আন্তর্জাতিক ডেস্ক :
যুক্তরাজ্যে ছেলে শিশুদের সবচেয়ে জনপ্রিয় নাম হিসেবে শীর্ষে উঠে এসেছে ‘মুহাম্মদ’। দেশটির সরকারি সংস্থা অফিস ফর ন্যাশনাল স্ট্যাটিস্টিকসের (ওএনএস) এক জরিপে এ তথ্য উঠে এসেছে।
বৃহস্পতিবার (৫ ডিসেম্বর) রাতে এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০২৩ সালে ইংল্যান্ড ও ওয়েলসে ৪,৬৬১ নবজাতকের নাম রাখা হয়েছে মুহাম্মদ, যা ২০২২ সালের তুলনায় ৪৮৪ জন বেশি। একই সময়ে, ‘নোয়াহ’ নাম রাখা হয়েছে ৪,৩৮২ শিশুর, যা আগের বছরের তুলনায় কম।
মূলত ২০১৬ সাল থেকেই মুহাম্মদ নামটি সবচেয়ে জনপ্রিয় ১০টি নামের মধ্যে রয়েছে এবং ২০২২ সালে এই নামটি জনপ্রিয়তার দিক থেকে তালিকায় দ্বিতীয় স্থানে ছিল বলে অফিস ফর ন্যাশনাল স্ট্যাটিস্টিক্স-এর বার্ষিক তালিকায় বলা হয়েছে।
অন্যদিকে জর্জকে সরিয়ে তৃতীয় জনপ্রিয় নাম হিসেবে স্থান পেয়েছে অলিভার। আর মেয়ে শিশুদের জন্য ২০২৩ সালে শীর্ষ তিনটি জনপ্রিয় নাম ছিল অলিভিয়া, অ্যামেলিয়া এবং ইসলা। এই তিনটি নামই আগের বছরের থেকেই অপরিবর্তিত রয়েছে।
অফিস ফর ন্যাশনাল স্ট্যাটিস্টিক্স বলেছে, ব্রিটিশ রাজপরিবারের সদস্যদের বিভিন্ন নাম, যেমন চার্লস, জর্জ এবং হ্যারি বর্তমানে আগের তুলনায় কম জনপ্রিয় হয়ে উঠছে।
মূলত ২০১৬ সাল থেকেই মুহাম্মদ নামটি সবচেয়ে জনপ্রিয় ১০টি নামের মধ্যে রয়েছে এবং নামের বানানের বিষয়টি বিবেচনা করলে এই পরিসংখ্যান সহজে বদলে যেত। তখন মুহাম্মদ নামটি হয়তো নামের তালিকার শীর্ষে থাকত।
২০১৭ সালের পরিসংখ্যানে দেখা যাচ্ছে, সে বছর ইংল্যান্ডে জন্ম নেয়া শিশুদের নামের তালিকার শীর্ষে ছিল অলিভার। ৬ হাজার ২৯৫ জনের নাম রাখা হয়েছিল অলিভার। আর সেসময় নামের তালিকার ১০ নম্বরে ছিল মুহাম্মদ। ৩ হাজার ৬৯১ টি শিশুর নাম রাখা হয়েছিল মুহাম্মদ।
২০১৮ সালে এক প্রতিবেদনে বিবিসি বলেছে, কিন্তু ইংরেজিতে মুহাম্মদ নামের বানান করা হয়েছে ১৪ রকম ভাবে। যেমন— মুহাম্মদ, মহম্মদ, মোহামেদ, মোহাম্মদ ইত্যাদি। ফলে সরকারি তালিকায় এগুলো ভিন্ন ভিন্ন নাম হিসাবে বিবেচিত হয়েছে।
হিসাব করে দেখা গেছে, একভাবে যদি এই নামের বানানটি লেখা হতো তাহলে ২০১৭ সালে মুহাম্মদ নাম রাখা শিশুর সংখ্যা হতো ৭ হাজার ৩০৭। অর্থাৎ অলিভারের চাইতে এক হাজারেরও বেশি শিশুর নাম হতো মুহাম্মদ। আর এতে করে সেবছরই মুহাম্মদ হতো ইংল্যান্ডের সবচেয়ে জনপ্রিয় নাম।
মেয়ে শিশুদের ক্ষেত্রেও একই নামের বানান ভিন্ন ভিন্ন হওয়ায় তালিকাতে সেগুলোর নাম আলাদা ভাবেই দেওয়া হয়। যেমন ২০১৬ সালে সবচেয়ে বেশি মেয়ে শিশুর নাম রাখা হয়েছিল— অ্যামেলিয়া। কিন্তু সোফিয়া নামটির ইংরেজি বানান ভিন্ন ভিন্নভাবে না লেখা হলে সেবছর সোফিয়া নামটিই থাকত শীর্ষে।
সংস্থাটির বিশ্লেষণে আরো উঠে এসেছে, আরবি নামগুলোর জনপ্রিয়তা দ্রুত বাড়ছে। ছেলেদের মধ্যে ‘আয়মান’ ও ‘হাসান’ নামের জনপ্রিয়তা যথাক্রমে ৪৭ শতাংশ ও ৪৩ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। মেয়েদের ক্ষেত্রে আরবি নামের প্রভাবও উল্লেখযোগ্য। উদাহরণস্বরূপ, ‘আইজাল’ নামটির জনপ্রিয়তা ৪৮ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে।