Dhaka রবিবার, ১৩ জুলাই ২০২৫, ২৯ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

রওশনের চেয়ারম্যান দাবি নিয়ে মুখ খুললেন জি এম কাদের

নিজস্ব প্রতিবেদক

জাতীয় পার্টির প্রধান পৃষ্ঠপোষক বেগম রওশন এরশাদের সঙ্গে কোনো দ্বন্দ্ব নেই বলে জানিয়েছেন জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান গোলাম (জিএম) মোহাম্মদ কাদের।

বুধবার (২৩ আগস্ট) সন্ধ্যা ৬টায় ভারত সফর শেষে দেশে ফিরলে শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপে এসব কথা বলেন তিনি।

তিনি বলেন, ভাবির অসুস্থতার সুযোগ নিয়ে বিভিন্ন মানুষ বিভিন্ন কাগজপত্রে সই করাচ্ছে। উনার থেকে বক্তব্য নেওয়া হচ্ছে। আমার জানামতে তিনি নিজের ইচ্ছায় এগুলো দিচ্ছেন না। এটা করার উদ্দেশ্য, জাতীয় পার্টিকে দুর্বল করা।

জি এম কাদের বলেন, বেগম রওশন এরশাদ আমার ভাবি। বড় ভাইয়ের স্ত্রী। বড় ভাইকে আমরা সবসময় বাবার মতো মনে করতাম। ছোটবেলা থেকেই ভাবিকে মায়ের মতো মনে করে এসেছি। তার সঙ্গে আমার কখনোই কোনো দ্বন্দ্ব ছিল না, এখনও নেই।

রওশন এরশাদের অসুস্থতার সুযোগ নিয়ে বিভিন্ন মানুষ বিভিন্ন কাগজপত্রে সই করাচ্ছে দাবি করে তিনি বলেন, উনার থেকে বক্তব্য নেওয়া হচ্ছে। আমার জানামতে তিনি নিজের ইচ্ছায় এগুলো দিচ্ছেন না। এটা করার উদ্দেশ্য, জাতীয় পার্টিকে দুর্বল করা। আমাদের বিরুদ্ধে কিছু লোকজন এসব করছে। দেবর ভাবির দ্বন্দ্ব যারা বলছেন তারাই এসব বিষয় উসকে দিচ্ছেন।

তিনি বলেন, কিছু লোক ইচ্ছা করে এটা করছেন। দেবর-ভাবির দ্বন্দ্ব,’ ‘আমরা একতা চাই’ ইত্যাদি যারা বলে তারাই বিভিন্নভাবে উসকে দিচ্ছেন। দলটা যাতে শক্তিশালী জায়গায় দাঁড়াতে না পারে। বাইরে যেন দলের ইমেজ সংকটে পড়ে, আমরা যেন নিচে নেমে যাই। এই উদ্দেশ্যে করা হয়।

তিনি বলেন, আমাদের একটা ভাবমূর্তির সংকট হয়, যে দলে একতা নেই, বিভাজিত, নীতির ঠিক নেই, একেকজন একেক কথা বলেন। এই ধরনের ভাগ করে আমাদের বিভ্রান্ত করা হচ্ছে। শুধু নেতাকর্মী নয় সাধারণ মানুষের মাঝে বিভ্রান্তি ছড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে। আমরা এর তীব্র নিন্দা জানাই। আমি বিশ্বাস করি উনি (রওশন এরশাদ) এটা করেননি। উনাকে দিয়ে যারা এটা করানোর চেষ্টা করেছেন তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া উচিত।

বিমানবন্দরে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে জি এম কাদের বলেন, আমি ভারত সরকারের আমন্ত্রণে সেখানে গিয়েছিলাম। সেখানে বেশ কয়েকজন গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তির সঙ্গে খোলামেলা আলোচনা হয়েছে। সেই আলোচনা কার সঙ্গে হয়েছে বা কী বিষয়ে হয়েছে এ প্রসঙ্গে বিস্তারিত বলতে পারবো না। কারণ আলাপগুলো ওইভাবেই হয়েছে। উনারা যদি কিছু প্রকাশ করতে চান করবেন, আমার পক্ষ থেকে উনাদের পারমিশন (অনুমতি) ছাড়া কিছু বলতে পারবো না। তবে দ্বিপাক্ষিক স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে।

