Dhaka শনিবার, ০৯ অগাস্ট ২০২৫, ২৪ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

যুক্তরাষ্ট্রে ড. ইউনূসের সঙ্গে মোদির বৈঠক হচ্ছে না

  • প্রতিনিধির নাম
  • প্রকাশের সময় : ১২:৪১:৫৫ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪
  • ১৯৩ জন দেখেছেন

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : 

আগামী সপ্তাহে জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনের ফাঁকে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বৈঠক হচ্ছে না বলে জানিয়েছে ভারতের গণমাধ্যম।

এ বিষয়ের সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের বরাতে ভারতের সংবাদ মাধ্যম হিন্দুস্তান টাইমস বৃহস্পতিবার (১৯ সেপ্টেম্বর) এ তথ্য জানিয়েছে।

জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে যোগ দিতে আগামী সপ্তাহে যুক্তরাষ্ট্রে যাচ্ছেন ড. মুহাম্মদ ইউনূস ও নরেন্দ্র মোদি।

সাধারণ পরিষদের বৈঠকের সাইডলাইনে ভারতীয় প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকের জন্য এই মাসের শুরুর দিকে নয়াদিল্লির কাছে আনুষ্ঠানিক অনুরোধ জানিয়েছিল ঢাকা।

সংবাদমাধ্যমটি বলছে, এই মাসের শুরুর দিকে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের সাইডলাইনে ড. মুহাম্মদ ইউনূস ও নরেন্দ্র মোদির মধ্যে বৈঠকের জন্য আনুষ্ঠানিক অনুরোধ করা হয়েছিল। বিষয়টি সম্পর্কে অবগত ব্যক্তিরা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেছেন, শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর থেকে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কে যে টানাপোড়েন দেখা দিয়েছে তা দূর করতে সাহায্য করবে এই আশায় ঢাকা এই বৈঠকের বিষয়ে আগ্রহী। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্রে মোদির তিন দিনের সফর ব্যস্ত সময়সূচীতে পরিপূর্ণ থাকবে।

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, মোদি আগামী ২১ সেপ্টেম্বর তিন দিনের সফরে যুক্তরাষ্ট্র যাবেন। জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে বক্তৃতা করার পাশাপাশি চতুর্দেশীয় জোট ‘কোয়াড’-এর শীর্ষবৈঠক এবং ভারতীয় বংশোদ্ভূত ও প্রবাসী ভারতীয়দের সভায় তিনি যোগ দেবেন বলে দিল্লির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে। এই ব্যস্ততার মধ্যে বাংলাদেশের নতুন সরকারের প্রধানের সঙ্গে সাক্ষাৎ হচ্ছে না তার।

হিন্দুস্তান টাইমস লিখেছে, চলতি মাসের শুরুর দিকে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে এই বৈঠকের অনুরোধ করা হয়। দুই নেতাই যেহেতু জাতিসংঘ সম্মেলনে যোগ দিতে যাচ্ছেন, তাই আশা করা হচ্ছিল, অধিবেশনের ফাঁকে আলোচনার সুযোগ আসবে। এর মাধ্যমে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পদত্যাগের পর থেকে দু’দেশের সম্পর্কে মধ্যে তৈরি হওয়া অস্বস্তির অবসান হতে পারে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে এই বিষয়ে অবগত ব্যক্তিরা এসব কথা বলেছেন।

উল্লিখিত ব্যক্তিদের একজন বলেছেন, ‘সাধারণ পরিষদের বৈঠকের ফাঁকে কয়েকটি দ্বিপাক্ষিক বৈঠকের পরিকলনা রয়েছে প্রধানমন্ত্রীর (মোদি)। তবে বাংলাদেশের অন্তর্র্বতীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে কোনও বৈঠকের জন্য আলাদা করে সময় রাখা হয়নি।’

