নিজস্ব প্রতিবেদক :
যারা নির্বাচন নিয়ে টালবাহানা করছেন তারা ফ্যাসিবাদ ও স্বৈরতন্ত্রকে ফিরিয়ে আনতে চান বলে জানিয়েছেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু।
বৃহস্পতিবার (১৪ আগস্ট) জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে অপরাজেয় বাংলাদেশের উদ্যোগে জাতীয় সংসদ নির্বাচন বানচালের ষড়যন্ত্রের প্রতিবাদে এক প্রতীকী যুব সমাবেশে তিনি এ কথা বলেন।
দুদু বলেন, যথাসময়ে, সঠিক সময়ে জাতীয় সংসদ নির্বাচন হতে হবে। ফ্যাসিবাদ নতুন করে মাথাচাড়া দিয়ে উঠতে চাইছে। আপনারা লক্ষ্য করবেন দেশের ভেতরে এবং দেশের বাইরে ফ্যাসিবাদ ও তার দোসররা মিডিয়াতে যেভাবে কথা বলছে, যেভাবে চলাফেরা করছে, সেটা গণতন্ত্রের জন্য অশুভ।
তিনি বলেন, স্বৈরতন্ত্রের পতন হয়েছে তার মানে এই নয় আমরা সবকিছু অর্জন করে ফেলেছি। স্বৈরতন্ত্রের পতন হয়েছে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্য, স্বাধীনতা, অধিকারের জন্য। যদি সেই গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করা না যায় তাহলে অধিকারও প্রতিষ্ঠা হবে না। আর সেই গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করতে হলে গ্রহণযোগ্য, সুষ্ঠু, ভালো নির্বাচন হওয়া দরকার।
ছাত্রদলের সাবেক এই সভাপতি বলেন, আগামী ফেব্রুয়ারি মাসে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ঘোষণা হয়েছে। ফেব্রুয়ারি মাসের মধ্যেই নির্বাচন হতে হবে। আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষকরা জানে, দেশের পর্যবেক্ষক, দেশের মানুষ জানে ডিসেম্বরেই নির্বাচন করা সম্ভব ছিল। তারপরেও সরকারপ্রধান ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন ফেব্রুয়ারি মাসে তিনি ঐতিহাসিক একটি নির্বাচন করতে চান। সেই বিবেচনায় আমরা ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন মেনে নিয়েছি। তবুও সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে। ফেব্রুয়ারি মাস যেন কোনোভাবে ক্রস না করে।
সংস্কার চলমান প্রক্রিয়া পরবর্তী সময়ে যে সরকার আসবে সে সরকার সংস্কার করবে জানিয়ে তিনি বলেন, শেখ হাসিনা গত তিনটি নির্বাচনে দেশের মানুষকে ভোট দিতে দেয়নি। দেশের মানুষ ভোট দিতে পারেনি। সে স্বৈরতন্ত্র কায়েম করেছিল। দেশে গণহত্যা চালিয়েছে। তার বিচার এবং দেশের সংস্কার চলমান প্রক্রিয়া। এই প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে নির্বাচন হতে হবে। দেশে নির্বাচিত সরকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে। সেই নির্বাচিত সরকার শেখ হাসিনার বিচার করবে এবং দেশ থেকে যত টাকা পাচার হয়েছে সব টাকা দেশে ফিরিয়ে আনবে। দেশের সংস্কার চালিয়ে যাবে।
কেউ যদি গণতন্ত্র ও নির্বাচন নিয়ে টালবাহানা করে তাহলে তারা ফ্যাসিবাদকে ফিরিয়ে আনতে চাইছে মন্তব্য করে সাবেক এই সংসদ সদস্য বলেন, কেউ যদি নির্বাচন নিয়ে টালবাহানা করে, গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করতে টালবাহানা করে, তাহলে বুঝতে হবে তারা ফ্যাসিবাদকে পুনরায় ফিরিয়ে আনতে চাইছে। তাই আমাদের সবাইকে সতর্ক করতে হবে।
তিনি বলেন, গত তিনটা নির্বাচনে শেখ হাসিনা গণতন্ত্রকে কবরস্থ করেছে। তিনি শুধু গণতন্ত্রকে কবরস্থ করেছেন তা নয় তিনি এখন গণহত্যাকারী। তিনি আমাদের ছেলেমেয়েদেরকে হত্যা করেছেন। অর্থাৎ গণহত্যার বিচার এবং পাচার হওয়া টাকা ফেরত আনা এটা একটা চলমান প্রক্রিয়া। এই প্রক্রিয়ার মধ্যেই নির্বাচন হতে হবে। নির্বাচিত সরকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে।
আলোচনা সভায় উপস্থিত ছিলেন বিএনপির ধর্মবিষয়ক সম্পাদক রফিকুল ইসলাম জামাল, নির্বাহী কমিটির সদস্য মাইনুল ইসলাম, আবু নাসের মো. রহমতুল্লাহ, রহিমা শিকদার, কর্মজীবী দলের সাধারণ সম্পাদক আলতাফ হোসেন, সংগঠনের সহ-সভাপতি এম এ আজাদ চয়নসহ প্রমুখ।