Dhaka রবিবার, ১০ অগাস্ট ২০২৫, ২৬ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

মৃত ও বিদেশে থাকাদের ভোটও দেওয়া হয়েছে : মমতাজ

মানিকগঞ্জ জেলা প্রতিনিধি : 

মানিকগঞ্জ-২ আসনের পরাজিত নৌকার প্রার্থী মমতাজ বেগম নির্বাচনে কারচুপির অভিযোগ এনে বলেন, সিংগাইর উপজেলার বলধরা, বায়রা ইউনিয়ন ও সিংগাইর পৌরসভার ভোটকেন্দ্রগুলোতে অস্বাভাবিক ভোট পড়েছে। বিদেশে আছে, মারা গেছে তাদের ভোটও দেওয়া হয়েছে। আমি অন্য জায়গায় পাস করলেও, এসব এলাকায় অস্বাভাবিক ভোট হওয়ায় পরাজিত হয়েছি।

মঙ্গলবার (৯ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় মানিকগঞ্জের সিংগাইর উপজেলার পূর্বভাকুম এলাকায় নিজের বাড়ির উঠানে কর্মীসভায় এসব কথা বলেন মমতাজ।

সভায় বিজয়ী প্রার্থী দেওয়ান জাহিদ আহমেদ টুলুর নাম উল্লেখ করে মমতাজ বলেন, তিনি বিএনপি ঘাঁটির ভোট কিনে জয় নিশ্চিত করেছেন। জয়ী হয়ে এখন নৌকার কর্মীদের মারধর করছেন, বাড়িঘরে হামলা চালাচ্ছেন।

এ সময় তিনি হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেন, আমরা কোন সংঘাত, অন্যায়-অত্যাচার মেনে নেব না। প্রধানমন্ত্রী সুষ্ঠু নির্বাচন উপহার দিয়েছে, দল ক্ষমতায় আসছে। কিন্তু কেউ নির্যাতন করলে আমরা এটা বরদাস্ত করব না। তারা বিভিন্ন কায়দায় আমাদের নৌকার ভোট ছিনিয়ে নিয়েছে। বিপুল অংকের টাকা তারা ছিটিয়েছে। কালো টাকা আর বিএনপিকে পুঁজি করে নৌকাকে পরাজিত করেছে। এখন বাড়িঘরে হামলা করছে। এই সন্ত্রাসীদের কালো হাত ভেঙে দিতে হবে।

মমতাজ বেগম বলেন, আমাদের ওপর কেউ আঘাত করলে বসে থাকব না। আওয়ামী লীগ বসে থাকবে না। আমাদের জানমাল রক্ষার্থে সবাই একত্রে হয়ে প্রতিহত করতে হবে।

তিনি বলেন, আর দশটা মেয়ের মতো আমি না। এই জনগণের জন্য জেল খাটতেও রাজি আছি। আমার যদি মোকাবিলা করতে হয়, আপনাদের পাশে দাঁড়িয়ে রাজপথে থেকে মোকাবিলা করব। জেল-জুলম অত্যাচার কোনো কিছু আমাকে দাবায়ে রাখতে পারবে না। আমি কিন্তু ভয় পেয়ে ঘরের কোণে বসে থাকার মেয়ে না। বাংলাদেশসহ সারাবিশ্ব চষে বেড়ানো মেয়ে আমি। কাজেই আমাকে কোনো কিছু দিয়েই দাবিয়ে রাখতে পারবে না। আমি কিন্তু আপনাদের সঙ্গে রাজ পথে হাঁটার মানুষ। আপনাদের সঙ্গে আছি আমি। আপনারা ভয় পাবেন না। যে কোনো বিপদে আপনারা আমাকে জানাবেন।

এ সময় মমতাজ বেগম মানিকগঞ্জ-২ আসনের নবনির্বাচিত এমপি পার্থী দেওয়ান জাহিদ আহমেদ টুলুর সমর্থকদের উদ্দেশে বলেন, তারা প্রতিনিয়ত কোনো না কোনো বাড়িতে গিয়ে আমার সর্মথকদের হামলা করছে। বাড়ির মেয়েদেরকেও তারা রেহাই দিচ্ছে না। বাড়ির বউ, মেয়েদেরকেও তারা মারধরসহ অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করছে। ব্যবসা-প্রতিষ্ঠান, মুরগির খামারে আগুন দেওয়া, ককটেল ফোটানো, বাড়িঘর ভাঙচুর করা, মেম্বারসহ আমার সমর্থকদের মারধর, কোপানোসহ বিভিন্নভাবে অত্যাচার করছে। এ পর্যন্ত ৫০ জনের বেশি আমার সমর্থকে আহত করেছে তারা। নির্বাচনী দিনের রাত থেকেই তারা এই হামলা চালাছে। আজ সকালেও আমার এক ছাত্রলীগের নেতাকে কুপিয়ে আহত করেছে। তবে এ ব্যপারে প্রশাসনকে অবগত করলেও আশানুরূপ কোনো কিছুই করছেন না।

