নিজস্ব প্রতিবেদক :
যেখানে অনুমতি দেওয়া হবে সেখানেই বিএনপিকে সমাবেশ করতে হবে বলে কড়া বার্তা দিয়েছেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) অতিরিক্ত কমিশনার (ক্রাইম অ্যান্ড অপারেশন) ড. খ. মহিদ উদ্দিন।
বুধবার (২৫ অক্টোবর) নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপের সময় এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি এ কথা বলেন।
বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‘পুলিশ অনুমতি দিলেও নয়াপল্টনে সমাবেশ করবে না দিলেও নয়াপল্টনে করবে’। এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে ড. খ. মহিদ উদ্দিন বলেন, আইনি কাঠামোর মধ্যে থেকে আমার কথা বলতে হবে। কারও বক্তব্যের ব্যাপারে আমার কোনো মন্তব্য নেই। যেখানে সমাবেশের অনুমতি দেওয়া হবে সেখানেই বিএনপিকে সমাবেশ করতে হবে।
সব রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতি আহ্বান জানিয়েছে পুলিশের এ কর্তা বলেন, আইনি কাঠামোতে দেওয়া শর্তগুলো যেন তারা অনুসরণ করে। ঢাকা শহরে কোনো রাজনৈতিক দলের সমাবেশ কোনো মাঠে করাই শ্রেয়। বিভিন্ন সময় রাজনৈতিক দলগুলোকে সেটি আমার বলেছি।
এ সময় দলগুলোকে দায়িত্বশীল আচরণ করার জন্যও ডিএমপির পক্ষ থেকে অনুরোধ করেন তিনি।
জামায়াতের সমাবেশের অনুমতির বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, তারা একটি দরখাস্ত করেছে। এই দলটির বিষয়ে হাইকোর্টের অবজারভেশন আছে। শাপলা চত্বরের মতো জায়গায় জামায়াতের মতো দলকে অনুমতি দেওয়া হবে না।
কোনো রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীদের সমাবেশে এসে অবস্থান নেওয়ার গোয়েন্দা তথ্য আছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, সুনির্দিষ্ট কোনো তথ্য এখনও নেই। অনেক সময় রাজনীতিবিদরা এ ধরনের ঘটনা ঘটার পরে দায়িত্ব নিতে চায় না। তারা বলেন কে করেছে তারা জানেন না। এমন অভিজ্ঞতাও আমাদের আছে। কাজেই নাশকতা যে করবে না এমন কথা এখনই বলা যাচ্ছে না। নগরবাসীদের নিরাপদ রাখার জন্য আমাদের সব ধরনের প্রস্তুতি রয়েছে।
এদিকে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল সচিবালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে জানিয়েছেন, বিএনপির সমাবেশের অনুমতির ব্যাপারে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ-ডিএমপি সিদ্ধান্ত নেবে। তারা সুবিধাজনক জায়গায় সমাবেশের অনুমতি দেবে।
বিএনপির সরকার পতনের হুঁশিয়ারি প্রসঙ্গে মন্ত্রী বলেন, দেখুন, সরকার তো এমন কোনোকিছু না যে, ধাক্কা দিলে পড়ে যাবে। এদেশে গণতান্ত্রিক সরকার আছে। ভোটের মাধ্যমে তারা ক্ষমতায় এসেছে। আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী তাদের দায়িত্ব পালন করবেন।
তবে বিএনপিকে সমাবেশের অনুমতি দেওয়ার ব্যাপারে ইতিবাচক মনোভাব দেখালেও জামায়াতে ইসলামীকে সমাবেশের অনুমতি দেওয়া হবে না বলে সাফ জানিয়ে দিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।
সরকার পতনের এক দফা আন্দোলনে থাকা বিএনপি আগামী ২৮ অক্টোবর শনিবার রাজধানীতে মহাসমাবেশ ডেকেছে বিএনপি। সেখান থেকে দলটি হরতাল-অবরোধের মতো কঠোর কর্মসূচি দিতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। ওই দিনই বায়তুল মোকাররমের দক্ষিণ গেটে সমাবেশ ডেকেছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। সেখানে প্রধানমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার প্রধান অতিথি হিসেবে যোগ দেওয়ার কথা রয়েছে।
একই দিন একই সময়ে অল্প দূরত্বে প্রধান দুই দলের সমাবেশ ঘিরে রাজনীতিতে উত্তেজনা বিরাজ করছে। এই অবস্থায় জামায়াতে ইসলামী একই দিন মতিঝিল শাপলা চত্বরে সমাবেশ ডাকলেও অনুমতি দেয়নি সরকার। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী দিনটি ঘিরে ব্যাপক নিরাপত্তা বলয় গড়ে তুলতে যাচ্ছে। র্যাব ঢাকার প্রবেশ পথগুলোতে চেকপোস্ট বসানোর কথা জানিয়েছে।