আন্তর্জাতিক ডেস্ক :
যুক্তরাষ্ট্রে টানা প্রায় একমাস ধরে সরকারি অচলাবস্থা বা শাটডাউন চলছে। এমন অবস্থায় দেশটিতে আকাশপথে চলাচলে দেখা দিয়েছে চরম বিশৃঙ্খলা। গত দুই দিনে দেশটিতে ১৫ হাজার ফ্লাইট বিলম্বিত হয়েছে।
মূলত শাটডাউনের মধ্যে কর্মকর্তাদের অনুপস্থিতি বেড়ে যাওয়ায় তৈরি হয়েছে এ বিশৃঙ্খলা। মঙ্গলবার (২৮ অক্টোবর) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা রয়টার্স।
বার্তাসংস্থাটি বলছে, যুক্তরাষ্ট্রে সরকারি অচলাবস্থা বা শাটডাউন ২৭তম দিনে গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে বিমান চলাচলে চরম বিশৃঙ্খলা দেখা দিয়েছে। সোমবার সারা দেশে প্রায় ৭ হাজার ফ্লাইট বিলম্বিত হয়েছে। কারণ বেতন না পেয়ে কাজ করা এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোল কর্মকর্তাদের অনুপস্থিতি ব্যাপকভাবে বেড়ে গেছে।
এর আগে গত রোববার যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে ৮ হাজার ৮০০টির বেশি ফ্লাইট বিলম্বিত হয়েছিল।
এদিকে যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল এভিয়েশন অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (এফএএ) জনবল সংকটের কথা জানিয়ে সোমবার নিউ জার্সির নিউয়ার্ক, টেক্সাসের অস্টিন এবং ডালাস–ফোর্ট ওর্থ আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ‘গ্রাউন্ড ডিলে প্রোগ্রাম’ চালু করে। এর আগে আটলান্টা টার্মিনাল রাডার অ্যাপ্রোচ কন্ট্রোলে জনবল ঘাটতির কারণে যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ–পূর্বাঞ্চলে ফ্লাইট বিলম্ব হয়।
রয়টার্স বলছে, বর্তমানে প্রায় ১৩ হাজার এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোলার এবং ৫০ হাজার ট্রান্সপোর্টেশন সিকিউরিটি অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (টিএসএ) কর্মকর্তা বেতন ছাড়াই কাজ করছেন। রিপাবলিকান প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও কংগ্রেসের ডেমোক্র্যাট সদস্যদের বাজেটসংক্রান্ত বিরোধের জেরেই এই অচলাবস্থা শুরু হয়।
হোয়াইট হাউস সতর্ক করেছে, মঙ্গলবার কর্মকর্তারা পূর্ণ মাসের বেতন না পেলে ফ্লাইট বিলম্ব ও বাতিলের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে।
ফ্লাইট ট্র্যাকিং ওয়েবসাইট ফ্লাইটঅ্যাওয়ার–এর তথ্য অনুযায়ী, গত রোববার সাউথওয়েস্ট এয়ারলাইনসের ৪৭ শতাংশ ফ্লাইট অর্থাৎ ২ হাজার ৮৯টি ফ্লাইট বিলম্বিত হয়। আমেরিকান এয়ারলাইনসের ৩৬ শতাংশ বা ১ হাজার ২৭৭টি, ইউনাইটেড এয়ারলাইনসের ২৭ শতাংশ বা ৮০৭টি এবং ডেল্টা এয়ারলাইনসের ২১ শতাংশ বা ৭২৫টি ফ্লাইট বিলম্বিত হয়।
আর স্থানীয় সময় সোমবার রাত ১১টা ৩০ মিনিট পর্যন্ত সাউথওয়েস্ট এয়ারলাইনসের ৩৪ শতাংশ, আমেরিকান এয়ারলাইনসের ২৯ শতাংশ, ডেল্টার ২২ শতাংশ এবং ইউনাইটেডের ১৯ শতাংশ ফ্লাইট বিলম্বিত হয়।
মার্কিন পরিবহন দপ্তরের এক কর্মকর্তা জানান, রোববারের ফ্লাইট বিলম্বের প্রায় ৪৪ শতাংশই ঘটেছিল এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোল কর্মকর্তাদের অনুপস্থিতির কারণে।
এদিকে ক্রমবর্ধমান ফ্লাইট বিলম্ব ও বাতিল যাত্রীদের ক্ষোভ আরও বাড়িয়ে তুলেছে এবং সরকারি অচলাবস্থার প্রভাব নিয়ে কংগ্রেসের ওপর নতুন করে চাপ সৃষ্টি করছে।
মার্কিন পরিবহনমন্ত্রী শন ডাফি সোমবার ওহাইওর ক্লিভল্যান্ডে এটিসি কর্মকর্তাদের সঙ্গে দেখা করেন। অন্যদিকে ন্যাশনাল এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোলার্স অ্যাসোসিয়েশন মঙ্গলবার দেশজুড়ে বিভিন্ন বিমানবন্দরে কর্মসূচি পালন করবে। এই কর্মসূচিতে কর্মীদের বেতন না পাওয়ার বিষয়টি তুলে ধরা হবে।
প্রসঙ্গত, এর আগেও ২০১৯ সালের ৩৫ দিনের শাটডাউনের সময় বেতন না পাওয়ায় নিয়ন্ত্রক ও টিএসএ কর্মকর্তাদের অনুপস্থিতি বেড়ে গিয়েছিল। তখনও বিমানবন্দরে দীর্ঘসময় অপেক্ষাসহ নানা বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হয়েছিল। এমনকি নিউইয়র্ক ও ওয়াশিংটনে আকাশপথে চলাচল ধীরগতিতে করতেও বাধ্য হয়েছিল কর্তৃপক্ষ।
আন্তর্জাতিক ডেস্ক 






















