যে পড়েন রাজধানীসহ সারা দেশের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর সংশ্লিষ্টরা। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর নিয়ন্ত্রণকারী সংস্থা মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদফতর, কারিগরি শিক্ষা অধিদফতর, মাদ্রাসা শিক্ষা অধিদফতর এবং প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতর থেকেও তাদের কোনও নির্দেশনা দেওয়া হয়নি।

এই অবস্থায় অনিশ্চয়তার মধ্যে রাজধানীর অনেক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান নিজেরাই বন্ধ ঘোষণা করেছে। আবার অনেক প্রতিষ্ঠান এখনও সিদ্ধান্ত নিতে পারেনি, স্কুল খোলা রেখেছে। অনেক প্রতিষ্ঠান থেকে বাংলা ট্রিবিউনকে ফোন করে জানতে চেয়েছে, ক্লাস হবে নাকি বন্ধ থাকবে। আজ এই আদেশের ফলে এই দ্বিধার অবসান ঘটলো।

এদিকে আপিল বিভাগের এই আদেশের পর প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় এক বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে, সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলো ১০ রমজান পর্যন্ত খোলা থাকবে।