স্পোর্টস ডেস্ক :
দুই ওভারে ১৭ রান দিয়ে উইকেট নেই। পাওয়ার প্লেতে শেখ মেহেদি হাসানের এমন পারফরম্যান্স একটু বিস্ময়করই। পাওয়ার প্লেতে ব্যাটসম্যানদের ‘পাওয়ার’ দমিয়ে রাখতে যে জুড়ি নেই তার! এ দিন একটু ব্যতিক্রম। তবে শেষ পর্যন্ত ব্যাটসম্যানদের শান্তি দিলেন না তিনি। বরং প্রথম দুই ওভারে বিবর্ণ হয়েথাকা বোলারই পরের দুই ওভারে চার উইকেট নিয়ে একরকম ম্যাচের ফয়সালাই করে দিলেন। জয় দিয়ে আসর শুরু করল শিরোপাপ্রত্যাশী রংপুর রাইডার্স।
সোমবার (৩০ ডিসেম্বর) মিরপুর শেরে বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের (বিপিএল) ম্যাচে ঢাকা ক্যাপিটালসকে ৪০ রানে হারিয়েছে রংপুর রাইডার্স। প্রথমে ব্যাটিংয়ে নেমে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৬ উইকেটে ১৯১ রান করে তারা। জবাবে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৯ উইকেটে ১৫১ রানের বেশি করতে পারেনি ঢাকা।
লক্ষ্য তাড়ায় শুরুটা বেশ দারুণই করে ঢাকা। যদিও শুরুতে কিছুটা দেখে খেলেন দুই ওপেনার তানজিদ হাসান তামিম ও লিটন দাস। তবে এ জুটি ভাঙার পর হঠাৎ করেই ছন্দ পতন ঘটে দলটির। মূলত স্পিনার শেখ মেহেদী আসার পরই ম্যাচে ফিরে আসে রংপুর। টানা চারটি উইকেট তুলে নেন এই স্পিনার।
তানজিদকে ফিরিয়ে জুটি ভাঙার এক বল পর এনসিএল টি-টোয়েন্টিতে চমক দেখানো হাবিবুর রহমান সোহানকে ফেরান শেখ মেহেদী। অবশ্য প্রথম বলেই ছক্কা হাঁকিয়েছিলেন হাবিবুর। পরের ওভারে লিটন দাসের ফারমানুল্লাহ সাফিকে ফিরিয়ে ফের জোড়া ধাক্কা দেন এই স্পিনার। ফলে ১০ রানের ব্যবধানে চারটি উইকেট হারিয়ে চাপে পরে যায় ঢাকা।
অধিনায়ক থিসারা পেরেরা এসে ২টি ছক্কা ও ১টি চারে আগ্রাসী ঢঙ্গে শুরু করেন। তবে তাকে খুব বেশি আগাতে দেননি কামরুল ইসলাম রাব্বি। এরপর খুশদিল শাহ ও রাকিবুল হাসানের বলে দ্রুত ফিরে যান আলাউদ্দিন বাবু ও আমির হামজা। এক প্রান্ত আগলে ঢাকার আশা জাগিয়ে রেখেছিলেন স্টিফেন এস্কিনাজি। তবে এলবিডাব্লিউর ফাঁদে ফেলে দুই প্রান্তেই লেজ বের করে আনেন খুশদিল।
এরপর ২৩ রানের জুটি গড়ে হারের ব্যবধান কমান মুকিদুল ইসলাম ও নাজমুল হোসেন অপু। দলের পক্ষে সর্বোচ্চ ৩১ রানের ইনিংস খেলেন লিটন। ২৭ বলে ৩টি চার ও ১টি ছক্কায় এই রান করেন তিনি। ২১ বলে ২টি করে চার ও ছক্কায় ৩০ রান করেন তানজিদ। রংপুরের পক্ষে ২৭ রানের খরচায় ৪টি উইকেট নেন শেখ মেহেদী। জোড়া শিকার খুশদিলের।
এর আগে টস হেরে প্রথমে ব্যাটিংয়ে নেমে শুরুটা ভালো করতে পারেনি রংপুর। দলীয় ২০ রানে দুই ওপেনারকে হারিয়ে জোড়া ধাক্কা খায় দলটি। স্টিভ টেইলরকে এলবিডাব্লিউর ফাঁদে ফেলেন মোস্তাফিজুর রহমান। আলেক্স হেলসকে বোল্ড করে দেন আলাউদ্দিন বাবু। যদিও কিছুটা দুর্ভাগা ছিলেন এই ইংলিশ ব্যাটার। বল বেশ নিচু হলে লাইন মিস করেন তিনি।
এরপর ইফতেখার আহমেদকে নিয়ে দলের হাল ধরেন সাইফ হাসান। কিছুটা দেখে শুনে খেলে এগিয়ে যেতে থাকেন তিনি। তবে নিয়মিত বাউন্ডারি মেরে রানের গতি সচল রাখার চেষ্টা করেন ইফতেখার। তাতে ৮৯ রানের জুটি গড়েন এ দুই ব্যাটার। এ দুই ব্যাটারকেই ফেরান আলাউদ্দিন। কিছুদিন আগেই এনসিএল টি-টোয়েন্টিতে ১৯টি উইকেট নিয়ে সর্বাধিক উইকেট শিকারি ছিলেন তিনি। সেই ছন্দ ধরে রাখেন বিপিএলেও।
এরপর খুশদিল শাহ ও অধিনায়ক নুরুল হাসান সোহানের ব্যাটে দ্রুত এগিয়ে যেতে থাকে রংপুর। স্কোরবোর্ডে ৪১ রান যোগ করেন এ দুই ব্যাটার। তাতে বড় পুঁজিই মিলে দলটির।
দলের পক্ষে সর্বোচ্চ ৪৯ রানের ইনিংস খেলেন ইফতেখার। ৩৮ বলে ৮টি চারের সাহায্যে সাজান নিজের ইনিংস। ২৩ বলে সমান ৩টি করে চার ও ছক্কায় ৪৬ রানের দানবীয় ইনিংস খেলেন খুশদিল। সাইফের ব্যাট থেকে আসে ৪০ রান। ২টি করে চার ও ছক্কায় ৩৩ বলে এই রান করেন তিনি। ১১ বলে ৬টি চারের সাহায্যে ২৫ রানের ক্যামিও খেলেন সোহান।
ঢাকার হয়ে আলাউদ্দিন বাবু ৩ উইকেট পেলেও খরচ করেছেন ৪৩ রান। ২৭ রানে দুই উইকেট নিয়েছেন মুকিদুল ইসলাম মুগ্ধ।