নিজস্ব প্রতিবেদক :
বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র যে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে তা একপেশে বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এবং তথ্যমন্ত্রী ও ড. হাছান মাহমুদ। যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচন নিয়েও প্রশ্ন আছে বলে দাবি করেন তিনি।
বুধবার (২২ মার্চ) সকালে সচিবালয়ে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে বাংলাদেশ ফেডারেল ইউনিয়ন অব নিউজপেপার প্রেস ওয়ার্কার্স ও বাংলাদেশ সংবাদপত্র কর্মচারী ফেডারেশনের নেতৃবৃন্দদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী এ মন্তব্য করেন।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের যে প্রতিবেদন সেই প্রতিবেদনটি আসলে একপেশে এবং পক্ষপাতদুষ্ট সূত্র থেকে তারা তথ্যগুলো সংগ্রহ করেছে। তারা সরকারবিরোধী বিভিন্ন এনজিও প্রতিষ্ঠান থেকে তথ্যগুলো সংগ্রহ করেছে। সুতরাং সেই প্রতিবেদনটা একপেশে। আর নির্বাচন নিয়ে যে কথা সেটি হচ্ছে- মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচন নিয়েওতো অনেক প্রশ্ন আছে। ডোনাল্ড ট্রাম্প তো এখনো নির্বাচনের পরাজয় মেনে নেয়নি। সেটার প্রেক্ষিতে ডোনাল্ড ট্রাম্পের নেতৃত্বে যেভাবে ক্যাপিটল হিলে হামলা হয়েছে, সে ধরনের ন্যাক্কারজনক ঘটনাতো আমাদের দেশে কখনো ঘটে নাই।
হাছান মাহমুদ বলেন, নির্বাচন নিয়ে প্রশ্ন করার আগে এবং প্রশ্ন তোলার আগে তাদের নির্বাচনী ব্যবস্থা নিয়ে যে প্রশ্নগুলো আছে বা তাদের নির্বাচন হওয়ার পর ক্যাপিটল হিলে যে হামলা হয়েছিল সেই বিষয়গুলোর দিকে তাদের তাকানো প্রয়োজন বলে আমি মনে করি। এখন ভবিষ্যতে দেখতে হবে যে, অন্য কোনো বড় দেশ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মানবাধিকার কিংবা নির্বাচনী ব্যবস্থা নিয়ে প্রতিবেদন দেয় কি না। সেটিও দেখার বিষয়।
তিনি বলেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র মাঝেমধ্যে বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড নিয়ে কথা বলে। দেখুন, যুক্তরাষ্ট্রে বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড সবচেয়ে বেশি। ২০১৩ থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত দেশটিতে পুলিশের গুলিতে ৭ হাজার ৬৬৬ জন নিহত হয়েছেন। ২০২০ সালে ৯৯৬ জন। ২০২১-২২ সালে গড়ে এক হাজার জন। যে দেশে বছরে গড়ে এক হাজার মানুষ পুলিশের গুলিতে মারা যায় সে দেশের সরকার অন্য দেশের বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড নিয়ে প্রশ্ন তোলার নৈতিক অধিকার কতটুকু রাখে, সেটিই হচ্ছে প্রশ্ন।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড আমাদের দেশে যে কখনো হয় না আমি সেটি বলছি না। অবশ্যই বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড মাঝেমধ্যে হয়। তবে সেগুলোর তদন্ত এবং তদন্ত সাপেক্ষে শাস্তিরও বিধান করা হয়।
বাংলাদেশ ফেডারেল ইউনিয়ন অব নিউজ পেপার প্রেস ওয়ার্কার্স ও বাংলাদেশ সংবাদপত্র কর্মচারী ফেডারেশনের নেতাদের উদ্দেশ্যে তথ্যমন্ত্রী বলেন, প্রথমতো আপনারা দুটি দাবি দিয়েছেন, যেগুলো আমি সিরিয়াসলি দেখব। একটা হচ্ছে করোনাকালীন তারা কোনো সহায়তা পায়নি। প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ তহবিল থেকে কিছু করা যায় কি না সেটি আমি দেখছি। আরেকটি হচ্ছে পিআইবিতে ট্রেনিং যদি আগে হয়ে থাকে এখন কেন হবে না। এ দুটি দাবি আপনারা বলেছেন- আরেকটি হচ্ছে বিভিন্ন পত্রিকা বেতন দিচ্ছে না। কোন কোন পত্রিকা বেতন দেয়নি সেটা লিখে দেন।
তিনি বলেন, আমরা মন্ত্রণালয় থেকে তাদেরকে বলতে পারব। প্রয়োজনে সেখানে চিঠিও দেওয়া যাবে। নবম ওয়েজবোর্ড মনিটরিং কমিটি সচল করা দরকার।
মন্ত্রী বলেন, করোনাকালীন সহায়তা এখনো চলছে, বন্ধ হয়নি। আরেকটা হচ্ছে পিআইবির ট্রেনিং। এ দুটো বিষয় সমাধানযোগ্য। অন্যান্য বিষয়গুলো খতিয়ে দেখে যতোটুকু করা সম্ভব চেষ্টা করব।
এসময় বাংলাদেশ সংবাদপত্র কর্মচারী ফেডারেশনের মতিউর রহমান তালুকদার, মো. বজলুর রহমান মিলন, মো. খায়রুল ইসলাম, মো. তানভীর হোসাইন, মো. আমিনুল ইসলাম, মো. আব্দুল গফুর, মো. রফিকুল ইসলাম, হাবিবুল্লাহ, মো. শাহাদাত হোসেন, আব্দুল কাদির, মো. হামিদুর রশিদ খান, বাংলাদেশ ফেডারেল ইউনিয়ন অব নিউজ পেপার প্রেস ওয়ার্কার্সের মো. আলমগীর হোসেন খান, শামীম চৌধুরী, মো. কামাল উদ্দিন, মো. রাজ্জাক পাটোয়ারি, এ এইচ এম নাজমুল আহসান, মো. মোস্তাক আহমদ, তাজাম্মেল হক, মো. ইফসুফ আলী, মো. আবদুল মান্নান, মো. আতিউর রহমান, মো. লিয়াকত আলী উপস্থিত ছিলেন।