নিজস্ব প্রতিবেদক :
মুসলমানদের মধ্যে ঐক্য না থাকায় ইসরাইল ফিলিস্তিনি নারী ও পুরুষের রক্ত নিয়ে হোলি খেলছে বলে মন্তব্য করেছেন জামায়াতের কেন্দ্রীয় সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা রফিকুল ইসলাম খান।
শুক্রবার (৩ অক্টোবর) জুমার নামাজের পর গাজায় ত্রানবাহী ফ্লোটিলায় আক্রমণ, হামলা ও বিশ্বের মানবাধিকারকর্মীদের গ্রেফতারের প্রতিবাদে বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের উত্তর গেটে জামায়াতে ইসলামী ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ আয়োজিত বিক্ষোভ মিছিল পূর্ব সংক্ষিপ্ত সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
মাওলানা রফিকুল ইসলাম খান বলেন, বিশ্ব মুসলমানদের মধ্যে ঐক্য না থাকার সুযোগে ইসরাইল ফিলিস্তিনি নারী ও পুরুষের রক্ত নিয়ে হোলি খেলছে। যতদিন ফিলিস্তিন স্বাধীন না হবে, ততদিন মুসলমানদের লড়াই চলবে। কোনো পরাশক্তি এই আন্দোলন নস্যাৎ করতে পারবে না।
তিনি বলেন, ত্রাণবাহী জাহাজ আটকে দেয়ার মতো ঘটনা ঘটলেও বিশ্বের মোড়ল রাষ্ট্রগুলো চুপ হয়ে আছে এবং মানবাধিকার কর্মীরাও ইসরাইলি আগ্রাসন থেকে রেহাই পাচ্ছেন না।
রফিকুল ইসলাম খান বলেন, ফিলিস্তিন যতদিন মুক্ত না হয়, যতদিন স্বাধীন না হয়, আমরা ততদিন তাদের পাশে থাকবো। আমাদের লড়াই অব্যাহত থাকবে। আমাদের সংগ্রাম অব্যাহত থাকবে। আমরা বিশ্বের মুসলমানদের ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি।
তিনি বলেন, আমরা লক্ষ্য করছি, নিষ্ঠুর ইসরায়েলি বাহিনী ফিলিস্তিনের গাজায় একের পর এক নিষ্ঠুর গণহত্যা পরিচালনা করছে। এই গণহত্যার লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হয়েছে নারী এবং শিশুরা; এই গণহত্যার লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হয়েছে ফিলিস্তিনের সাধারণ জনগণ। আমরা বিক্ষোভ মিছিল করছি। সারা দুনিয়া এই হত্যাকাণ্ডের বিরুদ্ধে, এই গণহত্যার বিরুদ্ধে, এই নারী নির্যাতনের বিরুদ্ধে, এই শিশু হত্যাকারীদের বিরুদ্ধে ফুঁসে উঠেছে।
ত্রাণবাহী জাহাজের মানবাধিকারকর্মীদের মুক্তির দাবি জানিয়ে তিনি বলেন, আপনারা লক্ষ্য করেছেন গতকাল যে ত্রাণবাহী জাহাজে তারা হামলা করছে সেখানে ৫০০ এর বেশি অধিকারকর্মীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এসব কর্মীকে দ্রুত মুক্তি দিতে হবে।
জামায়াতের এই নেতা বলেন, ইহুদিরা জানে না যে, মুসলিম জাতি শহীদ হতে জানে, পরাজয় বরণ করতে জানে না। বিশ্বাস করি, শহীদের রক্তের বিনিময়ে ফিলিস্তিন স্বাধীন হবে।
রফিকুল ইসলাম খান বলেন, বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকেও ইসরায়েলের এই গণহত্যার নিন্দা জানানো হয়েছে। এই অঞ্চলকে ইসরায়েলমুক্ত ঘোষণা করতে হবে। আর ইসরায়েলের সন্ত্রাসী গণহত্যাকারী নেতানিয়াহুকে এরইমধ্যে যুদ্ধাপরাধী ঘোষণা করা হয়েছে। অবিলম্বে নেতানিয়াহুকে গ্রেফতার করতে হবে।
তিনি বলেন, ফিলিস্তিন যতদিন মুক্ত না হয়, যতদিন স্বাধীন না হয়, আমরা ততদিন তাদের পাশে থাকব। আমাদের লড়াই অব্যাহত থাকবে। আমাদের সংগ্রাম অব্যাহত থাকবে।
