কিশোরগঞ্জ জেলা প্রতিনিধি :
কিশোরগঞ্জের ভৈরব ও ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জের মাঝামাঝি এলাকায় মেঘনা নদীতে বালুবাহী বাল্কহেডের ধাক্কায় পর্যটকবাহী ট্রলারডুবে হতাহতের ঘটনায় সকাল থেকে আবারও উদ্ধার অভিযান শুরু হয়। এ ঘটনায় নিখোঁজ হওয়া আট জনের মধ্যে ৪ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে।
কিশোরগঞ্জের ভৈরবে মেঘনা নদীতে বালুবাহী বাল্কহেডের ধাক্কায় পর্যটকবাহী ট্রলারডুবির ঘটনায় এখনও ৮ জন নিখোঁজ রয়েছেন। শনিবার (২৩ মার্চ) সকাল সোয়া ৮টার দিকে তাদেরকে উদ্ধারে অভিযান শুরু করেছে ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরি দল।
শনিবার (২৩ মার্চ) দুপুর ১টার সময় এসব মরদেহ উদ্ধার করা হয়। এর আগে সকাল সোয়া ৮টার দিকে উদ্ধার অভিযান শুরু করে ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরি দল।
কিশোরগঞ্জ ফায়ার সার্ভিসের উপপরিচালক এনামুল হক জানান, কিশোরগঞ্জ থেকে তিন জন এবং ভৈরব থেকে একজন ডুবুরি উদ্ধার অভিযানে অংশ নিয়েছেন। নিখোঁজ ব্যক্তিদের মরদেহ উদ্ধার না হওয়া পর্যন্ত ডুবুরি দলের কার্যক্রম চলমান থাকবে বলে জানান তিনি।
ভৈরব বাজার ফায়ার সার্ভিসের স্টেশন অফিসার আজিজুল হক রাজন জানান, শুক্রবার সন্ধ্যা ৬টার দিকে আশুগঞ্জ-ভৈরব রেলসেতুর তিন নম্বর পিলারের কাছে এই দুর্ঘটনা ঘটে। গতকাল এতে সুবর্ণা নামের একজন নারীর মরদেহ উদ্ধার করা হয়। দুর্ঘটনার পর ১২ জন সাঁতরে তীরে উঠতে পারলেও আট জন নিখোঁজ হন। তাদের মধ্যে ভৈরব হাইওয়ে থানা পুলিশের কনস্টেবল সোহেল রানা (৩২), তার স্ত্রী মৌসুমি আক্তার (২৫), শিশু কন্যা মাহমুদা (৭) ও ছেলে রাইসুলসহ (৫) আরও চার জন রয়েছেন।
ভৈরব থেকে প্রায় ২০ জন যাত্রী নিয়ে একটি ডিজেল ইঞ্জিনচালিত ট্রলার ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জের চরসোনারামপুর এলাকায় যায়। সেখান থেকে ফেরার পথে একটি বালুবাহী বাল্কহেডের সঙ্গে ধাক্কা লেগে ট্রলারটি ডুবে গেলে এ হতাহতের ঘটনা ঘটে।
এ দিকে নদীর পাড়ে ভোর থেকে নিখোঁজদের সন্ধানে অপেক্ষা করছেন স্বজনরা। কোন সময় মিলবে সন্ধান। অপেক্ষা করছে কারো বাবা, কারো ছেলে, কারো মেয়েসহ অসংখ্য আত্মীয় স্বজন। স্বজনহারা মানুষদের আহাজারিতে ভারি হয়ে উঠছে মেঘনার তীর।
নিখোঁজ কলেজ শিক্ষার্থী অনিমিকার মামা লৎফুর রহমান বলেন, আমার ভাগনি নরসিংদী থেকে বেড়াতে এসেছিল। গতকাল বিকেলে তার বান্ধবীকে নিয়ে ট্রলারে করে ঘুরতে বের যায়। তাদের নৌকাকে বালুবাহী বাল্কহেডে ধাক্কা দিলে সঙ্গে সঙ্গে ট্রলারটি পানির নিচে তলিয়ে যায়। এরপর থেকে তাদের সন্ধান পাচ্ছি না।
নিখোঁজ বেলন দে’র দুলাভাই পবির দে বলেন, আমাদের সাতজন আত্মীয় ডুবে যাওয়া নৌকায় ছিল। তাদের মধ্যে চারজনকে উদ্ধার করা হয়েছে। এখন পর্যন্ত আমার শালক বেলন দে, আরাধ্যা দে ও রূপা দে নামে নালীকে খোঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। চার ঘণ্টা অতিবাহিত হলে তাদের সন্ধান মিলছে না।