Dhaka শুক্রবার, ১২ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ২৭ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

মেসি-জাদুতে ইন্টার মায়ামির প্রথম শিরোপা

  • স্পোর্টস ডেস্ক
  • প্রকাশের সময় : ১২:৪৩:০০ অপরাহ্ন, রবিবার, ২০ অগাস্ট ২০২৩
  • ২০৩ জন দেখেছেন

স্পোর্টস ডেস্ক : 

বিশ্বকাপ জিতে লিওনেল মেসি স্বপ্ন পূরণ করেছেন। এমন মানুষকেই তো দরকার ছিল ইন্টার মায়ামির। যাদের ট্রফিকেসটা ছিল পুরোপুরি খালি! মেসি সেই চ্যালেঞ্জটা নিয়ে বাজিমাত করে দেখালেন যোগ দিয়েই। টাইব্রেকারে দুই দলের ১১ জন খেলোয়াড়ের প্রত্যেকেই নিলেন শট। তা বিরল নয়তো কি! ম্যারাথন শুটআউট শেষে বাজিমাত করে ইন্টার মায়ামি। নিজেদের ইতিহাসে প্রথম শিরোপা জিতল লিওনেল মেসির দল। লিগস কাপের ফাইনালে নাশভিলেকে ২২ শটের টাইব্রেকারে ১০-৯ ব্যবধানে হারায় তারা।

এমএলএস এর পরিসর বর্ধিত করার সময়ই এ লিগে যুক্ত হয় মিয়ামি এবং নাশভিল। এরপর আজই প্রথমবারের মত দুই দলই খেলতে নামে নিজেদের প্রথম ফাইনাল। আর শুরু থেকেই নিজেদের উদ্বোধনী শিরোপা জয়ের লক্ষ্যে আক্রমণাত্মক ফুটবলের পসরা সাজিয়ে বসে উভয় দলের ফুটবলাররা।

তবে নাশভিলের ঘরের মাঠ জিওসি পার্ক স্টেডিয়ামে আজকের ম্যাচে প্রথম সাফল্য পায় মিয়ামি। আর অবধারিত ভাবেই যেন সেই সাফল্যের নায়কও মেসিই। ম্যাচের ২৩ মিনিটের সময় ডি-বক্সের বাইরে বল পেয়ে যান আর্জেন্টাইন অধিনায়ক। এরপর নাশভিলের এক ডিফেন্ডারকে কাটিয়ে আরও তিন ফুটবলারের মানবদেয়াল ভেদ করে দুর্দান্ত এক শট নেন তিনি। বলও খুঁজে পায় জালের দেখা। ফলে ম্যাচের শুরুতেই এক গোলে এগিয়ে যায় মিয়ামি।

এরপর দুই দলই গোলের দেখা পেতে মরিয়া হয়ে চেষ্টা চালিয়ে যেতে থাকে। তবে রক্ষণের বাঁধা পেরিয়ে কেউই শেষ পর্যন্ত সফল হতে না পারায় ১-০ স্কোরলাইন নিয়েই বিরতিতে যায় দুই দল।

এরপর ম্যাচের দ্বিতীয়ার্ধ্বে মাঠে নেমেই এক গোলে পিছিয়ে থাকা নাশভিল শুরু করে আক্রমণ। তবে ৫০ মিনিটের সময় নিজেদের দ্বিতীয় গোল করার সুযোগ পেয়েছিল মিয়ামি। কিন্তু জর্দি আলবার এগিয়ে দেয়া বলে জোসেফ মার্তিনেজের নেয়া শট ব্যর্থ হয় জালের দেখা পেতে।

এদিকে ম্যাচের ৫৭ মিনিটের সময় ঠিকই সমতায় ফেরে নাশভিল। কর্ণার থেকে আসা বল গোলপোস্টের একেবারে কাছে থেকে মাথা ছুইয়ে দেন তিনি। এরপর যদিও বল ক্লিয়ার করার চেষ্টা করেছিলেন মিয়ামির ডিফেন্ডার। তবে শেষ রক্ষা হয়নি। ফলে ১-১ স্কোরলাইনে টানটান উত্তেজনা তৈরি হয় শিরোপা জয়ের লড়াইয়ে।

