কিশোরগঞ্জ জেলা প্রতিনিধি :
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, বিশ্ব এখন আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্সের (এআই) যুগে প্রবেশ করেছে। মেধাবীদের জন্য এখন বিশ্বের দরজা উন্মুক্ত। জ্ঞান, বুদ্ধি, মেধা এবং যোগ্যতার প্রতিযোগিতা চলছে সর্বত্র। তাই শিক্ষার্থীদের এই প্রতিযোগিতামূলক বিশ্বে টিকে থাকতে হলে উপযুক্ত শিক্ষায় শিক্ষিত হওয়া জরুরি।
শনিবার (২৫ অক্টোবর) কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়ায় খন্দকার শামসুল আলম ফাউন্ডেশন আয়োজিত সংবিধান ও রাষ্ট্র ব্যবস্থার গণতান্ত্রিক সংস্কার, অর্থনৈতিক মুক্তির লক্ষ্যে বিএনপি প্রণীত রাষ্ট্র কাঠামো মেরামতের রূপরেখা ‘৩১ দফা’ বিষয়ক মেধা মূল্যায়ন পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশ ও পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে লন্ডন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।
তারেক রহমান বলেন, তোমরা মাদরাসা বা স্কুল যেখানেই পড়াশোনা করো না কেন, মনে রাখতে হবে সম্মানের সাথে টিকে থাকতে হলে আধুনিক ও ব্যবহারিক শিক্ষায় দক্ষ হতে হবে। জ্ঞানে-বিজ্ঞানে পারদর্শী হতে হবে, কারিগরি শিক্ষায়ও হতে হবে পারদর্শী।
তিনি বলেন, বিএনপি আগামী দিনের শিক্ষা ব্যবস্থাকে আধুনিক বিজ্ঞান ও উদ্ভাবনী প্রযুক্তির সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে সাজিয়ে তুলতে কাজ করছে। বর্তমান বিশ্বে নিজেকে অন্যের চেয়ে দক্ষ করে তোলার যে প্রতিযোগিতা চলছে, সেখানে একনিষ্ঠতা ও দৃঢ় ইচ্ছাশক্তির বিকল্প নেই।
তারেক রহমান শিক্ষার্থীদের স্মরণ করিয়ে দেন, মেধা বিকাশের জন্য প্রয়োজন নিয়মিত অনুশীলন, সঠিক পরিচর্যা ও প্রবল ইচ্ছাশক্তি। মেধা সহজাত হলেও এর বিকাশের জন্য প্রয়োজন ধারাবাহিক প্রচেষ্টা।
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, প্রতিটি মানুষের মধ্যে সুপ্ত প্রতিভা আছে। আর এই প্রতিভা বের করে আনতে হবে এবং সুপ্ত প্রতিভা বিকাশের সুযোগ করে দিতে হবে।
তিনি বলেন, বিএনপি ক্ষমতায় গেলে শিক্ষাখাতে সর্বোচ্চ বরাদ্দ দেয়া হবে। পুরো শিক্ষা ব্যবস্থাকে সাজিয়ে তুলতে আধুনিক জ্ঞানবিজ্ঞান, উদ্ভাবনী প্রযুক্তির সময়ে নিজেকে দক্ষ করে গোড়ে তোলার বিকল্প নেই।
তিনি আরো বলেন, ঘোষিত ৩১ দফায় অংশ হিসেবে দেশের প্রচলিত শিক্ষা ব্যবস্থাকে সময়োপযোগী শিক্ষা ব্যবস্থা গড়ে তুলতে বিএনপি বিশেষজ্ঞ টিম তৈরি করেছে, যারা এরইমধ্যে অনেকদূর এগিয়েছে।
তারেক রহমান বলেন, সারাদেশের স্কুল-মাদ্রাসার কিশোর-তরুণ শিক্ষার্থী বন্ধুরা, মানে রাখতে হবে সকল ধর্মের নির্দেশনা ও শিক্ষার গুরুত্ব সর্বাধিক। আমাদের কোরআনের প্রথম আয়তটিই হচ্ছে ইকর বিসমি লাব্বিকাল্লাজি খালাক। পড় তোমার প্রভুর নামে। এই মুহূর্তে তোমাদের বন্ধু হিসেবে, তোমাদের ভাই হিসেবে একটাই আমার পরামর্শ, লেখা পাড়া, লেখা পড়া এবং লেখা পড়া।
তিনি বলেন, আমাদের প্রিয় সন্তানেরা, বিশ্ব বর্তমানে আর্টিফিসিয়াল ইন্টেলিজেন্সের যুগে কিন্তু প্রবেশ করেছে। মেধাবিদের জন্য বিশ্বের দ্বার এখন উন্মুক্ত। জ্ঞান-বিজ্ঞান ও মেধা- প্রত্যেকটা ক্ষেত্রে প্রতিযোগিতা সর্বত্র। মাদ্রাসা কিংবা স্কুল যেখানেই তোমরা পড়া লেখা কর না কেন, প্রতিযোগিতামূলক এই বিশ্বে সম্মানের সঙ্গে তোমোদের টিকে থাকতে হলে, যথোপযুক্ত শিক্ষায় কিন্তু শিক্ষিত হতে হবে। জ্ঞানে-বিজ্ঞানে পারদর্শী হতে হবে। ব্যবহারিক এবং কারিগরি শিক্ষায় দক্ষ হতে হবে।
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, আধুনিক জ্ঞান-বিজ্ঞান আর উদ্ভাবনী প্রযুক্তির এ সুযোগে নিজেকে অন্যের চেয়ে দক্ষ করে তোলার যে একাগ্রতা ও একনিষ্ঠতা—এর কিন্তু কোনো বিকল্প নাই। মনে রাখতে হবে, মেধা সহজাত হলেও মেধা বিকাশের জন্য প্রয়োজন সঠিক পরিচর্যা।
