Dhaka শনিবার, ১২ জুলাই ২০২৫, ২৮ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

মেরিন ড্রাইভ সড়কে ভাঙন

কক্সবাজার জেলা প্রতিনিধি : 

কক্সবাজার মেরিন ড্রাইভ সড়কের কয়েকটি স্থানে বৈরী আবহাওয়া ও সাগরের জোয়ারের ঢেউয়ের তোড়ে দৃষ্টিনন্দন এই সড়কে ভাঙন ধরেছে। জোয়ার এলেই ছোট-বড় ১০টি স্থানে ভাঙন তীব্র আকার ধারণ করেছে। এতে পুরো সড়ক তলিয়ে যাওয়ার আশংকা করা হচ্ছে।

ভেঙে যাওয়া অংশ শিগগিরই মেরামত করা না হলে সড়ক তলিয়ে মেরিন ড্রাইভে টেকনাফ-কক্সবাজার যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হওয়ার আশঙ্কা করছেন পর্যটন সংশ্লিষ্ট ও যাত্রীরা।

বৃহস্পতিবার (৩ আগস্ট) সকালের জোয়ারে টেকনাফের সাবরাং ইউনিয়নের পশ্চিম মুন্ডার ডেইল এলাকার প্রায় অর্ধশত মিটার সড়ক ঢেউয়ের তোড়ে ভেঙে গেছে। এর আগে গত দুই দিনের বাড়ন্ত জোয়ারের পানিতে টেকনাফের বাহারছড়া, হাদুরছড়া, দক্ষিণ মুন্ডার ডেইল এলাকায় একাধিক স্পটে মেরিন ড্রাইভ ভাঙনের কবলে পড়ে।

কক্সবাজার থেকে টেকনাফ পর্যন্ত সমুদ্রের তীর ধরে হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে গড়ে ওঠা ৮০ কিলোমিটার দীর্ঘ মেরিন ড্রাইভ সড়কের উদ্বোধন হয় ২০১৭ সালের ৬ মে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সড়কটির আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন। তবে ১৯৯১-৯২ সালে এ সড়ক প্রকল্পটি গ্রহণের পর থেকেই নির্মাণ কাজ শুরু হয়। সড়কটি সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগের অধীন হলেও নির্মাণ তদারকি ও রক্ষণাবেক্ষণ করছে সেনাবাহিনীর প্রকৌশল কোর। নয়নাভিরাম সড়কটি দেশের পর্যটন শিল্পের অন্যতম আকর্ষণীয় স্থান।

কক্সবাজার থেকে সাবরাং জিরো পয়েন্ট পর্যন্ত প্রায় ৮০ কিলোমিটার মেরিন ড্রাইভ সড়কটি দেখভালের দায়িত্ব রয়েছে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ইঞ্জিনিয়ারিং কোরের একটি বিশেষ ইউনিট। যে-সব স্থানে ভাঙন দেখা দিয়েছে, সেখানে সন্ধ্যা ছয়টা থেকে মেরামত কাজ শুরু করেছেন ওই ইউনিটের সদস্যরা।

বিচ রোডের জেড স্কী চালক শাকিব উদ্দিন বলেন, সাগর উত্তাল থাকার কারণে গত দুই দিন ধরে জেড স্কী চালানো যাচ্ছে না। সকালে একটু নামানোর চেষ্টা করা হলেও পরবর্তীতে ঢেউয়ের তীব্রতার কারণে নামানো যায়নি।

কিটকট ব্যবসায়ী ইদ্রিস বলেন, সাগর উত্তাল, ঢেউয়ের আঘাত তীব্র। তাই পর্যটক বসার কিটকট (ছাতা) বালিয়াড়িতে বসানো যায়নি। সব কিটকট স্তূপ করে নিরাপদ স্থানে রাখা হয়েছে।

