আন্তর্জাতিক ডেস্ক :
ভারতীয় বংশোদ্ভূত মার্কিন রিপাবলিকান দলীয় প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী নিকি হ্যালি বলেন, যুদ্ধের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে চীন ও চীনের কমিউনিস্ট পার্টির নেতারা এ যুদ্ধে জয়ী হতে চান। এমনকি, দক্ষিণ এশিয়ার দেশটিকে তিনি বিশ্ব ও যুক্তরাষ্ট্রের জন্য ‘বিশাল হুমকি’ বলেও আখ্যা দিয়েছেন তিনি।
শুক্রবার (২২ সেপ্টেম্বর) যুক্তরাষ্ট্রের নিউ হ্যাম্পশায়ার রাজ্যে অর্থনীতি সংক্রান্ত এক আলোচনা সভায় অংশ নিয়ে এ দাবি করেছেন সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের এই মিত্র।
তিনি বলেন, কেবল যুক্তরাষ্ট্রকে পরাজিত করার জন্য অর্ধশতাব্দী কাটিয়ে দিয়েছে চীন। সামরিক শক্তি বিবেচনায় চীনা সামরিক বাহিনী ইতোমধ্যে মার্কিন সশস্ত্র বাহিনীর সমপর্যায়ে পৌঁছে গেছে। আমাদের বেঁচে থাকার জন্য শক্তি এবং গর্বের বিষয়গুলো অপরিহার্য; বিশেষ করে কমিউনিস্ট চীনের উত্থানের মুখে। চীন অস্তিত্বের জন্য হুমকি।
যুক্তরাষ্ট্রের কারখানার উৎপাদন কাজ চীন কেড়ে নিয়েছে বলেও অভিযোগ করেছেন নিকি হ্যালি। তিনি বলেন, চীন আমাদের বাণিজ্যিক গোপনীয়তা ছিনিয়ে নিয়েছে। বর্তমানে ওষুধ থেকে শুরু করে উন্নত প্রযুক্তিসহ অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ শিল্পের নিয়ন্ত্রণ নিচ্ছে চীন। রেকর্ড সময়ের মধ্যে চীন অর্থনৈতিকভাবে পিছিয়ে পড়া দেশ থেকে পৃথিবীর দ্বিতীয় বৃহত্তম অর্থনীতি হয়ে উঠেছে। এশিয়া ও এশিয়ার বাইরে নিজের আধিপত্য বিস্তার করছে দেশটি।
সাউথ ক্যারোলাইনার দুই মেয়াদের সাবেক এই গভর্নর বলেছেন, চীনের কমিউনিস্ট পার্টির উদ্দেশ্য স্পষ্ট। তারা বিশাল এক অত্যাধুনিক সামরিক বাহিনী গড়ে তুলছে, যা আমেরিকাকে হুমকি দিতে এবং এশিয়া ও তার বাইরে আধিপত্য বিস্তার করতে সক্ষম।
তিনি আরো বলেন, কিছু দিক থেকে, চীনের সামরিক বাহিনী ইতোমধ্যে মার্কিন সশস্ত্র বাহিনীর সমান। অন্যান্য ক্ষেত্রে তারা আমাদের হারিয়ে দিচ্ছে। চীনের নেতারা এতটাই আত্মবিশ্বাসী, তারা আমাদের আকাশে গুপ্তচর বেলুন পাঠাচ্ছে এবং আমাদের উপকূলের ঠিক দূরে কিউবায় একটি গুপ্তচর ঘাঁটি তৈরি করছে।
এদিকে তাইওয়ানের আকাশ ও জলসীমায় চীনা সামরিক কার্যকলাপ অস্বাভাবিক ভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। তাইওয়ানের আঞ্চলিক কর্মকর্তারা দেশটির সীমায় কয়েক ডজন চীনা ফাইটার জেট এবং বোমারু বিমান শনাক্তও করেছে।
অঞ্চলটির প্রতিরক্ষা মন্ত্রী চিউ কুও-চেং বলেছেন, সেপ্টেম্বর মাস জুড়ে স্থল, সমুদ্র, বায়ু এবং উভচর মহড়ায় নিযুক্ত রয়েছে চীনা বাহিনী। এই পরিস্থিতি বেশ অস্বাভাবিক।
এর আগে গত বৃহস্পতিবার (২০ সেপ্টেম্বর) তাইওয়ানের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছিল, ২৪ ঘণ্টারও কম সময়ে ১০টি চীনা সামরিক বিমান ও পাঁচটি নৌ-বাহিনীর জাহাজ তাইওয়ানের আশপাশে শনাক্ত করা হয়েছে। যার মধ্যে অন্তত দুটি বিমান তাইওয়ানের আকাশ প্রতিরক্ষা অঞ্চলে ঢুকে পড়ে। তাইওয়ানের সশস্ত্র বাহিনী পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করেছে। বিমান, নৌবাহিনীর জাহাজ এবং ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবস্থাকে পরিস্থিতি মোকাবিলায় প্রস্তুত রাখা হয়েছে।
পরিস্থিতি মূল্যায়নে প্রতিরক্ষা মন্ত্রী চিউ বলেন, বিমান, জাহাজ এবং অস্ত্র ব্যবহারের ঝুঁকি বৃদ্ধি নিয়ে আমরা খুবই চিন্তিত উভয় পক্ষকে সতর্ক থাকতে হবে। আমরা মনে করি বেইজিংয়ের পদক্ষেপ ‘হাত থেকে বেরিয়ে যাচ্ছে’ এবং অনাকাঙ্ক্ষিত সংঘর্ষের সম্ভাবনা বাড়িয়ে দিচ্ছে।
উল্লেখ্য, বেইজিং তাইওয়ানকে নিজেদের ভূখণ্ডের অংশ হিসেবে দেখে এবং অঞ্চলটি স্বাধীনতা ঘোষণা করলে শক্তির প্রয়োগের মাধ্যমে পুনরায় একত্রিত হওয়ার অধিকার সংরক্ষণ করে বলে তাদের দাবি। এদিকে আবার তাইওয়ানের বর্তমান পরিস্থিতিতে যুক্তরাষ্ট্র পাশে রয়েছে বলে দাবি করে আসছে। এ নিয়ে চীনের সঙ্গে দেশটির বরফ জমতে জমতে পাথরে রূপ নিচ্ছে।