নিজস্ব প্রতিবেদক :
জাতীয়তাবাদী গণতান্ত্রিক আন্দোলনের (এনডিএম) চেয়ারম্যান ববি হাজ্জাজ বলেছেন, ৫ আগস্ট পর্যন্ত আওয়ামী লীগকে যে গণহত্যা চালিয়েছে তাদেরকে অন্তত ১০ বছরের জন্য নিষিদ্ধ করতে হবে। জাতীয় পার্টি ১৪ দলের অংশ তাদেরকেও নিষিদ্ধ করতে হবে। যারা হাসিনার দোসর ও গণহত্যার সহযোগী তাদের রাজনীতি করার অধিকার নাই।
মঙ্গলবার (২৪ সেপ্টেম্বর) জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে জাতীয়তাবাদী গণতান্ত্রিক আন্দোলন-এনডিএম আয়োজিত এক বিক্ষোভ সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ সম্পর্কে ভারত অনেক নোংরা নোংরা কথা বলছে। তারা নাকি বাংলাদেশিদের উল্টো করে ঝুলাবে। অথচ ৫ আগস্টের পরও তারা বাংলাদেশ নিয়ে এমন কথা বলেনি। এখন এই সাহস তারা পেয়েছে এই সরকারের কারণে। কারণ তারা সীমান্তে হত্যাকাণ্ড নিয়ে কোনো প্রশ্ন তুলতে পারেনি। অন্তর্বর্তীকালীন সরকার আসছে আমাদের মাধ্যমে, ছাত্র-জনতার মাধ্যমে, আমাদের কথা তাদের শুনতে হবে।
ববি হাজ্জাজ বলেন, শেখ হাসিনাকে দেশে ফিরিয়ে এনে গণহত্যার দায়ে তার বিচার করতে হবে। আমরা প্রস্তুত এই অন্তর্র্বতী সরকারকে সহযোগিতা করার জন্য। কোনো ভুলের কারণে যেন অন্তর্বর্তী সরকার ব্যর্থ না হয়। আমরা তাদের ভুল ধরিয়ে দিব।
এনমডিএম চেয়ারম্যান বলেন, কোনো ধরনের প্রতিবিপ্লব হতে দেয়া হবে না। ৫ আগস্টের পর আমরা নতুন বাংলাদেশ পেয়েছি। এই দেশকে আমাদের রক্ষা করতে হবে। আমরা অন্তর্বর্তী সরকারের সাথে আছি।
ববি হাজ্জাজ বলেন, শেখ হাসিনার ব্যাপারে চুপ থাকার সুযোগ নেই। ভারতের সঙ্গে বন্দি প্রত্যর্পণ চুক্তি অনুযায়ী অবিলম্বে তাকে ফেরত চাইতে হবে। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনালে ফ্যাসিস্ট হাসিনার বিচার হতে হবে।
ট্রাইবুনালের আইন সংশোধনের উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়ে তিনি বলেন, সংশোধিত আইন অনুযায়ী সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে গণহত্যা এবং গুমের দায়ে আওয়ামী লীগ এবং দলটিকে গণহত্যার ক্ষমতায়নের জন্য ১৪ দল এবং জাতীয় পার্টিরও বিচার হতে হবে।
তিনি আরও বলেন, পাঠ্যক্রম সংশোধন কমিটিতে এ সংক্রান্ত বিশেষজ্ঞ এবং বিজ্ঞ আলেমদের অন্তর্ভুক্ত করে বিতর্ক এড়াতে হবে।
ববি হাজ্জাজ বলেন, বিগত আওয়ামী ফ্যাসিস্ট সরকার ভারতের ক্রীড়নক সরকার হিসেবে ভূমিকা রাখায় গত সাড়ে ১৫ বছরে উদ্বেগজনকভাবে সীমান্তে বাংলাদেশি হত্যার ঘটনা ঘটেছে। বিএসএফ কর্তৃক কিশোরী ফেলানী থেকে স্বর্ণা দাস বা জয়ন্ত কুমারের হত্যা আমাদের সার্বভৌমত্বের ওপর আঘাত। বিভিন্ন মানবাধিকার সংগঠনের তথ্য মতে, এইসময়ে ভারতীয় বিএসএফ কর্তৃক ছয় শতাধিক বাংলাদেশিকে হত্যা করা হয়েছে। তথাপি ভারতের প্রতিরক্ষামন্ত্রী বা ক্ষমতাসীন বিজেপির শীর্ষনেতাদের বিভিন্ন তীর্যক মন্তব্য আমাদের জন্য মর্যাদাহানিকর।
এনডিএম চেয়ারম্যান বলেন, ভারতের সঙ্গে এতদিন ছিল ফ্যাসিস্ট হাসিনার সম্পর্ক। ভারত সরকারকে আমরা সতর্ক করে বলতে চাই, সীমান্তে হত্যাকাণ্ড বন্ধ না করলে বাংলাদেশের সঙ্গে আপনাদের সম্পর্ক কখনোই সুখকর হবে না। বর্তমান সরকারকে নিশ্চিত করতে হবে এখন থেকে ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক হতে হবে।
বিক্ষোভ সমাবেশে আরও বক্তব্য রাখেন দলের নির্বাহী কমিটির সদস্য অধ্যক্ষ আব্দুল হাদি, এজানুর রহমান, অ্যাডভোকেট নূর উল্লাহ, ছাত্র আন্দোলনের সভাপতি মাসুদ রানা জুয়েল প্রমুখ। সঞ্চালনায় ছিলেন দলের দপ্তর সম্পাদক জাবেদুর রহমান জনি।