স্থানীয় বাসিন্দা আবদুর রহমান বলেন, মেরিন ড্রাইভ সড়কের পূর্ব পাশে প্রভাবশালী অনেক ব্যক্তি জমি কিনেছেন। তাঁদের কেনা জমি ভরাট করতে সড়কের পাশের সমুদ্রসৈকত থেকে অবাধে বালু তুলছেন। এতে সড়কটি ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠছে। এ ছাড়া সড়ক রক্ষায় স্থাপন করা জিওব্যাগ গুলো ফেটে যেতে শুরু করায় ঝুঁকি বেড়েছে। ঘূর্ণিঝড় মোরার আঘাতেও সড়কটির একাধিক স্থানে ভাঙন দেখা দিয়েছিল।

ইউপি সদস্য মোহাম্মদ সেলিম জানান, টেকনাফের সাবরাং ইউনিয়নের বাহারছড়া ঘাট থেকে হাদুরছড়া বিজিবি ক্যাম্পসংলগ্ন শ্মশান পর্যন্ত প্রায় ২ কিলোমিটারে ৮ থেকে ১০টি স্থানে সড়ক ও পাশের ঝাউবাগানে ভাঙন দেখা দিয়েছে। জোয়ারের ঢেউয়ের আঘাতে সড়কের কিছু অংশ সাগরে বিলীন হয়ে যায় ও কিছু ঝাউগাছও পড়ে গেছে। ভাঙন দ্রুত ঠেকানো না গেলে টেকনাফের সাবরাং ট্যুরিজম পার্ক অর্থনৈতিক অঞ্চলের সঙ্গে মেরিন ড্রাইভ দিয়ে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যেতে পারে।

টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো কামরুজ্জামান বলেন, পূর্ণিমার প্রভাবে জোয়ারের পানির উচ্চতা স্বাভাবিকের চেয়ে বেড়ে গেছে। এতে মেরিন ড্রাইভের সাবরাং বাহারছড়া ঘাট মুন্ডার ডেইল, হাদুরছড়া ও পশ্চিম মুন্ডার ডেইল এলাকার বিভিন্ন অংশে ভাঙন দেখা দিয়েছে। ভাঙন রোধে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ইঞ্জিনিয়ারিং কোর কাজ করছে।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

মব জাস্টিস সরকার কোনোভাবেই বরদাশত করে না : রিজওয়ানা হাসান

মেরিন ড্রাইভ সড়কে ভাঙন

প্রকাশের সময় : ১২:০৪:৪১ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৪ অগাস্ট ২০২৩

কক্সবাজার জেলা প্রতিনিধি : 

কক্সবাজার মেরিন ড্রাইভ সড়কের কয়েকটি স্থানে বৈরী আবহাওয়া ও সাগরের জোয়ারের ঢেউয়ের তোড়ে দৃষ্টিনন্দন এই সড়কে ভাঙন ধরেছে। জোয়ার এলেই ছোট-বড় ১০টি স্থানে ভাঙন তীব্র আকার ধারণ করেছে। এতে পুরো সড়ক তলিয়ে যাওয়ার আশংকা করা হচ্ছে।

ভেঙে যাওয়া অংশ শিগগিরই মেরামত করা না হলে সড়ক তলিয়ে মেরিন ড্রাইভে টেকনাফ-কক্সবাজার যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হওয়ার আশঙ্কা করছেন পর্যটন সংশ্লিষ্ট ও যাত্রীরা।

বৃহস্পতিবার (৩ আগস্ট) সকালের জোয়ারে টেকনাফের সাবরাং ইউনিয়নের পশ্চিম মুন্ডার ডেইল এলাকার প্রায় অর্ধশত মিটার সড়ক ঢেউয়ের তোড়ে ভেঙে গেছে। এর আগে গত দুই দিনের বাড়ন্ত জোয়ারের পানিতে টেকনাফের বাহারছড়া, হাদুরছড়া, দক্ষিণ মুন্ডার ডেইল এলাকায় একাধিক স্পটে মেরিন ড্রাইভ ভাঙনের কবলে পড়ে।

