Dhaka বুধবার, ১০ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ২৬ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

যুদ্ধকালীন জরুরি সরকার গঠন করছে ইসরায়েল

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : 

ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু তার প্রধান রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বী সেনাবাহিনীর সাবেক প্রধান বেনি গ্যান্টজের সঙ্গে যুদ্ধকালীন জরুরি সরকার গঠন করেছেন।

বুধবার (১১ অক্টোবর) হামাস-ইসরায়েল সংঘাতের পঞ্চম দিনে এ সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন তিনি।

হামাসের সঙ্গে ইসরায়েলের যুদ্ধ শেষ না হওয়া পর্যন্ত এই সরকারের মেয়াদকাল থাকবে বলে জানা গেছে।

যুদ্ধ পরিস্থিতিতে যুদ্ধ পরিচালনার বিষয়ের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট নয় এ ধরনের কোনো বিল বা সরকারি সিদ্ধান্ত নেসেটে (ইসরায়েলি পার্লামেন্ট) পাস হবে না। এবং যুদ্ধকালীন সময়ে সমস্ত সিনিয়র কর্তৃপক্ষ নিয়োগ স্বয়ংক্রিয়ভাবে বাড়ানো।

প্রাক্তন আইডিএফ জেনারেল ন্যাশনাল ইউনিটি এম কে গাদি আইজেনকোট ও মন্ত্রী রন ডারমার যুদ্ধ মন্ত্রিসভায় পর্যবেক্ষক হিসেবে কাজ করবেন।

যুদ্ধের সময়কালের জন্য ন্যাশনাল ইউনিটি পার্টির পাঁচ সদস্যকে বৃহত্তর নিরাপত্তা মন্ত্রিসভায় যুক্ত করা হবে। এটি সব সরকারের সময় অধীনে কাজ করবে। সদস্যের মধ্যে গ্যান্টজ আইজেনকোট, এমকে গিডিয়ন সা-আরসহ আর দুজন থাকবেন। অন্য দুজন কে তা এখনও নির্ধারিত হয়নি।

বিবিসি জানিয়েছে বিরোধী নেতা ইয়ার ল্যাপিডের জন্য যুদ্ধকালীন মন্ত্রিসভায় একটি পদ খালি রাখা হয়েছে। তবে ল্যাপিডের শর্ত হলো- জরুরি সরকারে উগ্র-ডানপন্থী ধর্মীয় ইহুদিবাদ ও ওৎজমা ইহুদি দলগুলো যদি অন্তর্ভুক্ত থাকে, তাহলে তিনি এ সরকারে যুক্ত হবেন না।

ইসরায়েলের সেনাবাহিনীর সাবেক প্রধান বেনি গ্যান্টজ এক বিবৃতিতে বলেন, আজকে মন্ত্রিসভার একটি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে যুদ্ধকালীন একটি জরুরি সরকার গঠনের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে।

‘যুদ্ধকালীন মন্ত্রিসভায়’ ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু, সাবেক সেনা প্রধান বেনি গ্যান্টজ এবং প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্টকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।

হামাসের সঙ্গে চলমান যুদ্ধের পরিপ্রেক্ষিতে দেশটিতে জাতীয় ঐক্যের সরকার গঠনের দাবি তুলেছেন দেশটির অর্থনীতি ও শিল্পমন্ত্রী নির বারকাত। বারকাত বলেছেন, ইসরাইল এ মুহূর্তে যুদ্ধে রয়েছে এবং একটি জাতীয় ঐক্য সরকার গঠনের উপযুক্ত সময় এটি।

তিনি আরও বলেন, সমাজের সকল অংশের যোদ্ধারা ইসরাইল রাষ্ট্রের জন্য যুদ্ধ করতে যাচ্ছে এবং আমাদের অবশ্যই তাদের সমর্থন করতে হবে। সেজন্য একটি জাতীয় ঐক্য সরকার দরকার, যারা সমগ্র জনগণের প্রতিনিধিত্ব করবে। আমাদের আজ ঐক্য সরকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে এবং একসঙ্গে যুদ্ধে জয়ী হতে হবে।