এরপর ম্যাচের ৭০ মিনিটের সময় মিয়ামিকে আরও একবার এগিয়ে দেয়ার দারুণ এক সুযোগ তোইরি করেছিলেন মেসি। বক্সের বাইরে থেকে ফের দুর্দান্ত এক শট নিয়েছিলেন তিনি। তবে বুলেট গতির সেই শট ফিরে আসে গোলপোস্টের বাঁধায়। এরপর ম্যাচের বাকি সময়ে দুই দলই প্রাণান্ত চেষ্টা চালায় গোলের দেখা পেতে। যোগ করা সময়ের শেষ মিনিটে অবশ্য দারুণ এক সুযোগ পেয়েছিলেন মিয়ামির কোপানা। ডিফেন্সিভ হাফ থেকে লং পাসে বল পেয়ে গোলের লক্ষ্যে ছুটেছিলেন তিনি। সামনে নাশভিলের গোলরক্ষক ছাড়া ছিল না আর কোনো বাঁধা। কিন্তু তাতেও ব্যর্থ হন তিনি।

ফলে নির্ধারিত সময়ে ম্যাচ ড্র হওয়ায় খেলা গড়ায় টাইব্রেকারে। এদিকে টাইব্রেকারেও আজকের ম্যাচটি ছড়ায় নাটকীয় উত্তেজনা। প্রথম পাঁচটি শট নেয়ার পরও কোনো দলই জয় না পাওয়ার পর পরের চারটি শটে দুই দলের ফুটবলাররাই করেন লক্ষ্যভেদ। এরপর দুই দলের গোল রক্ষকদের শট নেয়ার পালা। তাতে মিয়ামির গোলরক্ষক প্রথম শট নিয়ে ঠিকই জালের দেখা পান। এরপর নাশভিলের গলরক্ষকের নেয়া শটও আটকে দেন তিনি। ফলে চরম উত্তেজনাপূর্ণ এক ম্যাচের পর চ্যাম্পিয়ন হয় মিয়ামি।

সে সঙ্গে ন্যাশভিলেকে টাইব্রেকারে ১০-৯ গোলে হারিয়ে এই প্রথমবারের মত কোনো টুর্নামেন্টের চ্যাম্পিয়ন হলো ইন্টার মিয়ামি। লিওনেল মেসি যোগ দেয়ার পর এই ক্লাবটির যে বিশাল পরিবর্তন হলো, এই চ্যাম্পিয়নশিপই তার তার প্রমাণ।

টাইব্রেকারের সাডেন ডেথে একে একে প্রতিটি শটই জড়িয়ে যাচ্ছিলো জালে। দুই পক্ষের কারোরই যেন থামার কোনো লক্ষণ নেই। ১১ নম্বর শটটি নেন দুই দলের গোলরক্ষকরা। ইন্টার মিয়ামির হয়ে ড্রেক ক্যালেন্ডার নিজের শট জালে জড়াতে সক্ষম হন। তবে ন্যাশভিলের গোলরক্ষক এলিয়ট প্যানিক্কোর শটটি ডান পাশের কর্নারে ঝাঁপিয়ে পড়ে ঠেকিয়ে দেন মিয়ামির গোলরক্ষক ড্রেক ক্যালেন্ডার।

সঙ্গে সঙ্গেই বাধভাঙা উল্লাসে মেতে ওঠেন ইন্টার মিয়ামির ফুটবলাররা। মেসিকে ঘিরে চলতে থাকে সেই উল্লাস। শুধু ইন্টার মিয়ামিই নয়, পুরো টুর্নামেন্টের মধ্যমনিতে পরিণত হন যেন তিনি।

৭ ম্যাচে ১০ গোল করায় আসরের সেরা খেলোয়াড় ও সর্বোচ্চ গোলদাতার পুরস্কারটি অনুমিতভাবেই ওঠে মেসির হাতে। ব্যক্তিগতভাবে আরও অনন্য এক রেকর্ড গড়েছেন তিনি। লিগস কাপ জিতে সর্বোচ্চ শিরোপা জয়ের রেকর্ডে ছাড়িয়ে গেছেন সাবেক সতীর্থ দানি আলভেসকে। এটি তার পেশাদার ফুটবল ক্যারিয়ারের ৪৪তম শিরোপা।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