জাপা সম্পর্কে ভারতের ভালো ধারণা আছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমার কাছে ভালো লেগেছে যে জাতীয় পার্টি সম্পর্কে উনাদের ধারণা ভালো। পার্টিকে একটা সম্ভাবনাময় দল মনে করেন তারা। উনাদের আস্থা আছে যে জাতীয় পার্টির সঙ্গে তাদের সম্পর্ক সৌহার্দ্যপূর্ণ ছিল যা সবসময় থাকবে।

জিএম কাদের বলেন, তারা এখানে একটি ভালো সুষ্ঠু নির্বাচন চায়। নির্বাচনের আগে এবং পরে যেন কোনো সহিংসতা না হয় সেটা তারা চায়। কারণ বাংলাদেশে তাদের অনেক বিনিয়োগ আছে।

জাতীয় পার্টি কি বর্তমান সংবিধানের অধীনে নির্বাচনে অংশ নেবে, এমন প্রশ্নের জবাবে জিএম কাদের বলেন, এই বিষয়ে আরও কিছুদিন পরে আমরা সিদ্ধান্ত নেব। আর নির্বাচন বর্জন করব এটা আমরা কোনো দিন বলিনি।

বাংলাদেশ ইস্যুতে আমেরিকার সঙ্গে ভারত দেনদরবার করছে বলে বিভিন্ন মিডিয়ায় খবর প্রকাশিত হয়েছে, এই বিষয়ে কোনো আলোচনা হয়েছে কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এ বিষয়ে আমি কিছু বলতে পারব না। এটা ভারত ও আমেরিকার বিষয়।

জি এম কাদের আরও বলেন, উনারা আশা প্রকাশ করেন যে, বাংলাদেশের সঙ্গে সুসম্পর্ক থাকলে, বাংলাদেশ স্থিতিশীল থাকলে, সুন্দর নির্বাচনের মাধ্যমে পরবর্তী সরকার যদি গঠিত হয় তাহলে তাদের পক্ষে এসব কাজ করা সহজ হবে। উনারা প্রত্যাশা করেন, যেন সবাই মিলে ওই ধরনের একটা পরিবেশ সৃষ্টি করেন, যাতে সুন্দর নির্বাচন হয়। নির্বাচনে যেন সহিংসতা, অরাজকতার পরিস্থিতি না হয়।

নির্বাচন নিয়ে বাংলাদেশের রাজনৈতিক দলগুলোর মতানৈক্যের বিষয়ে ভারতের ভূমিকা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ভারত বলেছে- এটা তোমাদের নিজস্ব ব্যাপার। তোমরা নিজেদের মধ্যে আলোচনা করে সুরাহা করো। তারা বলেছেন, যেহেতু আপনাদের গ্রহণযোগ্যতা আছে সবার কাছে। আপনারা মোটামুটি সবার সঙ্গে আলোচনা করে যদি সবাইকে একসঙ্গে করে একটা সুন্দর নির্বাচন করতে পারেন তাহলে আমরা খুশি হবো।

আগামী নির্বাচনে অংশগ্রহণ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এটা অনেকবার বলেছি। এই সিদ্ধান্ত নেওয়ার সময় এখনো আসেনি। কী করবো, কারো অধীনে যাবো কি না সেটা আরও কিছুদিন দেখেশুনে বলতে পারবো। তবে নির্বাচন বর্জন করবো এটা কোনো দিন বলিনি। ভোটে আসবো কি আসবো না এটা নেতাকর্মীদের মতামতের ভিত্তিতে যা হবে সেই ব্যবস্থা আমরা নেবো। তবে আমরা চাই নির্বাচন যেন ভালো হয়।

নির্বাচন নিয়ে ভারত-যুক্তরাষ্ট্রের টানাপড়েন প্রসঙ্গে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, এটা তো আমি বলতে পারবো না। ভারতীয়রা, আমেরিকানরা বলতে পারবো। আমি আউটসাইডার হিসেবে উনাদের কী আলোচনা হয়েছে সেটা আমার পক্ষে জানা সম্ভব না।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

