রংপুর জেলা প্রতিনিধি :
চামড়ার দাম যাতে নির্ধারিত দামের চেয়ে সাধারণ মানুষ কম না পায় সেজন্য সরকারের বিভিন্ন দফতর কাজ করছে। তারপরও ট্যানারি মালিকরা মৌসুমি ব্যবসায়ীদের ঠকালে কাঁচা চামড়া রফতানি করা হবে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি।
বুধবার (২৮ জুন) দুপুরে রংপুর নগরীর ধাপ সাগরপাড়া এলাকায় নিজ বাসভবনে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে তিনি এ কথা বলেন।
বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, মৌসুমি ব্যবসায়ীরা লবণ দিয়ে চামড়া সংরক্ষণ করলে সিন্ডিকেট হস্তক্ষেপ করতে পারবে না। এজন্য তাদের সজাগ থাকতে হবে।
ট্যানারি মালিকদের হুঁশিয়ারি দিয়ে বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি বলেছেন, কোরবানির পশুর চামড়ার ন্যায্যমূল্য বিশেষ করে সরকার নির্ধারিত দাম না দিলে আমরা কাঁচা চামড়া সরাসরি বিদেশে রফতানির অনুমতি দিতে বাধ্য হবো। এ ছাড়াও মানুষ যাতে পশুর চামড়ার ন্যায্যমূল্য পায় সে জন্য পুলিশসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও প্রশাসন এবার ঈদের পরপরই মাঠে থাকবে। কোনও ধরনের অনিয়ম দেখলে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
চামড়া ব্যবসায়ীদের সিন্ডিকেট চক্র আছে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, ট্যানারি মালিকদের মাঝামাঝি দালাল ফড়িয়ারা আছে, তারা চামড়ার দাম নেই ট্যানারি মালিকরা কম দাম দেয়- এসব মিথ্যা অজুহাত দিয়ে মানুষকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করে। সে জন্য এবার বলেছি, চামড়া কেনার পর লবণ লাগাতে হবে। কেননা লবণ ছাড়া চামড়া আট ঘণ্টার বেশি রাখা যায় না। এ সুযোগটা নেয় ব্যবসায়ীরা। সে কারণে লবণ লাগানো হলে দাম কম দেওয়ার সুযোগ নেই।
তিনি বলেন, মানুষ যাতে ন্যায্যমূল্য পায় সে জন্য আমরা এবার ঢাকা শহরে বাইরে থেকে কাঁচা চামড়া প্রবেশ বন্ধ করে দিয়েছি। চামড়া যাবে তবে লবণ লাগানোর পর। এতে করে লবণ লাগানো চামড়া ১০/১২ দিন রাখা যায়।
টিপু মুনশি বলেন, এবার একটি গরুর চামড়া ৮০০/৯০০ টাকা দাম নির্ধারণ করে দেওয়া হয়েছে। এর কম দামে চামড়া কিনলে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। একটা চামড়ায় ২০০ টাকার লবণ লাগে, সে বিবেচনা করে আমরা দাম নির্ধারণ করেছি।
তিনি বলেন, চামড়া বিক্রির টাকা সাধারণত মানুষ দান হিসেবে মসজিদ-মাদ্রাসা ও এতিমখানায় দেয়। এতে ঈদের সময় যে অর্থ আয় হয় তা দিয়ে তাদের ব্যয় অনেকটাই মেটানো যায়। এটা সওয়াবের কাজ এর মধ্যে ঠকানোর টেনডেনসি যারাই করবে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের উত্তরে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির কথা স্বীকার করে মন্ত্রী বলেন, ‘জিনিসপত্রের দাম বেড়েছে তাতে কোনও সন্দেহ নেই। এর কারণ কিছুটা বৈশ্বিক পরিস্থিতি আর কিছুটা অসাধু ব্যবসায়ীদের কারণে, তবে সরকার নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে।’
অপর এক প্রশ্নের জবাবে বলেন, পাটজাত পণ্য রফতানির ক্ষেত্রে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে থাকা বাংলাদেশের দূতাবাসগুলোতে শোকেজিং করা হচ্ছে। বিশ্বের বিভিন্ন জায়গায় আমাদের পাটজাত পণ্যগুলোর তথ্য প্রচার করা হচ্ছে। এ ছাড়া পলিথিন পরিবেশের জন্য খারাপ, তাই বৈশ্বিকভাবে পাটজাত পণ্যের ব্যবহার বেড়েছে। আমরা আশা করছি, ২/৩ বছরের মধ্যে আমাদের দেশের রফতানি পণ্যের মধ্যে পাট ২/৩ নম্বরে চলে আসবে।
সবজির দাম বাড়া প্রসঙ্গে বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, সবজির যে দাম বেড়েছে, তা কমে আসবে। কোরবানির পশু পরিবহনের কারণে সবজির পরিবহনের সমস্যা, যার কারণে দাম বেড়েছে। এই সংকট কেটে যাবে।