রফিকুল ইসলাম খান বলেন, নিষ্ঠুর ইসরাইল বাহিনী ফিলিস্তিনের গাজায় একের পর এক গণহত্যা পরিচালনা করছে। এই গণহত্যার লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হয়েছে নারী এবং শিশুরা, এই গণহত্যার লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হয়েছে ফিলিস্তিনের সাধারণ জনগণ। কিন্তু আমরা প্রতিবাদ জানাচ্ছি। আমরা বিক্ষোভ মিছিল করছি। সারা দুনিয়া এই হত্যাকাণ্ডের বিরুদ্ধে, এই গণহত্যার বিরুদ্ধে, এই নারী নির্যাতনের বিরুদ্ধে, এই শিশু হত্যাকারীদের বিরুদ্ধে। গতকাল যে ত্রাণবাহী জাহাজের নৃশংসভাবে হামলা পরিচালনা করা হয়েছে, পাঁচশ’র অধিক অধিকার কর্মী, ত্রাণবাহী জাহাজের কর্মীদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে, এতে বিশ্বের প্রায় অধিকাংশ দেশ ফিলিস্তিনের স্বাধীনতার পক্ষে মত দিয়েছে।
তিনি বলেন, ফিলিস্তিন ও গাজাকে আলাদা রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ার পরও বিশ্বের কিছু শক্তিধর দেশ ছোট্ট ইসরায়েলের পক্ষে অস্ত্র ও সমর্থন দিয়ে এই নৃশংস ঘটনার সঙ্গে সম্পৃক্ত হচ্ছে। এই অনৈতিক সহায়তা মানবতার বিরুদ্ধে এক ধরনের খেলায় রূপ নিয়েছে। আমরা বিশ্বাস করি শহীদের রক্তের বিনিময়ে ফিলিস্তিন স্বাধীনতা অর্জন করবে ইনশাআল্লাহ। আমরা জাতিসংঘ ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে আহ্বান জানাই— অবিলম্বে ইসরায়েলের হাতকে দমন করুন। দখল হওয়া অঞ্চলগুলো দ্রুত মুক্ত ঘোষণা করুন এবং ত্রাণবাহী জাহাজের কর্মীদের অবিলম্বে মুক্তি দিন। বাংলাদেশ সরকারের নিন্দা ও মুক্তির দাবিকেও আমরা স্বাগত জানাই। যতদিন ফিলিস্তিন স্বাধীনতা অর্জন করবে না, ততদিন মুসলমানদের লড়াই সহানুভূতি ও সংগ্রাম অব্যাহত থাকবে।
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের আমীর মোহাম্মদ সেলিম উদ্দিনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত বিক্ষোভ সমাবেশে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে কেন্দ্রীয় সহকারী সেক্রেটারি মাওলানা আব্দুল হালিম।
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের নায়েবে আমির এডভোকেট ড. হেলাল উদ্দিনের পরিচালনায় অনুষ্ঠিত বিক্ষোভ সমাবেশে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় মজলিসে শুরা সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সহকারী সেক্রেটারি মোহাম্মদ কামাল হোসেন, ড. আব্দুল মান্নান, মো. শামছুর রহমান, কেন্দ্রীয় মজলিসে শুরা সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের সহকারী সেক্রেটারি মাহফুজুর রহমান, ডা. ফখরুদ্দিন মানিক, মহানগরী দক্ষিণের কর্মপরিষদ সদস্য যথাক্রমে আব্দুস সালাম, মাওলানা মোশাররফ হোসেন, ডা. আতিয়ার রহমান, সৈয়দ জয়নুল আবেদীন, কামরুল আহসান হাসান, মাওলানা শরীফুল ইসলামসহ মহানগরী উত্তর ও দক্ষিণের দায়িত্বশীল নেতৃবৃন্দ।
এছাড়াও বায়তুল মোকাররম মসজিদে জুমার নামাজ আদায়কারী হাজার-হাজার তৌহিদী জনতা উপস্থিত ছিলেন।