মিটফোর্ড হত্যাকাণ্ড : আসামি টিটন গাজী ৫ দিনের রিমান্ডে

রওশনের চেয়ারম্যান দাবি নিয়ে মুখ খুললেন জি এম কাদের

প্রকাশের সময় : ১০:১৯:৪৭ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৩ অগাস্ট ২০২৩

নিজস্ব প্রতিবেদক

জাতীয় পার্টির প্রধান পৃষ্ঠপোষক বেগম রওশন এরশাদের সঙ্গে কোনো দ্বন্দ্ব নেই বলে জানিয়েছেন জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান গোলাম (জিএম) মোহাম্মদ কাদের।

বুধবার (২৩ আগস্ট) সন্ধ্যা ৬টায় ভারত সফর শেষে দেশে ফিরলে শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপে এসব কথা বলেন তিনি।

তিনি বলেন, ভাবির অসুস্থতার সুযোগ নিয়ে বিভিন্ন মানুষ বিভিন্ন কাগজপত্রে সই করাচ্ছে। উনার থেকে বক্তব্য নেওয়া হচ্ছে। আমার জানামতে তিনি নিজের ইচ্ছায় এগুলো দিচ্ছেন না। এটা করার উদ্দেশ্য, জাতীয় পার্টিকে দুর্বল করা।

জি এম কাদের বলেন, বেগম রওশন এরশাদ আমার ভাবি। বড় ভাইয়ের স্ত্রী। বড় ভাইকে আমরা সবসময় বাবার মতো মনে করতাম। ছোটবেলা থেকেই ভাবিকে মায়ের মতো মনে করে এসেছি। তার সঙ্গে আমার কখনোই কোনো দ্বন্দ্ব ছিল না, এখনও নেই।

রওশন এরশাদের অসুস্থতার সুযোগ নিয়ে বিভিন্ন মানুষ বিভিন্ন কাগজপত্রে সই করাচ্ছে দাবি করে তিনি বলেন, উনার থেকে বক্তব্য নেওয়া হচ্ছে। আমার জানামতে তিনি নিজের ইচ্ছায় এগুলো দিচ্ছেন না। এটা করার উদ্দেশ্য, জাতীয় পার্টিকে দুর্বল করা। আমাদের বিরুদ্ধে কিছু লোকজন এসব করছে। দেবর ভাবির দ্বন্দ্ব যারা বলছেন তারাই এসব বিষয় উসকে দিচ্ছেন।

তিনি বলেন, কিছু লোক ইচ্ছা করে এটা করছেন। দেবর-ভাবির দ্বন্দ্ব,’ ‘আমরা একতা চাই’ ইত্যাদি যারা বলে তারাই বিভিন্নভাবে উসকে দিচ্ছেন। দলটা যাতে শক্তিশালী জায়গায় দাঁড়াতে না পারে। বাইরে যেন দলের ইমেজ সংকটে পড়ে, আমরা যেন নিচে নেমে যাই। এই উদ্দেশ্যে করা হয়।

তিনি বলেন, আমাদের একটা ভাবমূর্তির সংকট হয়, যে দলে একতা নেই, বিভাজিত, নীতির ঠিক নেই, একেকজন একেক কথা বলেন। এই ধরনের ভাগ করে আমাদের বিভ্রান্ত করা হচ্ছে। শুধু নেতাকর্মী নয় সাধারণ মানুষের মাঝে বিভ্রান্তি ছড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে। আমরা এর তীব্র নিন্দা জানাই। আমি বিশ্বাস করি উনি (রওশন এরশাদ) এটা করেননি। উনাকে দিয়ে যারা এটা করানোর চেষ্টা করেছেন তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া উচিত।

বিমানবন্দরে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে জি এম কাদের বলেন, আমি ভারত সরকারের আমন্ত্রণে সেখানে গিয়েছিলাম। সেখানে বেশ কয়েকজন গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তির সঙ্গে খোলামেলা আলোচনা হয়েছে। সেই আলোচনা কার সঙ্গে হয়েছে বা কী বিষয়ে হয়েছে এ প্রসঙ্গে বিস্তারিত বলতে পারবো না। কারণ আলাপগুলো ওইভাবেই হয়েছে। উনারা যদি কিছু প্রকাশ করতে চান করবেন, আমার পক্ষ থেকে উনাদের পারমিশন (অনুমতি) ছাড়া কিছু বলতে পারবো না। তবে দ্বিপাক্ষিক স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে।