মেসি-জাদুতে ইন্টার মায়ামির প্রথম শিরোপা

প্রকাশের সময় : ১২:৪৩:০০ অপরাহ্ন, রবিবার, ২০ অগাস্ট ২০২৩

স্পোর্টস ডেস্ক : 

বিশ্বকাপ জিতে লিওনেল মেসি স্বপ্ন পূরণ করেছেন। এমন মানুষকেই তো দরকার ছিল ইন্টার মায়ামির। যাদের ট্রফিকেসটা ছিল পুরোপুরি খালি! মেসি সেই চ্যালেঞ্জটা নিয়ে বাজিমাত করে দেখালেন যোগ দিয়েই। টাইব্রেকারে দুই দলের ১১ জন খেলোয়াড়ের প্রত্যেকেই নিলেন শট। তা বিরল নয়তো কি! ম্যারাথন শুটআউট শেষে বাজিমাত করে ইন্টার মায়ামি। নিজেদের ইতিহাসে প্রথম শিরোপা জিতল লিওনেল মেসির দল। লিগস কাপের ফাইনালে নাশভিলেকে ২২ শটের টাইব্রেকারে ১০-৯ ব্যবধানে হারায় তারা।

এমএলএস এর পরিসর বর্ধিত করার সময়ই এ লিগে যুক্ত হয় মিয়ামি এবং নাশভিল। এরপর আজই প্রথমবারের মত দুই দলই খেলতে নামে নিজেদের প্রথম ফাইনাল। আর শুরু থেকেই নিজেদের উদ্বোধনী শিরোপা জয়ের লক্ষ্যে আক্রমণাত্মক ফুটবলের পসরা সাজিয়ে বসে উভয় দলের ফুটবলাররা।

তবে নাশভিলের ঘরের মাঠ জিওসি পার্ক স্টেডিয়ামে আজকের ম্যাচে প্রথম সাফল্য পায় মিয়ামি। আর অবধারিত ভাবেই যেন সেই সাফল্যের নায়কও মেসিই। ম্যাচের ২৩ মিনিটের সময় ডি-বক্সের বাইরে বল পেয়ে যান আর্জেন্টাইন অধিনায়ক। এরপর নাশভিলের এক ডিফেন্ডারকে কাটিয়ে আরও তিন ফুটবলারের মানবদেয়াল ভেদ করে দুর্দান্ত এক শট নেন তিনি। বলও খুঁজে পায় জালের দেখা। ফলে ম্যাচের শুরুতেই এক গোলে এগিয়ে যায় মিয়ামি।

এরপর দুই দলই গোলের দেখা পেতে মরিয়া হয়ে চেষ্টা চালিয়ে যেতে থাকে। তবে রক্ষণের বাঁধা পেরিয়ে কেউই শেষ পর্যন্ত সফল হতে না পারায় ১-০ স্কোরলাইন নিয়েই বিরতিতে যায় দুই দল।

এরপর ম্যাচের দ্বিতীয়ার্ধ্বে মাঠে নেমেই এক গোলে পিছিয়ে থাকা নাশভিল শুরু করে আক্রমণ। তবে ৫০ মিনিটের সময় নিজেদের দ্বিতীয় গোল করার সুযোগ পেয়েছিল মিয়ামি। কিন্তু জর্দি আলবার এগিয়ে দেয়া বলে জোসেফ মার্তিনেজের নেয়া শট ব্যর্থ হয় জালের দেখা পেতে।

এদিকে ম্যাচের ৫৭ মিনিটের সময় ঠিকই সমতায় ফেরে নাশভিল। কর্ণার থেকে আসা বল গোলপোস্টের একেবারে কাছে থেকে মাথা ছুইয়ে দেন তিনি। এরপর যদিও বল ক্লিয়ার করার চেষ্টা করেছিলেন মিয়ামির ডিফেন্ডার। তবে শেষ রক্ষা হয়নি। ফলে ১-১ স্কোরলাইনে টানটান উত্তেজনা তৈরি হয় শিরোপা জয়ের লড়াইয়ে।