এদিকে মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএনে প্রকাশিত এক বিশ্লেষণে বলা হয়েছে, ফিলিস্তিনের প্রতিরোধ সংগঠন হামাসের নজিরবিহীন হামলা ঠেকাতে ব্যর্থ হয়েছে ইসরায়েল। এই ব্যর্থতার জেরে ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর বিদায়ঘণ্টা বাজতে পারে। অন্তত ইসরায়েলি ইতিহাস এ কথাই বলছে।

গত শনিবার সকালে ইসরায়েলে এ যাবৎকালের সবচেয়ে বড় হামলা চালায় হামাস। ফিলিস্তিনের গাজা থেকে ইসরায়েলে কয়েক হাজার রকেট ছোড়ে তারা। একই সঙ্গে ইসরায়েলি ভূখণ্ডে ঢুকে তারা হামলা চালায়, অনেককে জিম্মিও করে।

ইসরায়েলি সেনাবাহিনী জানিয়েছে, বুধবার পর্যন্ত ইসরায়েলে নিহতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ২০০ জনে। আহতের সংখ্যা ২ হাজার ৭০০। অন্যদিকে গাজায় ইসরায়েলের পাল্টা হামলায় ৯ শ এর বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন।

শনিবার গাজা উপত্যকা থেকে ইসরায়েলে প্রবেশ করে কয়েক হাজার হামাস যোদ্ধা। গত কয়েক দিন ধরে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী ও পুলিশ হামলাকারীদের নির্মূলে কাজ করে যাচ্ছে।

হামাসের সামরিক শাখা আল কাসেম ব্রিগেড বুধবার বলেছে, তাদের যোদ্ধারা এখনও ইসরায়েলি ভূখণ্ডে লড়াই করছে।

ফিলিস্তিনি কর্মকর্তারা বলেছেন, ইসরায়েলের পাল্টা হামলায় ১ হাজার ৫৫ জন ফিলিস্তিনি নিহত ও ৫ সহস্রাধিক আহত হয়েছেন।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

ডাকসু নির্বাচনে জয়ী প্রথম দম্পতি রায়হান-সালমা

যুদ্ধকালীন জরুরি সরকার গঠন করছে ইসরায়েল

প্রকাশের সময় : ১০:৩৫:৪৯ অপরাহ্ন, বুধবার, ১১ অক্টোবর ২০২৩

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : 

ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু তার প্রধান রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বী সেনাবাহিনীর সাবেক প্রধান বেনি গ্যান্টজের সঙ্গে যুদ্ধকালীন জরুরি সরকার গঠন করেছেন।

বুধবার (১১ অক্টোবর) হামাস-ইসরায়েল সংঘাতের পঞ্চম দিনে এ সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন তিনি।

হামাসের সঙ্গে ইসরায়েলের যুদ্ধ শেষ না হওয়া পর্যন্ত এই সরকারের মেয়াদকাল থাকবে বলে জানা গেছে।

যুদ্ধ পরিস্থিতিতে যুদ্ধ পরিচালনার বিষয়ের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট নয় এ ধরনের কোনো বিল বা সরকারি সিদ্ধান্ত নেসেটে (ইসরায়েলি পার্লামেন্ট) পাস হবে না। এবং যুদ্ধকালীন সময়ে সমস্ত সিনিয়র কর্তৃপক্ষ নিয়োগ স্বয়ংক্রিয়ভাবে বাড়ানো।

প্রাক্তন আইডিএফ জেনারেল ন্যাশনাল ইউনিটি এম কে গাদি আইজেনকোট ও মন্ত্রী রন ডারমার যুদ্ধ মন্ত্রিসভায় পর্যবেক্ষক হিসেবে কাজ করবেন।

যুদ্ধের সময়কালের জন্য ন্যাশনাল ইউনিটি পার্টির পাঁচ সদস্যকে বৃহত্তর নিরাপত্তা মন্ত্রিসভায় যুক্ত করা হবে। এটি সব সরকারের সময় অধীনে কাজ করবে। সদস্যের মধ্যে গ্যান্টজ আইজেনকোট, এমকে গিডিয়ন সা-আরসহ আর দুজন থাকবেন। অন্য দুজন কে তা এখনও নির্ধারিত হয়নি।

