Dhaka মঙ্গলবার, ১৪ অক্টোবর ২০২৫, ২৯ আশ্বিন ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

মোরেলগঞ্জে সেতুর অভাবে দুর্ভোগে ১০ গ্রামের মানুষ

নিজস্ব প্রতিবেদক  :

বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জে বড়পরী গ্রামের দুই প্রান্তে তিন হাজার মানুষের বসবাস। গ্রামের মাঝ দিয়ে বয়ে গেছে বড় খাল। খালের দুই প্রান্তে সংযোগ তৈরি করেছে বাঁশের সাঁকো। ৩৬ বছর ধরে ঝুঁকি নিয়ে সাঁকো দিয়ে চলাচল করছে মানুষ। প্রতিটি দিন গেছে, আর জমা হয়েছে ভুক্তভোগীদের আক্ষেপের কথা। অথচ এলাকাবাসীর একটি পুলের দাবি দীর্ঘ ৩৬ বছরেও পূরণ হয়নি। একই অবস্থা ময়মনসিংহের ধোবাউড়ায়। ঘাগটিয়া নদীতে সেতুর অভাবে দুর্ভোগে রয়েছেন অন্তত ১০ গ্রামের মানুষ। ধোবাউড়া সদর এবং গোয়াতলা ইউনিয়নের মাঝখান দিয়ে প্রবাহিত নদীটি ইউনিয়ন দুটিকে বিভক্ত করেছে। ধোবাউড়ার প্রবেশপথ হওয়ায় যাতায়াতের অন্যতম বাধা এ নদী।

শুকনো মৌসুমে নৌকা দিয়ে কোনো রকম নদী পারাপার করলেও বর্ষায় ভয়াল রূপ ধারণ করে এই নদী। এতে চিকিৎসা নিতে ধোবাউড়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আসতে পারেন না বৃদ্ধ ও গর্ভবতী মহিলারা। এছাড়া কৃষকদের উৎপাদিত কৃষিপন্য বিক্রি করতে দুর্ভোগ পোহাতে হয়। এলাকাবাসীর অভিযোগ, নির্বাচন এলে জনপ্রতিনিধিরা প্রতিশ্রুতি দেন কিন্তু বাস্তবায়ন হয়নি সেই কাঙ্কিত সেতু।

মোরেলগঞ্জ উপজেলার খাউলিয়া ইউনিয়নের বড়পরী গ্রামের বাসিন্দারা জানান, গ্রামের দুই প্রান্তে তিন হাজার মানুষের বসবাস। গ্রামের মাঝ দিয়ে প্রবাহিত বড় খাল। খালের দুই প্রান্তের মানুষের ৩৬ বছর ধরে যোগাযোগের ভরসা সুপারি গাছ ও বাঁশের সাঁকো। সাঁকোটি সম্প্রতি বালু ভর্তি জাহাজের ধাক্কায় মাঝ থেকে ভেঙে গিয়ে ওই গ্রামের শিক্ষার্থীসহ মানুষের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। সাঁকোটি ভেঙে যাওয়ায় নৌকা, সাঁতার অথবা ৪-৫ কিলোমিটার ঘুরে পল্লীমঙ্গল বাজার সংলগ্ন সেতু কিংবা চেয়ারম্যান বাজার সেতু দিয়ে হেঁটে চলাচল করতে হচ্ছে।

সাঁকোটি পেরিয়ে প্রতিদিন ছোটপরী, বড়পরী, সন্ন্যাসী, আমতলী, কেয়ারবাজার, আমতলী, বানিয়াখালী ও সীমান্তবর্তী শরণখোলা উপজেলার ধানসাগর গ্রামের লোকজন চলাচল করে। সাঁকোটির দুই পাশেই রয়েছে পাঁচটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, চারটি মসজিদ, দুটি মাধ্যমিক বিদ্যালয়, দুটি মাদরাসা, পল্লীমঙ্গল বাজার, পথেরবাজার, চেয়ারম্যান বাজার ও বানিয়াখালী বাজারসহ গুরুত্বপূর্ণ স্থান।

কৃষক আব্দুল বাকি হাওলাদার, আব্দুল হাই ঘরামী, ফাতেমা বেগম, নূরুল হক হাওলাদার, ফজল ঘরামী বলেন, ‘যুগ যুগ ধরে সরকারি বরাদ্দ না পেয়ে নিজেদের অর্থায়নে সুপারি গাছ, বাঁশ কিনে প্রতি বছর মেরাতম করা হয় সাঁকো। নির্বাচন আসলেই নানামুখী প্রতিশ্রুতি। জনপ্রতিনিধি পরিবর্তন হয়েছে একাধিকবার কিন্তু সাঁকোর পরিবর্তন হয়নি। মাঠের ফসল ঘরে তুলতে সীমাহীন দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। ছিল একটি সাঁকো তাও ভেঙে দিয়েছে বালু ব্যবসায়ীরা।

স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান মাস্টার মো. সাইদুর রহমান বলেন, ১০ বছর আগে ওখানে কাঠের পুল ছিল। পুলটি ভেঙে যাওয়ার পর সাঁকো তৈরি করা হয়েছে। তিনি নিজেও আর্থিক সহযোগিতা করেছেন। নতুন পুলের জন্য আবেদন করা হয়েছে।

এ ব্যাপারে উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ডেভিড রানা চিসিম বলেন, ঘাগটিয়া নদীতে ব্রিজ নির্মাণ প্রক্রিয়াধীন রয়েছে, আগামী অর্থবছরে আশা করছি নির্মাণকাজ শুরু করা যাবে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এস.এম তারেক সুলতান বলেন, বিষয়টি খোঁজ খবর নিয়ে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

