নিজস্ব প্রতিবেদক :
পবিত্র মাহে রমজানের প্রথম রোজা ও জুমা। শুক্রবার (২৪ মার্চ) জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমসহ দেশের সকল মসজিদে মুসল্লিদের ঢল নেমেছে। সাদা-কালো, ধনী-গরিব, ছোট-বড় সকলের উপস্থিতিতে কানায় কানায় পূর্ণ হয়েছে মসজিগুলো।
মুসল্লিদের কাছে পবিত্র রমজান মাসের জুমার নামাজের গুরুত্ব অপরিসীম। তাই রমজানের জুমার জামাতে অন্য সময়ের চেয়ে কয়েকগুণ বেশি মুসল্লি অংশ নেন। প্রখর রোদ উপেক্ষা করেই রাজধানী অন্যতম বড় জুমা জামাতটি অনুষ্ঠিত হয় বায়তুল মোকাররম মসজিদে। নামাজ শেষে মোনাজাতে মুসল্লিরা নিজের এবং দেশের মানুষের কল্যাণ কামনা করেন।
প্রচণ্ড খরতাপ উপেক্ষা করে জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমের বিভিন্ন গেট দিয়ে মুসল্লিরা নামাজের জন্য প্রবেশ করেন। বেলা সোয়া ১২টার পর থেকেই মুসল্লিদের ঢল নামে মসজিদে। দুপুর পৌনে ১টা বাজতে না বাজতেই কানায় কানায় পূর্ণ হয় মসজিদের ভেতর বাহির প্রাঙ্গণ।
দূর-দূরান্ত থেকে নামাজ পড়তে মসজিদে ছুটে আসেন মুসল্লিরা। মসজিদের ভেতরে জায়গা না পেয়ে মুসল্লিদের রাস্তায় নামাজের জন্য দাঁড়াতে দেখা যায়। ধর্মপ্রাণ মুসল্লিরা উত্তর গেটের বাইরের সিঁড়ি ও রাস্তায় নামাজের জন্য বসেছেন।
শুধু বায়তুল মোকাররম নয়, রমজানের প্রথম জুমায় রাজধানীর মসজিদে-মসজিদে ঢল নেমেছিল মুসল্লিদের। কোথাও-কোথাও মসজিদের ভেতরে মুসল্লিদের নামাজের জায়গার সংকুলান না হওয়ায় বাইরে নামাজ পড়তে দেখা গেছে।
নামাজের আগে মসজিদে মসজিদে দেওয়া হবে বিশেষ খুতবা। বায়তুল মোকাররমে খুৎবা পেশ করবেন খতিব মুফতি রুহুল আমীন। নামাজ শেষে মুসলিম উম্মাহর শান্তি ও সমৃদ্ধি কামনা করে বিশেষ দোয়া মোনাজাত করা হবে।
জানা গেছে, জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররম ছাড়াও রাজধানীর প্রতিটি মসজিদে ছিল মুসল্লিদের উপচে পড়া ভিড়। মসজিদগুলোতে নানা বয়সী মুসল্লিদের ব্যাপক উপস্থিতি। অধিকাংশ মসজিদে জায়গা ভরে রাস্তার অনেক দূর পর্যন্ত মুসল্লিদের নামাজের কাতার লক্ষ্য করা গেছে।
মহাখালী মসজিদে গাউছুল আজম, হাইকোর্ট জামে মসজিদ, লালবাগ শাহী মসজিদ, চকবাজার শাহী মসজিদসহ রাজধানীর গুরুত্বপূর্ণ মসজিদগুলোতে মুসল্লিদের ব্যাপক সমাগম হয়েছে প্রথম জুমায়।
মুসল্লিদের নিরাপত্তা রক্ষার্থে রাজধানীর বায়তুল মোকাররম মসজিদের সামনে ও আশপাশের এলাকায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর বিপুলসংখ্যক সদস্য মোতায়েন করা হয়।
নারায়ণগঞ্জে পবিত্র মাহে রমজানের প্রথম জুমার নামাজে শহরের মাসদাইর সিটি করপোরেশন কেন্দ্রীয় জামে মসজিদ, চাষাঢ়া নূর মসজিদ, ডিআইটি মসজিদ, চাষাঢ়া রেললাইন মসজিদ, বাগে জান্নাত মসজিদসহ বিভিন্ন মসজিদে এ চিত্র দেখা গেছে।
ধর্মপ্রাণ মুসলমানেরা এদিন নামাজের আগে থেকে বয়ান শুনতে মসজিদগুলোতে উপস্থিত হন। প্রতিটি মসজিদে রমজান মাসের ইমান, আমল ও গুরুত্ব নিয়ে বিশেষ বয়ান করা হয়। নূর মসজিদ, ডিআইটি মসজিদ, রেললাইন মসজিদসহ বিভিন্ন মসজিদে নামাজের সারি মসজিদ পেরিয়ে মূল সড়কে চলে যায়।
সিটি করপোরেশন কেন্দ্রীয় জামে মসজিদে নামাজ পড়তে আসা মেহেদী হাসান বাংলানিউজকে বলেন, আজ মাহে রমজানের প্রথম জুমা। ভিড় একটু বেশি হবে জেনে আগে আগে এসেছি। এ মাসে বেশি বেশি ইবাদত করে আমরা আল্লাহর নৈকট্য লাভ করতে চাই।
সিটি করপোরেশন কেন্দ্রীয় জামে মসজিদের ইমাম বদরশাহ বলেন, আজ মুসল্লিরা আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাইতে মসজিদে এসেছেন। রমজানে আল্লাহর বিশেষ নেয়ামতের আশায় এখানে বিশেষ দোয়া ও মোনাজাত অনুষ্ঠিত হয়।
রমজান মাসেই নাজিল হয় পবিত্র কোরআন। হাদিসে আছে, এ মাসে যে কোনো ইবাদতে ১০ থেকে ৭০০ গুণ বেশি সওয়াব পাওয়া যায়। তাই মুসলমানরা এই এক মাস সিয়াম সাধনার পাশাপাশি বিশেষ ইবাদতের মাধ্যমে আল্লাহর নৈকট্য অর্জনে সচেষ্ট হন। এ মাস অশেষ রহমত, বরকত ও তাকওয়া অর্জনের অপূর্ব সুযোগ এনে দেয়। এ মাসে আত্মসংযমও আত্মশুদ্ধির মাধ্যমে নিজেকে পরিশুদ্ধ করার সুযোগ পায় ধর্মপ্রাণ মুসলমানেরা।