নির্বাচন সুষ্ঠু হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, অবশ্যই নির্বাচন সুষ্ঠু-সুন্দর হয়েছে। কিন্তু তারা (স্বতন্ত্র প্রার্থী টুলু) কালো টাকা দিয়ে দু-তিনটা ইউনিয়নের বিএনপির ভোট কিনে এবং প্রবাসী ও মৃত ব্যক্তিদের ভোট নিজেরা মেরেছে। সিংগাইরের বায়রা, বলধারা ও পৌরসভার একটা অংশের ভোটকেন্দ্রে তারা কারচুপি করে বেশি ভোট দেখিয়েছে এবং এই অস্বাভাবিক ভোটের কারণে সব জয়গায় আমি বেশি ভোট পাওয়ার পরও আমাকে পরাজয় বরণ করতে হয়েছে।

নির্বাচনের সুষ্ঠু হয়েচে কিনা সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, নির্বাচন সুষ্ঠু সুন্দর হয়েছে। তবে তারা কালো টাকা দিয়ে কয়েকটি ইউনিয়নের বিএনপির ভোট কিনে এবং এই আসনের বলধারা ও বায়রা ইউনিয়নের কিছু ভোট কেন্দ্রসহ পৌরসভার কিছু এলাকার বিদেশে গেছে, মারা গেছে এসব মানুষের ভোট দিয়ে তারা বিজয় নিশ্চিত করেছে। এ বিষয়ে আইনজীবীদের সঙ্গে কথা বলে আমরা ব্যবস্থা নেব।

মমতাজ বেগম জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা গোলাম মহীউদ্দীনকে উদ্দেশ্য করে বলেন, তিনি মানিকগঞ্জ-১ আসনে গিয়ে লাঙ্গল মার্কায় ভোট চাইতে পেরেছেন। কিন্তু আমি তাকে বারবার অনুরোধ করার পরেও আমার জন্য মাঠে নামেনি। এই বিষয়ে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রের নেতারা অবগত রয়েছে এমনকি প্রধানমন্ত্রীও জানেন, তারাই যা করার করবেন।

এই কর্মীসভায় দলের স্বতন্ত্র প্রার্থী ও সিংগাইর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান (সদ্য পদত্যাগ করা) মুশফিকুর রহমান খান হান্নান, আরেক স্বতন্ত্র প্রার্থী দেওয়ান শফিউল আরেফিন টুটুলের প্রতিনিধিসহ উপজেলা আওয়ামী লীগ, অঙ্গ-সংগঠনের নেতাকর্মী ও সমর্থকরা উপস্থিত ছিলেন।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

মৃত ও বিদেশে থাকাদের ভোটও দেওয়া হয়েছে : মমতাজ

প্রকাশের সময় : ১১:১২:৫৪ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৯ জানুয়ারী ২০২৪

মানিকগঞ্জ জেলা প্রতিনিধি : 

মানিকগঞ্জ-২ আসনের পরাজিত নৌকার প্রার্থী মমতাজ বেগম নির্বাচনে কারচুপির অভিযোগ এনে বলেন, সিংগাইর উপজেলার বলধরা, বায়রা ইউনিয়ন ও সিংগাইর পৌরসভার ভোটকেন্দ্রগুলোতে অস্বাভাবিক ভোট পড়েছে। বিদেশে আছে, মারা গেছে তাদের ভোটও দেওয়া হয়েছে। আমি অন্য জায়গায় পাস করলেও, এসব এলাকায় অস্বাভাবিক ভোট হওয়ায় পরাজিত হয়েছি।

মঙ্গলবার (৯ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় মানিকগঞ্জের সিংগাইর উপজেলার পূর্বভাকুম এলাকায় নিজের বাড়ির উঠানে কর্মীসভায় এসব কথা বলেন মমতাজ।

সভায় বিজয়ী প্রার্থী দেওয়ান জাহিদ আহমেদ টুলুর নাম উল্লেখ করে মমতাজ বলেন, তিনি বিএনপি ঘাঁটির ভোট কিনে জয় নিশ্চিত করেছেন। জয়ী হয়ে এখন নৌকার কর্মীদের মারধর করছেন, বাড়িঘরে হামলা চালাচ্ছেন।

এ সময় তিনি হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেন, আমরা কোন সংঘাত, অন্যায়-অত্যাচার মেনে নেব না। প্রধানমন্ত্রী সুষ্ঠু নির্বাচন উপহার দিয়েছে, দল ক্ষমতায় আসছে। কিন্তু কেউ নির্যাতন করলে আমরা এটা বরদাস্ত করব না। তারা বিভিন্ন কায়দায় আমাদের নৌকার ভোট ছিনিয়ে নিয়েছে। বিপুল অংকের টাকা তারা ছিটিয়েছে। কালো টাকা আর বিএনপিকে পুঁজি করে নৌকাকে পরাজিত করেছে। এখন বাড়িঘরে হামলা করছে। এই সন্ত্রাসীদের কালো হাত ভেঙে দিতে হবে।