রাকিবের গোলে হংকংয়ের বিপক্ষে ড্র করল বাংলাদেশ

মোরেলগঞ্জে সেতুর অভাবে দুর্ভোগে ১০ গ্রামের মানুষ

প্রকাশের সময় : ০২:১২:১০ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৯ মার্চ ২০২৩

নিজস্ব প্রতিবেদক  :

বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জে বড়পরী গ্রামের দুই প্রান্তে তিন হাজার মানুষের বসবাস। গ্রামের মাঝ দিয়ে বয়ে গেছে বড় খাল। খালের দুই প্রান্তে সংযোগ তৈরি করেছে বাঁশের সাঁকো। ৩৬ বছর ধরে ঝুঁকি নিয়ে সাঁকো দিয়ে চলাচল করছে মানুষ। প্রতিটি দিন গেছে, আর জমা হয়েছে ভুক্তভোগীদের আক্ষেপের কথা। অথচ এলাকাবাসীর একটি পুলের দাবি দীর্ঘ ৩৬ বছরেও পূরণ হয়নি। একই অবস্থা ময়মনসিংহের ধোবাউড়ায়। ঘাগটিয়া নদীতে সেতুর অভাবে দুর্ভোগে রয়েছেন অন্তত ১০ গ্রামের মানুষ। ধোবাউড়া সদর এবং গোয়াতলা ইউনিয়নের মাঝখান দিয়ে প্রবাহিত নদীটি ইউনিয়ন দুটিকে বিভক্ত করেছে। ধোবাউড়ার প্রবেশপথ হওয়ায় যাতায়াতের অন্যতম বাধা এ নদী।

শুকনো মৌসুমে নৌকা দিয়ে কোনো রকম নদী পারাপার করলেও বর্ষায় ভয়াল রূপ ধারণ করে এই নদী। এতে চিকিৎসা নিতে ধোবাউড়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আসতে পারেন না বৃদ্ধ ও গর্ভবতী মহিলারা। এছাড়া কৃষকদের উৎপাদিত কৃষিপন্য বিক্রি করতে দুর্ভোগ পোহাতে হয়। এলাকাবাসীর অভিযোগ, নির্বাচন এলে জনপ্রতিনিধিরা প্রতিশ্রুতি দেন কিন্তু বাস্তবায়ন হয়নি সেই কাঙ্কিত সেতু।

মোরেলগঞ্জ উপজেলার খাউলিয়া ইউনিয়নের বড়পরী গ্রামের বাসিন্দারা জানান, গ্রামের দুই প্রান্তে তিন হাজার মানুষের বসবাস। গ্রামের মাঝ দিয়ে প্রবাহিত বড় খাল। খালের দুই প্রান্তের মানুষের ৩৬ বছর ধরে যোগাযোগের ভরসা সুপারি গাছ ও বাঁশের সাঁকো। সাঁকোটি সম্প্রতি বালু ভর্তি জাহাজের ধাক্কায় মাঝ থেকে ভেঙে গিয়ে ওই গ্রামের শিক্ষার্থীসহ মানুষের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। সাঁকোটি ভেঙে যাওয়ায় নৌকা, সাঁতার অথবা ৪-৫ কিলোমিটার ঘুরে পল্লীমঙ্গল বাজার সংলগ্ন সেতু কিংবা চেয়ারম্যান বাজার সেতু দিয়ে হেঁটে চলাচল করতে হচ্ছে।

সাঁকোটি পেরিয়ে প্রতিদিন ছোটপরী, বড়পরী, সন্ন্যাসী, আমতলী, কেয়ারবাজার, আমতলী, বানিয়াখালী ও সীমান্তবর্তী শরণখোলা উপজেলার ধানসাগর গ্রামের লোকজন চলাচল করে। সাঁকোটির দুই পাশেই রয়েছে পাঁচটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, চারটি মসজিদ, দুটি মাধ্যমিক বিদ্যালয়, দুটি মাদরাসা, পল্লীমঙ্গল বাজার, পথেরবাজার, চেয়ারম্যান বাজার ও বানিয়াখালী বাজারসহ গুরুত্বপূর্ণ স্থান।

কৃষক আব্দুল বাকি হাওলাদার, আব্দুল হাই ঘরামী, ফাতেমা বেগম, নূরুল হক হাওলাদার, ফজল ঘরামী বলেন, ‘যুগ যুগ ধরে সরকারি বরাদ্দ না পেয়ে নিজেদের অর্থায়নে সুপারি গাছ, বাঁশ কিনে প্রতি বছর মেরাতম করা হয় সাঁকো। নির্বাচন আসলেই নানামুখী প্রতিশ্রুতি। জনপ্রতিনিধি পরিবর্তন হয়েছে একাধিকবার কিন্তু সাঁকোর পরিবর্তন হয়নি। মাঠের ফসল ঘরে তুলতে সীমাহীন দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। ছিল একটি সাঁকো তাও ভেঙে দিয়েছে বালু ব্যবসায়ীরা।

স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান মাস্টার মো. সাইদুর রহমান বলেন, ১০ বছর আগে ওখানে কাঠের পুল ছিল। পুলটি ভেঙে যাওয়ার পর সাঁকো তৈরি করা হয়েছে। তিনি নিজেও আর্থিক সহযোগিতা করেছেন। নতুন পুলের জন্য আবেদন করা হয়েছে।

এ ব্যাপারে উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ডেভিড রানা চিসিম বলেন, ঘাগটিয়া নদীতে ব্রিজ নির্মাণ প্রক্রিয়াধীন রয়েছে, আগামী অর্থবছরে আশা করছি নির্মাণকাজ শুরু করা যাবে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এস.এম তারেক সুলতান বলেন, বিষয়টি খোঁজ খবর নিয়ে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।