নিজস্ব প্রতিবেদক :
ওয়ান ইলেভেনের কুশীলবরা আবার সক্রিয় হয়েছে বলে মন্তব্য করে তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, যারা ষড়যন্ত্র করে, তারা ষড়যন্ত্র না করে থাকতে পারে না। ষড়যন্ত্র সব সময় থাকবে। তারা আবার ষড়যন্ত্র করে কিছু করতে পারে কি না সে চেষ্টা করছে। তারা তো বারবার ব্যর্থ হয়েছে, এখনও ব্যর্থ হবে।
রোববার (৩ সেপ্টেম্বর) দুপুরে সচিবালয়ে মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে সমসাময়িক বিষয় নিয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এমন মন্তব্য করেন।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, সাড়ে চৌদ্দ বছরে ষড়যন্ত্র কী কম হয়েছে? বিডিআর বিদ্রোহ থেকে শুরু করে এখনো পর্যন্ত ষড়যন্ত্র বহু হয়েছে। সমস্ত ষড়যন্ত্রকে পদদলিত করে, ষড়যন্ত্রের জাল ছিন্ন করে দেশ এগিয়ে গেছে। জননেত্রী শেখ হাসিনা পরপর তিনবার দেশ পরিচালনার দায়িত্বে রয়েছেন জনগণের ম্যান্ডেট নিয়ে। ভবিষ্যতে ষড়যন্ত্র থাকবে, সেগুলো ছিন্ন করে আমরা এগিয়ে যাব।
আওয়ামী লীগ নির্বাচনী প্রস্তুতি শুরু করেছে জানিয়ে দলটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘নির্বাচন কমিশন যে সময় তফসিল ঘোষণা করবে আমরা বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ সে অনুযায়ী নির্বাচন করার জন্য প্রস্তুত আছি। আমাদের প্রস্তুতি চলছে।’
বিএনপির সমালোচনা করে তিনি বলেন, ‘বিএনপির উদ্দেশ্য হচ্ছে, সাংবিধানিক ধারাবাহিকতা, গণতন্ত্রকে ভূলুণ্ঠিত করা। যেটি তারা ২০১৪ সালে করার চেষ্টা করেছিল। ২০১৮ সালের নির্বাচনে গিয়েও নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করার চেষ্টা করেছে।’
হাছান মাহমুদ বলেন, তাদের ১৪ সালের সেই ধরনের প্রচেষ্টা করা কখনো সম্ভবপর নয়। সে অপচেষ্টা চালালে দেশের জনগণ প্রতিহত করবে। বিএনপি নেতারা নির্বাচন বর্জন করতে পারে। যেকোনো রাজনৈতিক দলের নির্বাচন বর্জন করার বা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করার অধিকার আছে। আমি যেটি মনে করি, বিএনপি যদি একটি দায়িত্বশীল দল হয় তাহলে অবশ্যই তাদের নির্বাচনে অংশগ্রহণ করা উচিত। কারণ গণতন্ত্রকে সংহত করা শুধু সরকারি দলের দায়িত্ব নয়। গণতন্ত্রকে সংহত করা, গণতন্ত্রের অভিযাত্রাকে অব্যাহত রাখা সব রাজনৈতিক দলের দায়িত্ব।
আরেক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, ফেসবুকে আমি দেখলাম যে ড. ইউনুস তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান হচ্ছেন, আবার ফেসবুকে এটাও দেখেছি বিএনপি হিরো আলমকে পছন্দ করেছে। আসলে এগুলো ফেসবুকের প্রচার অপপ্রচার যাই বলেন, এগুলো নিয়ে আমি মন্তব্য করতে চাই না।
তিনি বলেন, কেউ নোবেল পুরস্কার পেলে কিংবা রাষ্ট্রপ্রধান হলে বা প্রধানমন্ত্রী হলে তিনি তো আইনের ঊর্ধ্বে নয়। এ দেশে সাবেক প্রধানমন্ত্রীর বিচার হয়েছে এবং সাজা ভোগ করছেন। পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে নোবেল বিজয়ীদের বিচার হয়েছে এবং তারা জেলও খেটেছে। এমন উদাহরণ আছে। আমাদের বিচার প্রক্রিয়া অত্যন্ত স্বচ্ছ।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, মোহাম্মদ ইউনুসের প্রতি যথাযথ শ্রদ্ধা রেখে বলছি, সত্যটা হচ্ছে এই শ্রমিকদের ৫ শতাংশ হারে লভ্যাংশ দেওয়ার কথা ছিল, যেটির মূল্য হচ্ছে ১২০০ কোটি টাকা। সেটি তিনি জালিয়াতির মাধ্যমে এবং ঘুষ দিয়ে ৪০০ কোটি টাকায় নামিয়েছিলেন। সেটিও তিনি দেনি। সে জন্য বিচার হচ্ছে। আরও অনেক মামলা রয়েছে। কেউ তো আইনের বা বিচারের ঊর্ধ্বে নয়। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিচার হচ্ছে। আমাদের দেশের বিচার প্রক্রিয়া নিয়ে বিবৃতি দেওয়া দেশের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্বের ওপর হস্তক্ষেপের শামিল। সে জন্য বাংলাদেশের সচেতন নাগরিক সমাজ এবং সাংবাদিকরা এর বিরুদ্ধে বিবৃতি দিয়েছেন।