এরপর ম্যাচের ৭০ মিনিটের সময় মিয়ামিকে আরও একবার এগিয়ে দেয়ার দারুণ এক সুযোগ তোইরি করেছিলেন মেসি। বক্সের বাইরে থেকে ফের দুর্দান্ত এক শট নিয়েছিলেন তিনি। তবে বুলেট গতির সেই শট ফিরে আসে গোলপোস্টের বাঁধায়। এরপর ম্যাচের বাকি সময়ে দুই দলই প্রাণান্ত চেষ্টা চালায় গোলের দেখা পেতে। যোগ করা সময়ের শেষ মিনিটে অবশ্য দারুণ এক সুযোগ পেয়েছিলেন মিয়ামির কোপানা। ডিফেন্সিভ হাফ থেকে লং পাসে বল পেয়ে গোলের লক্ষ্যে ছুটেছিলেন তিনি। সামনে নাশভিলের গোলরক্ষক ছাড়া ছিল না আর কোনো বাঁধা। কিন্তু তাতেও ব্যর্থ হন তিনি।

ফলে নির্ধারিত সময়ে ম্যাচ ড্র হওয়ায় খেলা গড়ায় টাইব্রেকারে। এদিকে টাইব্রেকারেও আজকের ম্যাচটি ছড়ায় নাটকীয় উত্তেজনা। প্রথম পাঁচটি শট নেয়ার পরও কোনো দলই জয় না পাওয়ার পর পরের চারটি শটে দুই দলের ফুটবলাররাই করেন লক্ষ্যভেদ। এরপর দুই দলের গোল রক্ষকদের শট নেয়ার পালা। তাতে মিয়ামির গোলরক্ষক প্রথম শট নিয়ে ঠিকই জালের দেখা পান। এরপর নাশভিলের গলরক্ষকের নেয়া শটও আটকে দেন তিনি। ফলে চরম উত্তেজনাপূর্ণ এক ম্যাচের পর চ্যাম্পিয়ন হয় মিয়ামি।

সে সঙ্গে ন্যাশভিলেকে টাইব্রেকারে ১০-৯ গোলে হারিয়ে এই প্রথমবারের মত কোনো টুর্নামেন্টের চ্যাম্পিয়ন হলো ইন্টার মিয়ামি। লিওনেল মেসি যোগ দেয়ার পর এই ক্লাবটির যে বিশাল পরিবর্তন হলো, এই চ্যাম্পিয়নশিপই তার তার প্রমাণ।

টাইব্রেকারের সাডেন ডেথে একে একে প্রতিটি শটই জড়িয়ে যাচ্ছিলো জালে। দুই পক্ষের কারোরই যেন থামার কোনো লক্ষণ নেই। ১১ নম্বর শটটি নেন দুই দলের গোলরক্ষকরা। ইন্টার মিয়ামির হয়ে ড্রেক ক্যালেন্ডার নিজের শট জালে জড়াতে সক্ষম হন। তবে ন্যাশভিলের গোলরক্ষক এলিয়ট প্যানিক্কোর শটটি ডান পাশের কর্নারে ঝাঁপিয়ে পড়ে ঠেকিয়ে দেন মিয়ামির গোলরক্ষক ড্রেক ক্যালেন্ডার।

সঙ্গে সঙ্গেই বাধভাঙা উল্লাসে মেতে ওঠেন ইন্টার মিয়ামির ফুটবলাররা। মেসিকে ঘিরে চলতে থাকে সেই উল্লাস। শুধু ইন্টার মিয়ামিই নয়, পুরো টুর্নামেন্টের মধ্যমনিতে পরিণত হন যেন তিনি।

৭ ম্যাচে ১০ গোল করায় আসরের সেরা খেলোয়াড় ও সর্বোচ্চ গোলদাতার পুরস্কারটি অনুমিতভাবেই ওঠে মেসির হাতে। ব্যক্তিগতভাবে আরও অনন্য এক রেকর্ড গড়েছেন তিনি। লিগস কাপ জিতে সর্বোচ্চ শিরোপা জয়ের রেকর্ডে ছাড়িয়ে গেছেন সাবেক সতীর্থ দানি আলভেসকে। এটি তার পেশাদার ফুটবল ক্যারিয়ারের ৪৪তম শিরোপা।