নিজস্ব প্রতিবেদক :
মেট্রোরেলের মতিঝিল থেকে কমলাপুর অংশের ইলেকট্রো মেকানিক্যাল সিস্টেমের কাজের জন্য ২০১৮ সালের জুনে দরপত্র দাখিলকারী ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে সম্প্রতি নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। এই কাজের প্রাথমিক ব্যয় নিয়ে কিছু প্রশ্ন উঠলেও অন্তর্বর্তী সরকারের নির্দেশে ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেড (ডিএমটিসিএল) সফল দর-কষাকষির মাধ্যমে প্রায় ১৮৫ কোটি টাকা সাশ্রয় করতে সক্ষম হয়েছে।
বুধবার (২৯ অক্টোবর) সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা রেজাউল করিম সিদ্দিকী এ তথ্য জানিয়েছেন।
২০২৩ সালের জুলাইয়ে Marubeni-L&T-এর প্রস্তাবিত মূল্য ছিল প্রায় ৬৫০ কোটি টাকা। কিন্তু অন্তর্বর্তী সরকার এত বেশি দরে কাজ করাতে অনীহা প্রকাশ করে। তাদের নির্দেশে ডিএমটিসিএল ‘নেগোসিয়েশন স্ট্র্যাটেজি’ গ্রহণ করে এবং দীর্ঘ আলোচনার মাধ্যমে ৪৬৫ কোটি টাকায় কাজটি করাতে উভয় পক্ষ সম্মত হয়। একই সঙ্গে এক বছর Defect Notification Period (DNP) বাড়ানো সম্ভব হয়।
উল্লেখ্য, উত্তরা উত্তর থেকে মতিঝিল পর্যন্ত মেট্রোরেলের ইলেকট্রো মেকানিক্যাল কাজও Marubeni-L&T সম্পাদন করেছিল। ফলে একই ঠিকাদার থাকায় মতিঝিল থেকে কমলাপুর পর্যন্ত অংশে System Integration সুবিধা হবে বলে জানিয়েছে ডিএমটিসিএল।
এই চুক্তির মাধ্যমে অর্জিত ১৮৫ কোটি টাকার নিট সাশ্রয় সরকারের ‘ব্যয় অপ্টিমাইজেশন’ (খরচ যৌক্তিকীকরণ) নীতির প্রতিফলন। অর্থনৈতিক প্রতিকূলতা সত্ত্বেও স্বচ্ছতা ও কঠোর দর-কষাকষির মাধ্যমে জনগণের অর্থের সর্বোত্তম ব্যবহার নিশ্চিত করা হয়েছে।
এ ছাড়া প্রকল্পে অর্থায়নকারী সংস্থা জাইকার (JICA) সঙ্গে করা চুক্তি অনুযায়ী তাদের মনোনীত ঠিকাদার দিয়ে কাজটি সম্পন্ন করা হচ্ছে বলে জানানো হয়েছে।
অন্তর্বর্তী সরকারের গৃহীত ব্যবস্থার ফলে মেট্রোরেল প্রকল্পে একাধিক গুরুত্বপূর্ণ উন্নয়ন সাধিত হয়েছে উল্লেখ করে রেজাউল করিম সিদ্দিকী জানান, ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট পূর্ববর্তী আন্দোলন-সংগ্রামে ক্ষতিগ্রস্ত কাজীপাড়া, মিরপুর-১০-সহ অন্যান্য মেট্রোরেল স্টেশন মাত্র ১৮ কোটি টাকায় আড়াই মাসে মেরামত সম্পন্ন করা হয়েছে। পূর্ববর্তী সরকারের আমলে এই কাজের জন্য ৩৫০ কোটি টাকা ও এক বছরের সময়সীমা নির্ধারণ করা হয়েছিল।
এ ছাড়া পিক আওয়ারে ট্রেনের ব্যবধান ৮ থেকে কমিয়ে ৬ মিনিট করা হয়েছে, যা আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে ৫ মিনিটে নামানো হবে। মেট্রোরেলের পরিষেবা সময় এক ঘণ্টা বাড়ানো হয়েছে। ভাড়াবহির্ভূত আয় বাড়াতে স্টেশন ও ট্রেনের ভেতরে বাণিজ্যিক স্থান, ব্যাংক, এটিএম ও সিআরএম বুথ এবং ডিজিটাল বিজ্ঞাপন স্থাপনের চুক্তিগুলো চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে।
নবায়নযোগ্য জ্বালানির ব্যবহার বৃদ্ধির লক্ষ্যে ১০ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন সোলার প্যানেল স্থাপনের চুক্তিও চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে।
প্রতিটি প্রকল্পে ব্যয় সাশ্রয়ের জন্য নকশা সংশোধন, দর বিশ্লেষণ ও প্রতিবেশী দেশের তুলনামূলক মূল্যায়ন চলছে।
কর্মকর্তাদের দক্ষতা বাড়াতে প্রশিক্ষণ ও কর্মশালা অব্যাহত রয়েছে। Real-Time Technology Transfer, DMTCL-এর Institutional Capacity বৃদ্ধি, স্থানীয় চাকরির সুযোগ সৃষ্টি এবং স্থানীয় শিল্প বিকাশে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে বলে রেজাউল করিম সিদ্দিকী জানান।
নিজস্ব প্রতিবেদক 





