ব্যস্ত শিডিউল ছাড়াও, বিভিন্ন সময় ভারতের সমালোচনা করে ড. ইউনূস ও অন্যান্য উপদেষ্টাদের মন্তব্য নয়াদিল্লি ভালোভাবে নেয়নি বলেও ধারণা করা হচ্ছে বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে। সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে ড. ইউনূস শেখ হাসিনার সমালোচনা করে বলেছিলেন, বাংলাদেশ তার প্রত্যর্পণ চাওয়ার আগ পর্যন্ত ভারত তাকে রাখতে পারে, তবে তাকে বাংলাদেশের বিষয়ে চুপ থাকতে হবে। একই সাক্ষাৎকারে তিনি আরও বলেছিলেন, একমাত্র শেখ হাসিনার শাসনেই সংখ্যালঘুরা নিরাপদ ও আওয়ামী লীগ বাদে বাকি সবাই ইসলামপন্থি- এই প্রচলিত আখ্যান থেকে ভারতকে বেরিয়ে আসতে হবে।

ভারতের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, শেখ হাসিনাকে আশ্রয় দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে খুবই স্বল্প সময়ের মধ্যে। তিনি বর্তমানে নিরাপদ ও গোপন একটি স্থানে আছেন। তার প্রত্যার্পণের বিষয়ে বাংলাদেশ অনুরোধ করলে কী পদক্ষেপ নেওয়া হতে পারে, এমন প্রশ্নের জবাব দিতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে ভারতীয় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।

ওয়াশিংটনভিত্তিক উইলসন সেন্টারের দক্ষিণ এশিয়া ইনস্টিটিউটের পরিচালক মাইকেল কুগেলম্যান বলেছেন, ঢাকার সঙ্গে দিল্লির সম্পর্ক খুবই স্পর্শকাতর একটি বিষয়ে পরিণত হয়েছে। এখন বাংলাদেশের অন্তর্র্বতী সরকারের সঙ্গে উচ্চ পর্যায়ে কথা বললে ভারতকে এমন কিছু বিষয়ের ওপর নজর দিতে হবে। যেটি তারা এখন আলোচনায় রাখতে চাইবে না।

 

Tag :

আবহাওয়া

বৈরী আবহাওয়ার কারণে আগৈলঝাড়ায় ছাতার কারিগরদের ব্যাপক কদর

যুক্তরাষ্ট্রে ড. ইউনূসের সঙ্গে মোদির বৈঠক হচ্ছে না

প্রকাশের সময় : ১২:৪১:৫৫ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : 

আগামী সপ্তাহে জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনের ফাঁকে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বৈঠক হচ্ছে না বলে জানিয়েছে ভারতের গণমাধ্যম।

এ বিষয়ের সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের বরাতে ভারতের সংবাদ মাধ্যম হিন্দুস্তান টাইমস বৃহস্পতিবার (১৯ সেপ্টেম্বর) এ তথ্য জানিয়েছে।

জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে যোগ দিতে আগামী সপ্তাহে যুক্তরাষ্ট্রে যাচ্ছেন ড. মুহাম্মদ ইউনূস ও নরেন্দ্র মোদি।

সাধারণ পরিষদের বৈঠকের সাইডলাইনে ভারতীয় প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকের জন্য এই মাসের শুরুর দিকে নয়াদিল্লির কাছে আনুষ্ঠানিক অনুরোধ জানিয়েছিল ঢাকা।

সংবাদমাধ্যমটি বলছে, এই মাসের শুরুর দিকে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের সাইডলাইনে ড. মুহাম্মদ ইউনূস ও নরেন্দ্র মোদির মধ্যে বৈঠকের জন্য আনুষ্ঠানিক অনুরোধ করা হয়েছিল। বিষয়টি সম্পর্কে অবগত ব্যক্তিরা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেছেন, শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর থেকে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কে যে টানাপোড়েন দেখা দিয়েছে তা দূর করতে সাহায্য করবে এই আশায় ঢাকা এই বৈঠকের বিষয়ে আগ্রহী। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্রে মোদির তিন দিনের সফর ব্যস্ত সময়সূচীতে পরিপূর্ণ থাকবে।

