Dhaka মঙ্গলবার, ২৬ অগাস্ট ২০২৫, ১১ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
স্বাধীনতার ৫৪ বছরেও উন্নয়নের ছোঁয়া লাগেনি

মেহেরপুরে গাংনীর ৪ কিলোমিটার সড়কের বেহাল দশা

মেহেরপুর জেলা প্রতিনিধি : 

স্বাধীনতার ৫৪ বছরেও উন্নয়নের ছোঁয়া লাগেনি মেহেরপুরের গাংনীর ঝোড়পাড়া-মহিষাখোলা ৪ কিলোমিটার সড়কে। এর ফলে কাঁচা মাটির রাস্তা জনদুর্ভোগে পরিণত হয়েছে। যানবাহন তো দূরে থাক, খালি পায়ে হেঁটে চলাচল করাও কষ্টসাধ্য ব্যাপার। শুষ্ক মৌসুমে রাস্তায় কোনোভাবে চলাচল করতে পারলেও বর্ষা মৌসুম রাস্তায় বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হওয়ায় চলাচলের অনুপোযোগী হয়ে পড়ে।

এদিকে রাস্তাটি পাকা করার দাবিতে সম্প্রতি ধানের চারা রোপণ ও মানববন্ধন করে দ্রত সময়ের মধ্যে দুর্ভোগ লাঘবের দাবি করেছেন এলাকাবাসী।

স্থানীয় বাসিন্দা সমাজ সেবক আবু সায়েম বলেন, বর্ষা মৌসুমে গ্রামের কেউ অসুস্থ হলে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার জন্য কোনো যানবাহন ও অ্যাম্বুলেন্স আসতে পারে না। এ কারণে কাঁধে করে কর্দমাক্ত রাস্তা পার করতে হয় রোগীকে। আবার রোগীকে দ্রুত হাসপাতালে নিতে না পারার কারণে মৃত্যুর ঘটনাও ঘটেছে। এমনকি কেউ মারা গেলে কবরস্থানে নিতেও চরম দুর্ভোগ পোহাতে হয়। মুসল্লিরা মসজিদেও যেতে পারেন না। রাস্তাটি দ্রুত পাকা করার দাবি জানান তিনি।

স্কুল শিক্ষক মিনহাজ উদ্দীন বলেন, এলাকায় প্রচুর কৃষি পণ্য উৎপাদন হলেও রাস্তার বেহাল দশার কারণে কৃষকেরা সময়মতো কৃষি ফসল বাজারজাত করতে পারেন না। ফলে কৃষিপণ্যের ন্যায্যমূল্য থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন তারা। আবার কয়েকটি গ্রামের কৃষক এই কর্দময় রাস্তা দিয়ে ফসল আনা নেওয়া করেন। অনেক সময় রাস্তায় কাঁদা থাকার কারণে ফসল সময় মতো ঘরে তুলতে না পেরে মাঠেই পচে নষ্ট হয়। এছাড়া কখনও অন্য গ্রাম দিয়ে ফসল আসতে গেলে পরিবহন খরচ বেড়ে যায়।

শিক্ষার্থী ইমন হোসেন বলেন, বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা নিয়মিত বিদ্যালয়ে যেতে পারে না। শিক্ষার্থীরা স্কুল কলেজে যেতে গেলে জামাকাপড়ে কাঁদা লেগে যায়। কাঁদা যুক্ত রাস্তা পার হওয়ার পর পুনরায় গোসল করে পোশাক পরিবর্তন করে বিদ্যালয়ে যেতে হয়।

গৃহবধু সাহানারা খাতুন বলেন, রাস্তার জন্য বছরের পর বছর কষ্ট করলেও কোনো সরকার বা জনপ্রতিনিধি খোঁজখবর নেইনি। এমনকি বিয়ের ব্যাপারে ছেলে মেয়ে উভয় পরিবার আসতে ও যেতে পারেন না। এই চরম সঙ্কট থেকে মুক্তি পেতে সরকারের দ্রুত হস্তক্ষেপ কামনা করছি।

রাইপুর ইউনিয়ন পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান সারগিদুল ইসলাম বলেন, বৃষ্টিতে রাস্তাটি একেবারে চলার অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। আমার ইউনিয়ন পরিষদের পক্ষ থেকে যতটুকু পারি সহযোগিতা করব।

এ বিষয়ে গাংনী উপজেলা প্রকৌশলী মো. ফয়সাল হোসেন বলেন, এই রাস্তার আইডি ছিল না। সম্প্রতি আইড নম্বর হয়েছে। আইডি নম্বর পাওয়ার পর এই রাস্তার অনুমোদনের জন্য অধিদপ্তরে প্রেরণ করা হয়েছে। অনুমোদন পেলে দ্রুত কাজ শুরু হবে।

গাংনী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আনোয়ার হোসেন বলেন, জনগণের দুর্ভোগের কথা চিন্তা করে আমরা এ বিষয়টি নিয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেব।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

