নিজস্ব প্রতিবেদক :
যতদিন জনগণ চাইবে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ততদিন গণভবনে থাকবেন। এমন মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
শুক্রবার (২৮ জুলাই) আওয়ামী লীগের সহযোগী ও ভ্রাতৃপ্রতিম তিন সংগঠন ছাত্রলীগ, যুবলীগ ও স্বেচ্ছাসেবক লীগের শান্তি সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন তিনি।
তিনি বলেন, বিএনপির এক দফা নয়াপল্টনের কাদা পানিতে আটকে গেছে। তারেক রহমান লন্ডন থেকে বলছেন, এখানে ফখরুল-আমীর খসরুরা বলেন গণভবন ছেড়ে দিতে হবে। গণভবন কি তোমার বাবার? জনগণ শেখ হাসিনাকে গণভবনে বসিয়েছে। জনগণ যতদিন চাইবে ততদিন শেখ হাসিনা গণভবনে থাকবেন।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, তারেক রহমান তোমার বাবা দম্ভ ভরে বলেছিল, মানি ইজ নো প্রবলেম। কোথায় তোমার বাবা? তুমি তো ক্ষমতা দেখো নাই। ফুলের ভেতরেও সাপ আছে।
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বিরুদ্ধে খেলা হবে বলে ঘোষণা দিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, খেলা হবে, খেলা হবে তারেক রহমানের বিরুদ্ধে, ভোট চুরির বিরুদ্ধে, হাওয়া ভবনের বিরুদ্ধে, ভুয়া এক দফার বিরুদ্ধে। তারেক রহমান পুলিশকে ধমক দিচ্ছে। প্রশাসনকে ধমক দিচ্ছে। তারেক রহমান ফখরুলকে বলছে আন্দোলনের টাকার অভাব হবে না। তারেক রহমান এত টাকা পেল কোথায়? কোটি কোটি টাকা।
আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, লবিস্ট নিয়োগ করে টাকা দিয়ে। কিছুজনকে দিয়ে জাতিসংঘের, যুক্তরাষ্ট্রের অ্যাম্বাসেডরের কাছে চিঠি লেখে। এই দুঃসাহস তারা পেল কোথায়? হাজার হাজার কোটি টাকা পাচার করেছে।
তারেক রহমান ও বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে উদ্দেশ্যে করে কাদের বলেন, যত লাফালাফি, তাফালিং করেন কাজ হবে না। ক্ষমতার ময়ূর সিংহাসন অনেক দূরে চলে গেছে। ওটা পাবেন না। রাজনীতির খেলায় আওয়ামী লীগের সঙ্গে পারবেন না। আন্দোলনের রাজনীতির খেলায় আওয়ামী লীগ চ্যাম্পিয়ন। আন্দোলনে পারবেন না। নির্বাচনে তো আপনারা আসবেন না।
তিনি বলেন, চোখ রাঙাচ্ছেন? চোখ রাঙানোর দিন শেষ। শেখ হাসিনাকে গণভবন থেকে বের করবেন? আমরা চেয়ে চেয়ে ললিপপ খাবো?
কাদের বলেন, তারেকের বিরুদ্ধে খেলা হবে। খেলা হবে ভোট চুরির বিরুদ্ধে, ভোট ডাকাতির বিরুদ্ধে, ভুয়া তত্ত্বাবধায়কের বিরুদ্ধে, ভুয়া এক দফার বিরুদ্ধে।
কাদের বলেন, কারা কারা ঘন ঘন লন্ডনে যান। তারেক রহমানের হাতে ডলার তুলে দেন, আমরা জানি।
তারেক রহমানকে ‘চোর’ আখ্যা দিয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, গলি গলি ম্যা শোর হ্যায় তারেক রহমান চোর হ্যায় (গলিতে গলিতে রব উঠেছে, তারেক রহমান চোর)।
ওবায়দুল কাদের বলেন, এখন নাকি আপনারা (বিএনপি) রাস্তা বন্ধ করবেন। ঢাকার প্রবেশ মুখে অবস্থান নেবেন। আপনাদের চলার রাস্তাও বন্ধ করে দেব। চোখ রাঙাবেন না। আমাদের শিকড় এ মাটির অনেক গভীরে বলেও জানান তিনি।
সেতুমন্ত্রী বলেন, কারা কারা লন্ডনে যাচ্ছেন। নমিনেশনের জন্য, ভবিষ্যতে ব্যবসার জন্য তারেক রহমানের হাতে টাকা তুলে দিচ্ছেন। আমরা খবর রাখছি। সে-ই তো আসতে পারবে না। আপনাদের নমিনেশন দেবে কীভাবে?
তিনি বলেন, মুচলেকা দেওয়া, চোর তারেক রহমান মির্জা ফখরুলের নেতা। এ নেতা কেউ মানে? তারেককে ধরবে বাংলাদেশের মানুষ। লন্ডন থেকে যতই আস্ফালন করছে, ততই মানুষ তার ওপর ক্ষ্যাপছে। তারেক, ফখরুল, খসরুরা আইন মানে না। তারেক কথায় কথায় সুপ্রিম কোর্টকে হুমকি দিয়ে বক্তব্য দেয়। আমরা তার বিচার চাই। এত অহংকার ভালো নয়।
এতে সভাপতিত্বে করছেন যুবলীগের চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস পরশ। যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক মাইনুল হাসান খান নিখিল ও স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক আফজালুর রহমান বাবু যৌথভাবে সঞ্চালনা করছেন। সমাবেশে আরও অংশ নিয়েছেন আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক, আব্দুর রহমান, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক কৃষিবিদ আ ফ ম বাহাউদ্দীন নাছিম, সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম, দপ্তর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া, স্বেচ্ছাসেবক লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি গাজী মেজবাউল হোসেন সাচ্চু, সাধারণ সম্পাদক আফজালুর রহমান বাবু ও ছাত্রলীগের সভাপতি সাদ্দাম হোসেনসহ আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতারা।
সমাবেশ উপলক্ষে দুপুর থেকে রাজধানীর ঢাকার বিভিন্ন ইউনিট এবং দেশের বিভিন্ন জেলা শাখা থেকে তিন সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা মিছিল নিয়ে বায়তুল মোকাররমের দক্ষিণ গেটে আসেন। তবে, বৃষ্টিতে সমাবেশে উপস্থিত নেতাকর্মীরা কিছুটা বেকায়দায় পড়েন। কেউ কেউ আশপাশের এলাকায় আশ্রয় নেন। বিঘ্ন ঘটলেও অনেকে আবার ভিজেই স্পটে দাঁড়িয়ে থাকেন।