জাপা সম্পর্কে ভারতের ভালো ধারণা আছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমার কাছে ভালো লেগেছে যে জাতীয় পার্টি সম্পর্কে উনাদের ধারণা ভালো। পার্টিকে একটা সম্ভাবনাময় দল মনে করেন তারা। উনাদের আস্থা আছে যে জাতীয় পার্টির সঙ্গে তাদের সম্পর্ক সৌহার্দ্যপূর্ণ ছিল যা সবসময় থাকবে।

জিএম কাদের বলেন, তারা এখানে একটি ভালো সুষ্ঠু নির্বাচন চায়। নির্বাচনের আগে এবং পরে যেন কোনো সহিংসতা না হয় সেটা তারা চায়। কারণ বাংলাদেশে তাদের অনেক বিনিয়োগ আছে।

জাতীয় পার্টি কি বর্তমান সংবিধানের অধীনে নির্বাচনে অংশ নেবে, এমন প্রশ্নের জবাবে জিএম কাদের বলেন, এই বিষয়ে আরও কিছুদিন পরে আমরা সিদ্ধান্ত নেব। আর নির্বাচন বর্জন করব এটা আমরা কোনো দিন বলিনি।

বাংলাদেশ ইস্যুতে আমেরিকার সঙ্গে ভারত দেনদরবার করছে বলে বিভিন্ন মিডিয়ায় খবর প্রকাশিত হয়েছে, এই বিষয়ে কোনো আলোচনা হয়েছে কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এ বিষয়ে আমি কিছু বলতে পারব না। এটা ভারত ও আমেরিকার বিষয়।

জি এম কাদের আরও বলেন, উনারা আশা প্রকাশ করেন যে, বাংলাদেশের সঙ্গে সুসম্পর্ক থাকলে, বাংলাদেশ স্থিতিশীল থাকলে, সুন্দর নির্বাচনের মাধ্যমে পরবর্তী সরকার যদি গঠিত হয় তাহলে তাদের পক্ষে এসব কাজ করা সহজ হবে। উনারা প্রত্যাশা করেন, যেন সবাই মিলে ওই ধরনের একটা পরিবেশ সৃষ্টি করেন, যাতে সুন্দর নির্বাচন হয়। নির্বাচনে যেন সহিংসতা, অরাজকতার পরিস্থিতি না হয়।

নির্বাচন নিয়ে বাংলাদেশের রাজনৈতিক দলগুলোর মতানৈক্যের বিষয়ে ভারতের ভূমিকা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ভারত বলেছে- এটা তোমাদের নিজস্ব ব্যাপার। তোমরা নিজেদের মধ্যে আলোচনা করে সুরাহা করো। তারা বলেছেন, যেহেতু আপনাদের গ্রহণযোগ্যতা আছে সবার কাছে। আপনারা মোটামুটি সবার সঙ্গে আলোচনা করে যদি সবাইকে একসঙ্গে করে একটা সুন্দর নির্বাচন করতে পারেন তাহলে আমরা খুশি হবো।

আগামী নির্বাচনে অংশগ্রহণ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এটা অনেকবার বলেছি। এই সিদ্ধান্ত নেওয়ার সময় এখনো আসেনি। কী করবো, কারো অধীনে যাবো কি না সেটা আরও কিছুদিন দেখেশুনে বলতে পারবো। তবে নির্বাচন বর্জন করবো এটা কোনো দিন বলিনি। ভোটে আসবো কি আসবো না এটা নেতাকর্মীদের মতামতের ভিত্তিতে যা হবে সেই ব্যবস্থা আমরা নেবো। তবে আমরা চাই নির্বাচন যেন ভালো হয়।

নির্বাচন নিয়ে ভারত-যুক্তরাষ্ট্রের টানাপড়েন প্রসঙ্গে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, এটা তো আমি বলতে পারবো না। ভারতীয়রা, আমেরিকানরা বলতে পারবো। আমি আউটসাইডার হিসেবে উনাদের কী আলোচনা হয়েছে সেটা আমার পক্ষে জানা সম্ভব না।