নিজস্ব প্রতিবেদক :
মাদক ও সন্ত্রাসীদের স্বর্গরাজ্যখ্যাত রাজধানীর মোহাম্মদপুরের জেনেভা ক্যাম্পে বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে মাদক ব্যবসায়ী, বিক্রেতা, অস্ত্রের জোগানদাতা ও ককটেল সংরক্ষণকারীসহ ৪০ জনকে গ্রেফতার করেছে ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি)।
রোববার (২১সেপ্টেম্বর) বেলা ১২টার দিকে মিন্টো রোডে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সন্মেলনে এসব তথ্য জানান ডিএমপির তেজগাঁও বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) মো. ইবনে মিজান।
শনিবার (২০ সেপ্টেম্বর) বিকাল ৪টা থেকে রোববার (২১ সেপ্টেম্বর) ভোর রাত পর্যন্ত অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করা হয়।
অভিযানে গ্রেফারকৃতদের কাছ থেকে ৮টি ককটেল, ২টি পেট্রোল বোমা, ৬টি সামুরাই, ৫টি হেলমেট, ৩টি ছুরি, ১১টি চোরাই মোবাইল ফোন, এবং ৫০০ গ্রাম হেরোইন জব্দ করা হয়।
মো. ইবনে মিজান বলেন, মোহাম্মদপুরের আলোচিত স্থান জেনেভা ক্যাম্পে নিয়মিতভাবে বিভিন্ন অপরাধ সংগঠিত হয়। মাদকের বিস্তারের জন্য এলাকাটি বেশ পরিচিত। আমরা (পুলিশ) নিয়মিতভাবে এখানে বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে আসছি। এরই ধারাবাহিকতায় গতকাল শনিবার (২০ সেপ্টেম্বর) বিকাল থেকে পরদিন ভোর রাত পর্যন্ত ১২০ জন পুলিশ সদস্য নিয়ে সেখানে অভিযান পরিচালনা করি। অভিযানে আমরা মাদক ব্যবসায়ী, মাদক বিক্রেতা, অস্ত্রের জোগানদাতা, ককটেল সংরক্ষণকারীসহ বিভিন্ন অপরাধের সাথে জড়িত ৪০ জনকে আটক করি।
তিনি বলেন, অভিযানে আমরা আটককৃতদের কাছ থেকে ৮টি ককটেল উদ্ধার করি। যেগুলো পরবর্তীতে ডিএমপির বোম্ব ডিস্ফোজাল ইউনিট ডিফিউজ করে। এছাড়া দুইটি পেট্রোল বোমা, ৬টি সামুরাই, ৫টি হেলমেট, ৩টি ছুরি, ১১টি চোরাই মোবাইল ফোন, এবং ৫০০ গ্রাম হেরোইন তাদের কাছ থেকে জব্দ করা হয়।
তিনি আরো বলেন, আটককৃতদের মধ্যে অনেকে জেনেভা ক্যাম্পের মাদক ব্যবসায়ী বুনিয়া সোহেল, পিচ্চি রাজা, চুয়া সেলিমের সহযোগী হিসেবে কাজ করে। তাদের জিজ্ঞাসাবাদে আরো অনেকের নাম উঠে এসেছে। আমরা তাদের বিরুদ্ধেও গ্রেফতার অভিযান পরিচালনা করবো। বিভিন্ন সময় জেনেভা ক্যাম্পে যে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরি হয়, সেটি যেনো ভবিষ্যতে না ঘটে সেজন্য ডিএমপি সদা তৎপর থাকবে।
জেনেভা ক্যাম্পে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করে মাদক ব্যবসায়ীদের গ্রেফতার করে। কিন্তু কয়েকদিন পরেই তারা আবার জেল থেকে বেরিয়ে একই অপকর্মে জড়ায়। জেনেভা ক্যাম্পে মাদক ব্যবসা নির্মুল করা যাচ্ছে না কেন- জানতে চাইলে তিনি বলেন, মাদক আমরা (পুলিশ) নিয়ন্ত্রণ করতে পারি, একেবারে নির্মুল করা সম্ভব না। বিভিন্ন অভিযানের মাধ্যমে আমরা মাদক ব্যবসায়ী ও মাদকসেবীদের নিয়ন্ত্রণে রাখি। আমরা এটিকে নিয়ন্ত্রণে রাখার সর্বোচ্চ চেষ্টা করবো। আশা করি আমরা কাঙ্খিত পর্যায়ে পৌঁছে যাবো।
মোহাম্মদপুরে অপরাধ বাড়ার কারণ কি জানতে চাইলে তিনি বলেন, ৫ আগস্টের পর মোহাম্মদপুরে অপরাধের চরম বিস্ফোরণ ঘটেছে। যেসব অপরাধী বাইরে ছিল তারাও চলে এসেছে। অনেক অপরাধ সেখানে ঘটেছে। তারপর আমরা লাগাতার মোহাম্মদপুরে অভিযান চালিয়ে আসছি। গত ৬-৭ মাসে আমরা ৩ হাজারের বেশি অপরাধীকে আইনের আওতায় এনেছি। আমরা চেষ্টা করেছি প্রতিদিন যেসব এলাকায় অপরাধীদের বিচরণ রয়েছে সেখানে অভিযান পরিচালনা করতে। এর ফলে বেশি অপরাধ হওয়া জায়গায় অপরাধ কমে গেছে। আমাদের অভিযান চলমান রয়েছে। আশা করি পরিস্থিতি আরো ভালো হবে।