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, মোদি আগামী ২১ সেপ্টেম্বর তিন দিনের সফরে যুক্তরাষ্ট্র যাবেন। জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে বক্তৃতা করার পাশাপাশি চতুর্দেশীয় জোট ‘কোয়াড’-এর শীর্ষবৈঠক এবং ভারতীয় বংশোদ্ভূত ও প্রবাসী ভারতীয়দের সভায় তিনি যোগ দেবেন বলে দিল্লির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে। এই ব্যস্ততার মধ্যে বাংলাদেশের নতুন সরকারের প্রধানের সঙ্গে সাক্ষাৎ হচ্ছে না তার।

হিন্দুস্তান টাইমস লিখেছে, চলতি মাসের শুরুর দিকে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে এই বৈঠকের অনুরোধ করা হয়। দুই নেতাই যেহেতু জাতিসংঘ সম্মেলনে যোগ দিতে যাচ্ছেন, তাই আশা করা হচ্ছিল, অধিবেশনের ফাঁকে আলোচনার সুযোগ আসবে। এর মাধ্যমে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পদত্যাগের পর থেকে দু’দেশের সম্পর্কে মধ্যে তৈরি হওয়া অস্বস্তির অবসান হতে পারে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে এই বিষয়ে অবগত ব্যক্তিরা এসব কথা বলেছেন।

উল্লিখিত ব্যক্তিদের একজন বলেছেন, ‘সাধারণ পরিষদের বৈঠকের ফাঁকে কয়েকটি দ্বিপাক্ষিক বৈঠকের পরিকলনা রয়েছে প্রধানমন্ত্রীর (মোদি)। তবে বাংলাদেশের অন্তর্র্বতীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে কোনও বৈঠকের জন্য আলাদা করে সময় রাখা হয়নি।’

ব্যস্ত শিডিউল ছাড়াও, বিভিন্ন সময় ভারতের সমালোচনা করে ড. ইউনূস ও অন্যান্য উপদেষ্টাদের মন্তব্য নয়াদিল্লি ভালোভাবে নেয়নি বলেও ধারণা করা হচ্ছে বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে। সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে ড. ইউনূস শেখ হাসিনার সমালোচনা করে বলেছিলেন, বাংলাদেশ তার প্রত্যর্পণ চাওয়ার আগ পর্যন্ত ভারত তাকে রাখতে পারে, তবে তাকে বাংলাদেশের বিষয়ে চুপ থাকতে হবে। একই সাক্ষাৎকারে তিনি আরও বলেছিলেন, একমাত্র শেখ হাসিনার শাসনেই সংখ্যালঘুরা নিরাপদ ও আওয়ামী লীগ বাদে বাকি সবাই ইসলামপন্থি- এই প্রচলিত আখ্যান থেকে ভারতকে বেরিয়ে আসতে হবে।

ভারতের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, শেখ হাসিনাকে আশ্রয় দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে খুবই স্বল্প সময়ের মধ্যে। তিনি বর্তমানে নিরাপদ ও গোপন একটি স্থানে আছেন। তার প্রত্যার্পণের বিষয়ে বাংলাদেশ অনুরোধ করলে কী পদক্ষেপ নেওয়া হতে পারে, এমন প্রশ্নের জবাব দিতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে ভারতীয় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।

ওয়াশিংটনভিত্তিক উইলসন সেন্টারের দক্ষিণ এশিয়া ইনস্টিটিউটের পরিচালক মাইকেল কুগেলম্যান বলেছেন, ঢাকার সঙ্গে দিল্লির সম্পর্ক খুবই স্পর্শকাতর একটি বিষয়ে পরিণত হয়েছে। এখন বাংলাদেশের অন্তর্র্বতী সরকারের সঙ্গে উচ্চ পর্যায়ে কথা বললে ভারতকে এমন কিছু বিষয়ের ওপর নজর দিতে হবে। যেটি তারা এখন আলোচনায় রাখতে চাইবে না।