মমতাজ বেগম বলেন, আমাদের ওপর কেউ আঘাত করলে বসে থাকব না। আওয়ামী লীগ বসে থাকবে না। আমাদের জানমাল রক্ষার্থে সবাই একত্রে হয়ে প্রতিহত করতে হবে।

তিনি বলেন, আর দশটা মেয়ের মতো আমি না। এই জনগণের জন্য জেল খাটতেও রাজি আছি। আমার যদি মোকাবিলা করতে হয়, আপনাদের পাশে দাঁড়িয়ে রাজপথে থেকে মোকাবিলা করব। জেল-জুলম অত্যাচার কোনো কিছু আমাকে দাবায়ে রাখতে পারবে না। আমি কিন্তু ভয় পেয়ে ঘরের কোণে বসে থাকার মেয়ে না। বাংলাদেশসহ সারাবিশ্ব চষে বেড়ানো মেয়ে আমি। কাজেই আমাকে কোনো কিছু দিয়েই দাবিয়ে রাখতে পারবে না। আমি কিন্তু আপনাদের সঙ্গে রাজ পথে হাঁটার মানুষ। আপনাদের সঙ্গে আছি আমি। আপনারা ভয় পাবেন না। যে কোনো বিপদে আপনারা আমাকে জানাবেন।

এ সময় মমতাজ বেগম মানিকগঞ্জ-২ আসনের নবনির্বাচিত এমপি পার্থী দেওয়ান জাহিদ আহমেদ টুলুর সমর্থকদের উদ্দেশে বলেন, তারা প্রতিনিয়ত কোনো না কোনো বাড়িতে গিয়ে আমার সর্মথকদের হামলা করছে। বাড়ির মেয়েদেরকেও তারা রেহাই দিচ্ছে না। বাড়ির বউ, মেয়েদেরকেও তারা মারধরসহ অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করছে। ব্যবসা-প্রতিষ্ঠান, মুরগির খামারে আগুন দেওয়া, ককটেল ফোটানো, বাড়িঘর ভাঙচুর করা, মেম্বারসহ আমার সমর্থকদের মারধর, কোপানোসহ বিভিন্নভাবে অত্যাচার করছে। এ পর্যন্ত ৫০ জনের বেশি আমার সমর্থকে আহত করেছে তারা। নির্বাচনী দিনের রাত থেকেই তারা এই হামলা চালাছে। আজ সকালেও আমার এক ছাত্রলীগের নেতাকে কুপিয়ে আহত করেছে। তবে এ ব্যপারে প্রশাসনকে অবগত করলেও আশানুরূপ কোনো কিছুই করছেন না।

নির্বাচন সুষ্ঠু হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, অবশ্যই নির্বাচন সুষ্ঠু-সুন্দর হয়েছে। কিন্তু তারা (স্বতন্ত্র প্রার্থী টুলু) কালো টাকা দিয়ে দু-তিনটা ইউনিয়নের বিএনপির ভোট কিনে এবং প্রবাসী ও মৃত ব্যক্তিদের ভোট নিজেরা মেরেছে। সিংগাইরের বায়রা, বলধারা ও পৌরসভার একটা অংশের ভোটকেন্দ্রে তারা কারচুপি করে বেশি ভোট দেখিয়েছে এবং এই অস্বাভাবিক ভোটের কারণে সব জয়গায় আমি বেশি ভোট পাওয়ার পরও আমাকে পরাজয় বরণ করতে হয়েছে।

নির্বাচনের সুষ্ঠু হয়েচে কিনা সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, নির্বাচন সুষ্ঠু সুন্দর হয়েছে। তবে তারা কালো টাকা দিয়ে কয়েকটি ইউনিয়নের বিএনপির ভোট কিনে এবং এই আসনের বলধারা ও বায়রা ইউনিয়নের কিছু ভোট কেন্দ্রসহ পৌরসভার কিছু এলাকার বিদেশে গেছে, মারা গেছে এসব মানুষের ভোট দিয়ে তারা বিজয় নিশ্চিত করেছে। এ বিষয়ে আইনজীবীদের সঙ্গে কথা বলে আমরা ব্যবস্থা নেব।

মমতাজ বেগম জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা গোলাম মহীউদ্দীনকে উদ্দেশ্য করে বলেন, তিনি মানিকগঞ্জ-১ আসনে গিয়ে লাঙ্গল মার্কায় ভোট চাইতে পেরেছেন। কিন্তু আমি তাকে বারবার অনুরোধ করার পরেও আমার জন্য মাঠে নামেনি। এই বিষয়ে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রের নেতারা অবগত রয়েছে এমনকি প্রধানমন্ত্রীও জানেন, তারাই যা করার করবেন।

এই কর্মীসভায় দলের স্বতন্ত্র প্রার্থী ও সিংগাইর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান (সদ্য পদত্যাগ করা) মুশফিকুর রহমান খান হান্নান, আরেক স্বতন্ত্র প্রার্থী দেওয়ান শফিউল আরেফিন টুটুলের প্রতিনিধিসহ উপজেলা আওয়ামী লীগ, অঙ্গ-সংগঠনের নেতাকর্মী ও সমর্থকরা উপস্থিত ছিলেন।