বিবিসি জানিয়েছে বিরোধী নেতা ইয়ার ল্যাপিডের জন্য যুদ্ধকালীন মন্ত্রিসভায় একটি পদ খালি রাখা হয়েছে। তবে ল্যাপিডের শর্ত হলো- জরুরি সরকারে উগ্র-ডানপন্থী ধর্মীয় ইহুদিবাদ ও ওৎজমা ইহুদি দলগুলো যদি অন্তর্ভুক্ত থাকে, তাহলে তিনি এ সরকারে যুক্ত হবেন না।

ইসরায়েলের সেনাবাহিনীর সাবেক প্রধান বেনি গ্যান্টজ এক বিবৃতিতে বলেন, আজকে মন্ত্রিসভার একটি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে যুদ্ধকালীন একটি জরুরি সরকার গঠনের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে।

‘যুদ্ধকালীন মন্ত্রিসভায়’ ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু, সাবেক সেনা প্রধান বেনি গ্যান্টজ এবং প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্টকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।

হামাসের সঙ্গে চলমান যুদ্ধের পরিপ্রেক্ষিতে দেশটিতে জাতীয় ঐক্যের সরকার গঠনের দাবি তুলেছেন দেশটির অর্থনীতি ও শিল্পমন্ত্রী নির বারকাত। বারকাত বলেছেন, ইসরাইল এ মুহূর্তে যুদ্ধে রয়েছে এবং একটি জাতীয় ঐক্য সরকার গঠনের উপযুক্ত সময় এটি।

তিনি আরও বলেন, সমাজের সকল অংশের যোদ্ধারা ইসরাইল রাষ্ট্রের জন্য যুদ্ধ করতে যাচ্ছে এবং আমাদের অবশ্যই তাদের সমর্থন করতে হবে। সেজন্য একটি জাতীয় ঐক্য সরকার দরকার, যারা সমগ্র জনগণের প্রতিনিধিত্ব করবে। আমাদের আজ ঐক্য সরকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে এবং একসঙ্গে যুদ্ধে জয়ী হতে হবে।

এদিকে মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএনে প্রকাশিত এক বিশ্লেষণে বলা হয়েছে, ফিলিস্তিনের প্রতিরোধ সংগঠন হামাসের নজিরবিহীন হামলা ঠেকাতে ব্যর্থ হয়েছে ইসরায়েল। এই ব্যর্থতার জেরে ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর বিদায়ঘণ্টা বাজতে পারে। অন্তত ইসরায়েলি ইতিহাস এ কথাই বলছে।

গত শনিবার সকালে ইসরায়েলে এ যাবৎকালের সবচেয়ে বড় হামলা চালায় হামাস। ফিলিস্তিনের গাজা থেকে ইসরায়েলে কয়েক হাজার রকেট ছোড়ে তারা। একই সঙ্গে ইসরায়েলি ভূখণ্ডে ঢুকে তারা হামলা চালায়, অনেককে জিম্মিও করে।

ইসরায়েলি সেনাবাহিনী জানিয়েছে, বুধবার পর্যন্ত ইসরায়েলে নিহতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ২০০ জনে। আহতের সংখ্যা ২ হাজার ৭০০। অন্যদিকে গাজায় ইসরায়েলের পাল্টা হামলায় ৯ শ এর বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন।

শনিবার গাজা উপত্যকা থেকে ইসরায়েলে প্রবেশ করে কয়েক হাজার হামাস যোদ্ধা। গত কয়েক দিন ধরে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী ও পুলিশ হামলাকারীদের নির্মূলে কাজ করে যাচ্ছে।

হামাসের সামরিক শাখা আল কাসেম ব্রিগেড বুধবার বলেছে, তাদের যোদ্ধারা এখনও ইসরায়েলি ভূখণ্ডে লড়াই করছে।

ফিলিস্তিনি কর্মকর্তারা বলেছেন, ইসরায়েলের পাল্টা হামলায় ১ হাজার ৫৫ জন ফিলিস্তিনি নিহত ও ৫ সহস্রাধিক আহত হয়েছেন।