তিনি বলেন, প্রিয় ছোট বন্ধুরা, একটি রাষ্ট্রের উন্নয় নির্ভর করে উপযুক্ত শিক্ষা ও শিক্ষা ব্যবস্থার ওপর। সেই লক্ষ্যকে সামনে রেখে বিএনপি কিন্তু ইতোমধ্যে ৩১ দফা দিয়েছে। এ জন্য একটি বিশেষজ্ঞ টিম আমরা করেছি, তারা কাজ অনেক এগিয়ে নিয়ে গেছে।
মেধামূল্যায়ন প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের অভিনন্দন ও তাদের প্রশ্নের উত্তর দিয়ে তারেক রহমান বলেন, বিএনপির লক্ষ্য শিক্ষার্থীদের মধ্যে যে যে বিষয়ে ভালো তাদেরকে সে বিষয়ে পারদর্শী করে তোলা। যে হাদীসে ভালো তাকে বের করে নিয়ে আসা, যে কেরাতে ভালো তাকে বের করে নিয়ে আসা, যে খেলায় ভালো তাকে বের করে নিয়ে আসা, যে অংকে ভালো তাকে বের করে নিয়ে আসা।
তিনি বলেন, এরকম প্রতিভাগুলোকে ধীরে ধীরে বের করে নিয়ে আসার লক্ষ্যে কাজ করছে বিএনপি। পাশাপাশি সুপ্ত প্রতিভার বিকাশ ঘটানোর লক্ষ্য দলটির।
অনুষ্ঠানে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আব্দুল মঈন খান বলেন, ২৫ বছর আগে বিএনপি সরকারে থাকাকালে আমি লক্ষ্য করেছিলাম, তারেক রহমান বাংলাদেশের রাজনীতিতে নতুন ধারা সৃষ্টি করেছিলেন।
আব্দুল মঈন খান বলেন, তারেক রহমান কেবল ঘরে বসে রাজনীতি করেননি, তৃণমূল পর্যায়ে গিয়ে জনগণের সঙ্গে সংযোগ গড়ে তুলেছিলেন। তিনি লন্ডনে থেকেও দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে ভার্চুয়ালি যুক্ত হচ্ছেন, তাদের কথা শুনছেন।
তিনি বলেন, বাংলাদেশের ১৮ কোটি মানুষের প্রত্যাশা একটি সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন। গণতন্ত্রের পুনরুত্থানের জন্য এটিই এখন জাতির একমাত্র চাওয়া। তারেক রহমান ঘোষিত রাষ্ট্র সংস্কারের ৩১ দফার ২৪ নম্বর ধারায় নারী ও শিশুর অধিকারের কথা স্পষ্টভাবে উল্লেখ করা হয়েছে। এই দফাগুলো স্মরণ করে আমরা ভবিষ্যতে নির্বাচনের মাধ্যমে গণতন্ত্রের ধারা পুনরুদ্ধার করবো। তিনি সুদূর লন্ডন থেকে নেতৃত্ব দিয়ে যাচ্ছেন, ইনশাআল্লাহ খুব শিগগিরই দেশে ফিরে এসে তিনি বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হবেন।
ড. মঈন খান বলেন, ২৫ বছর আগে বিএনপি সরকার থাকাকালে আমি লক্ষ্য করেছিলাম-তারেক রহমান বাংলাদেশের রাজনীতিতে নতুন ধারা সৃষ্টি করেছিলেন। তিনি কেবল ঘরে বসে রাজনীতি করেননি, তৃণমূল পর্যায়ে গিয়ে জনগণের সঙ্গে সংযোগ গড়ে তুলেছিলেন। আজও তিনি লন্ডনে থেকেও দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে ভার্চুয়ালি যুক্ত হচ্ছেন, তাদের কথা শুনছেন।
তিনি বলেন, রাষ্ট্র সংস্কারের যে আলোচনা এখন চলছে, তা তারেক রহমান আড়াই বছর আগেই উপস্থাপন করেছেন। তাই বিএনপিকে সংস্কার শেখানোর প্রয়োজন নেই, বরং অন্যদের তার কাছ থেকেই শেখা উচিত।
অনুষ্ঠানটি আয়োজন করে খন্দকার শামসুল আলম ফাউন্ডেশন। এতে জেলার বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-শিক্ষার্থীসহ স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিরা উপস্থিত ছিলেন।
জেলা বিএনপির সভাপতি মো. শরীফুল আলমের সভাপতিত্বে চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আব্দুস সালাম, চেয়ারপারসনের শিক্ষা বিষয়ক মাহাদী আমিন, বিএনপির প্রেস উইংয়ের সদস্য সায়রুল কবীর খান, জেলা বিএনপি সাধারণ সম্পাদক মাজহারুল ইসলাম, ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিব, পাকুন্দিয়া উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট জালাল উদ্দীন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
কিশোরগঞ্জ জেলা প্রতিনিধি 



