কক্সবাজার থেকে টেকনাফ পর্যন্ত সমুদ্রের তীর ধরে হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে গড়ে ওঠা ৮০ কিলোমিটার দীর্ঘ মেরিন ড্রাইভ সড়কের উদ্বোধন হয় ২০১৭ সালের ৬ মে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সড়কটির আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন। তবে ১৯৯১-৯২ সালে এ সড়ক প্রকল্পটি গ্রহণের পর থেকেই নির্মাণ কাজ শুরু হয়। সড়কটি সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগের অধীন হলেও নির্মাণ তদারকি ও রক্ষণাবেক্ষণ করছে সেনাবাহিনীর প্রকৌশল কোর। নয়নাভিরাম সড়কটি দেশের পর্যটন শিল্পের অন্যতম আকর্ষণীয় স্থান।

কক্সবাজার থেকে সাবরাং জিরো পয়েন্ট পর্যন্ত প্রায় ৮০ কিলোমিটার মেরিন ড্রাইভ সড়কটি দেখভালের দায়িত্ব রয়েছে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ইঞ্জিনিয়ারিং কোরের একটি বিশেষ ইউনিট। যে-সব স্থানে ভাঙন দেখা দিয়েছে, সেখানে সন্ধ্যা ছয়টা থেকে মেরামত কাজ শুরু করেছেন ওই ইউনিটের সদস্যরা।

বিচ রোডের জেড স্কী চালক শাকিব উদ্দিন বলেন, সাগর উত্তাল থাকার কারণে গত দুই দিন ধরে জেড স্কী চালানো যাচ্ছে না। সকালে একটু নামানোর চেষ্টা করা হলেও পরবর্তীতে ঢেউয়ের তীব্রতার কারণে নামানো যায়নি।

কিটকট ব্যবসায়ী ইদ্রিস বলেন, সাগর উত্তাল, ঢেউয়ের আঘাত তীব্র। তাই পর্যটক বসার কিটকট (ছাতা) বালিয়াড়িতে বসানো যায়নি। সব কিটকট স্তূপ করে নিরাপদ স্থানে রাখা হয়েছে।

স্থানীয় বাসিন্দা আবদুর রহমান বলেন, মেরিন ড্রাইভ সড়কের পূর্ব পাশে প্রভাবশালী অনেক ব্যক্তি জমি কিনেছেন। তাঁদের কেনা জমি ভরাট করতে সড়কের পাশের সমুদ্রসৈকত থেকে অবাধে বালু তুলছেন। এতে সড়কটি ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠছে। এ ছাড়া সড়ক রক্ষায় স্থাপন করা জিওব্যাগ গুলো ফেটে যেতে শুরু করায় ঝুঁকি বেড়েছে। ঘূর্ণিঝড় মোরার আঘাতেও সড়কটির একাধিক স্থানে ভাঙন দেখা দিয়েছিল।

ইউপি সদস্য মোহাম্মদ সেলিম জানান, টেকনাফের সাবরাং ইউনিয়নের বাহারছড়া ঘাট থেকে হাদুরছড়া বিজিবি ক্যাম্পসংলগ্ন শ্মশান পর্যন্ত প্রায় ২ কিলোমিটারে ৮ থেকে ১০টি স্থানে সড়ক ও পাশের ঝাউবাগানে ভাঙন দেখা দিয়েছে। জোয়ারের ঢেউয়ের আঘাতে সড়কের কিছু অংশ সাগরে বিলীন হয়ে যায় ও কিছু ঝাউগাছও পড়ে গেছে। ভাঙন দ্রুত ঠেকানো না গেলে টেকনাফের সাবরাং ট্যুরিজম পার্ক অর্থনৈতিক অঞ্চলের সঙ্গে মেরিন ড্রাইভ দিয়ে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যেতে পারে।

টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো কামরুজ্জামান বলেন, পূর্ণিমার প্রভাবে জোয়ারের পানির উচ্চতা স্বাভাবিকের চেয়ে বেড়ে গেছে। এতে মেরিন ড্রাইভের সাবরাং বাহারছড়া ঘাট মুন্ডার ডেইল, হাদুরছড়া ও পশ্চিম মুন্ডার ডেইল এলাকার বিভিন্ন অংশে ভাঙন দেখা দিয়েছে। ভাঙন রোধে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ইঞ্জিনিয়ারিং কোর কাজ করছে।