স্বাধীনতার ৫৪ বছরেও উন্নয়নের ছোঁয়া লাগেনি

মেহেরপুরে গাংনীর ৪ কিলোমিটার সড়কের বেহাল দশা

প্রকাশের সময় : ১২:১২:৫৩ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৬ অগাস্ট ২০২৫

মেহেরপুর জেলা প্রতিনিধি : 

স্বাধীনতার ৫৪ বছরেও উন্নয়নের ছোঁয়া লাগেনি মেহেরপুরের গাংনীর ঝোড়পাড়া-মহিষাখোলা ৪ কিলোমিটার সড়কে। এর ফলে কাঁচা মাটির রাস্তা জনদুর্ভোগে পরিণত হয়েছে। যানবাহন তো দূরে থাক, খালি পায়ে হেঁটে চলাচল করাও কষ্টসাধ্য ব্যাপার। শুষ্ক মৌসুমে রাস্তায় কোনোভাবে চলাচল করতে পারলেও বর্ষা মৌসুম রাস্তায় বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হওয়ায় চলাচলের অনুপোযোগী হয়ে পড়ে।

এদিকে রাস্তাটি পাকা করার দাবিতে সম্প্রতি ধানের চারা রোপণ ও মানববন্ধন করে দ্রত সময়ের মধ্যে দুর্ভোগ লাঘবের দাবি করেছেন এলাকাবাসী।

স্থানীয় বাসিন্দা সমাজ সেবক আবু সায়েম বলেন, বর্ষা মৌসুমে গ্রামের কেউ অসুস্থ হলে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার জন্য কোনো যানবাহন ও অ্যাম্বুলেন্স আসতে পারে না। এ কারণে কাঁধে করে কর্দমাক্ত রাস্তা পার করতে হয় রোগীকে। আবার রোগীকে দ্রুত হাসপাতালে নিতে না পারার কারণে মৃত্যুর ঘটনাও ঘটেছে। এমনকি কেউ মারা গেলে কবরস্থানে নিতেও চরম দুর্ভোগ পোহাতে হয়। মুসল্লিরা মসজিদেও যেতে পারেন না। রাস্তাটি দ্রুত পাকা করার দাবি জানান তিনি।

স্কুল শিক্ষক মিনহাজ উদ্দীন বলেন, এলাকায় প্রচুর কৃষি পণ্য উৎপাদন হলেও রাস্তার বেহাল দশার কারণে কৃষকেরা সময়মতো কৃষি ফসল বাজারজাত করতে পারেন না। ফলে কৃষিপণ্যের ন্যায্যমূল্য থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন তারা। আবার কয়েকটি গ্রামের কৃষক এই কর্দময় রাস্তা দিয়ে ফসল আনা নেওয়া করেন। অনেক সময় রাস্তায় কাঁদা থাকার কারণে ফসল সময় মতো ঘরে তুলতে না পেরে মাঠেই পচে নষ্ট হয়। এছাড়া কখনও অন্য গ্রাম দিয়ে ফসল আসতে গেলে পরিবহন খরচ বেড়ে যায়।

শিক্ষার্থী ইমন হোসেন বলেন, বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা নিয়মিত বিদ্যালয়ে যেতে পারে না। শিক্ষার্থীরা স্কুল কলেজে যেতে গেলে জামাকাপড়ে কাঁদা লেগে যায়। কাঁদা যুক্ত রাস্তা পার হওয়ার পর পুনরায় গোসল করে পোশাক পরিবর্তন করে বিদ্যালয়ে যেতে হয়।

গৃহবধু সাহানারা খাতুন বলেন, রাস্তার জন্য বছরের পর বছর কষ্ট করলেও কোনো সরকার বা জনপ্রতিনিধি খোঁজখবর নেইনি। এমনকি বিয়ের ব্যাপারে ছেলে মেয়ে উভয় পরিবার আসতে ও যেতে পারেন না। এই চরম সঙ্কট থেকে মুক্তি পেতে সরকারের দ্রুত হস্তক্ষেপ কামনা করছি।

রাইপুর ইউনিয়ন পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান সারগিদুল ইসলাম বলেন, বৃষ্টিতে রাস্তাটি একেবারে চলার অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। আমার ইউনিয়ন পরিষদের পক্ষ থেকে যতটুকু পারি সহযোগিতা করব।

এ বিষয়ে গাংনী উপজেলা প্রকৌশলী মো. ফয়সাল হোসেন বলেন, এই রাস্তার আইডি ছিল না। সম্প্রতি আইড নম্বর হয়েছে। আইডি নম্বর পাওয়ার পর এই রাস্তার অনুমোদনের জন্য অধিদপ্তরে প্রেরণ করা হয়েছে। অনুমোদন পেলে দ্রুত কাজ শুরু হবে।

গাংনী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আনোয়ার হোসেন বলেন, জনগণের দুর্ভোগের কথা চিন্তা করে আমরা এ বিষয়টি নিয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেব।