নিজস্ব প্রতিবেদক :
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেন, যেকোনো মূল্যে দেশের সীমান্ত সুরক্ষিত থাকবে। আগে ভারতকে ছাড় দেয়া হলেও এখন আইনত যা পাওয়া যাবে তা আদায় করা হচ্ছে। আগামীতে সীমান্ত নিয়ে ডিজি পর্যায়ে বৈঠক হবে, সেখানে সমাধান উঠে আসবে।
রোববার (১৯ জানুয়ারি) বিসিএস ক্যাডারভুক্ত (প্রশাসন, পুলিশ, বন ও রেলওয়ে) এবং বাংলাদেশ জুডিশিয়াল সার্ভিসের কর্মকর্তাদের ১৩৭তম সার্ভে ও সেটেলমেন্ট প্রশিক্ষণ কোর্স ২০২৪-২৫ এর সনদপত্র বিতরণ ও সমাপনী অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে তিনি এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, আগের সরকার সীমান্ত নিয়ে কোনো কথা বলেনি, তাই উত্তেজনা ছিল না। বর্তমান সরকার কোনো ছাড় দিচ্ছে না, এজন্যই এতো আলোচনা হচ্ছে।
সীমান্ত সবসময় সুরক্ষিত উল্লেখ করে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, আমরা বেঁচে থাকতে আমাদের সীমান্তে কেউ আসতে পারবে না।
তিনি বলেন, আগের সরকার কিছুটা ছাড় দিতো, এখন অধিকার আদায়ে ছাড় দিচ্ছি না, তাই কিছু বিষয়ে ছোট খাটো সমস্যা দেখা দিচ্ছে। আগামী ফেব্রুয়ারিতে ডিজি লেভেলের বৈঠক হবে সেখানে সমাধান হবে বলে আশা করছি।
জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেন, সীমান্তের নিরাপত্তা ইস্যুতে আমরা পদক্ষেপ নিচ্ছি। জনগণ পাশে আছে। আমাদের সীমান্ত সুরক্ষিত রয়েছে। আমাদের রক্ত ঝরবে, কিন্তু সীমান্ত সুরক্ষিত থাকবে। তবুও ওপার থেকে কাউকে এখানে আসতে দেবো না।
সীমান্ত নিরাপত্তা বিঘ্নিত হচ্ছে। সরকারের পক্ষ থেকে কি ধরনের পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে, জানতে চাইলে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, আগে তো সীমান্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে পদক্ষেপ ছিল না। এখন পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে বলেই সীমান্তে সমস্যা দেখা দিচ্ছে। বর্ডারে ঝামেলা হচ্ছে। জনগণ আমাদের সঙ্গে আছে। বিজিবি সব সময় সতর্ক রয়েছে। সীমান্ত সম্পূর্ণরূপে সুরক্ষিত। এই সীমান্তে ওপারের কেউ আসতে পারবে না। রক্ত ঝরবে, কিন্তু সীমান্ত সুরক্ষিত থাকবে।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ সীমান্তে বিএসএফ ও ভারতীয় নাগরিকদের অনুপ্রবেশ, হামলা, ধান ও গাছ কাটা নিয়ে উদ্ভূত পরিস্থিতি সম্পর্কে জানতে চাইলে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, চাঁপাইনবাবগঞ্জের ঘটনার সূত্রপাত জমির ধান ও গাছ কাটা নিয়ে। উভয়পক্ষের লোকজন আহত হয়েছেন। আমাদের মিডিয়ায় দেখিনি যে, তাদের দুজন বিএসএফ আহত হয়েছে। মেজর কিছু ঘটেনি। এটা নিয়ে বিজিবি-বিএসএফ আলোচনায় সমাধান হয়ে গেছে।
তিনি বলেন, বর্ডার এলাকার কিছু জায়গা আছে যেখানে দুই দেশের কিছু পার্টি আছে যারা যাওয়া আসা করে। এই সমস্যা আছে, যা অচিরেই সমাধান হয়ে যাবে।
সিভিল সার্ভিস বিষয়ে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, চাকরি হারানোর ভয় না থাকায় সিভিল সার্ভিস কর্মীদের ক্ষেত্রে সেবায় অনীহা কাজ করে। এবং শৃঙ্খলা থাকলে ক্যাডারদের মধ্যে রাজনৈতিক লেজুড়বৃত্তি থাকতো না।
দুর্নীতিকে বাংলাদেশের প্রধান সমস্যা উল্লেখ করে জাহাঙ্গীর আলম বলেন, দুর্নীতি না কমলে দেশকে এগিয়ে নেয়া সম্ভব না। স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা হওয়ার পর আমার আত্মীয় স্বজন বেড়ে গেছে। আমাদের পরিচয় দিয়ে কেউ সুবিধা নিতে চাইলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে তুলে দেবেন।’
তিনি আরও বলেন, আমরা দুর্নীতি করলে সেটারও সঠিক তথ্য প্রকাশ করুন।
এ সময় জুলাই আন্দোলনে আহতদের কর্মসংস্থান করার বিষয়েও গুরুত্বারোপ করেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা।
ভূমি রেকর্ড ও জরিপ অধিদপ্তরের পরিচালক (অতিরিক্ত সচিব) ড. মো. মাহমুদ হাসানের সভাপতিত্বে রাজধানীর তেজগাঁও ভূমি ভবনের কেন্দ্রীয় সেমিনার কক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, ভূমি মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব এস এম সালেহ আহমেদ, ভূমি সংস্কার বোর্ডের চেয়ারম্যান (সচিব) এ জে এম সালাহউদ্দিন নাগরী, ভূমি আপিল বোর্ডের চেয়ারম্যান (সচিব) মুহম্মদ ইব্রাহিম।