নিজস্ব প্রতিবেদক :
মুন্সীগঞ্জের সদর উপজেলার আধারা ইউনিয়নের জাজিরা-মীনাবাজার সড়ক দিয়ে ১০ গ্রামের হাজার হাজার মানুষ প্রতিদিন চলাচল করেন। একটি সড়ক উন্নয়ন কাজের নামে ১০ মাস ধরে ৩ ফুট গভীর গর্ত করে ফেলে রেখেছে একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। সামান্য বৃষ্টি হলে সড়কে জমছে পানি। বন্ধ হয়ে যাচ্ছে যান চলাচল। শুকনোর সময় এবারো-থেবরো ও কাদার সড়কে চলতে গিয়ে প্রতিদিন ঘটছে দুর্ঘটনা।
সরজমিন দেখা যায়, জাজিরা সেতুর দক্ষিণ পাশ দিয়ে এ সড়কটি মিনাবাজারের দিকে চলে গেছে। প্রায় ২ কিলোমিটার দূরত্বের এ রাস্তাটিতে ৩ ফুট গভীর নালা করে কেটে রাখা হয়েছে। সড়কের মধ্যে কোথাও কোথাও এক থেকে দেড় ফুট পরিমাণ কাদার স্তর জমে আছে। এর মধ্যদিয়ে ঝুঁকি নিয়ে পথচারী, কৃষিপণ্য, মালবাহী অটোরিকশা, যাত্রীবাহী অটোরিকশা যাতায়াত করছে। স্থানীয়রা জানান, ছরখানেক আগে রাস্তাটিতে ইট বিছানো ছিল।
তবে উন্নয়ন কাজের জন্য প্রায় ১০ মাস আগে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ৩ ফুট গভীর করে মাটি খনন করেন। এরপর থেকে কাজ ফেলে রেখেছে তারা। বৃষ্টি আসলে পুরো সড়কে ৩ ফুট সমান পানি জমে থাকে। এর মধ্যেদিয়ে মানুষ না পারছে স্বস্তিতে আসা-যাওয়া করতে, না পারছে বিকল্প কোনো ব্যবস্থা করতে।
জাজিরা এলাকার শাহাদাত বেপারী (৭০) বলেন, ইটের রাস্তায় খানাখন্দ ছিল। ভোগান্তি নিয়ে কোনোরকম যাতায়াত করতে পারতাম। ঠিকাদার মাটি কেটে খাল বানিয়ে পালিয়েছে। বৃষ্টি এলেই কোমর সমান পানি জমেছে। রোদ উঠলে হাঁটু সমান কাদা হচ্ছে। এ রাস্তা দিয়ে অসুস্থ তো দূরে থাক সুস্থ মানুষ যাতায়াত করতে ১০০ বার চিন্তা-ভাবনা করে।
মুন্সীগঞ্জ সদর উপজেলা এলজিইডি অফিস সূত্রে জানা যায়, ২০২২ সালের ১৭ই মে ৮ কোটি ১৯ লাখ ৬২২ টাকা ব্যয়ে সানটেক-জেএসএমসি নামে একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে কাজের দায়িত্ব দেয়া হয়। প্রতিষ্ঠানটি উপজেলার চরকেওয়ার ইউনিয়নের মুন্সীরহাট এলাকা থেকে শুরু করে আধারা ইউনিয়নের চিতলিয়া-মিনাবাজার হয়ে জাজিরা বালুর মাঠ পর্যন্ত ৭ কিলোমিটার সড়কের কাজ করবে। চলতি বছরের ২৩শে নভেম্বর কাজের মেয়াদ শেষ হবে।
আধারা ইউপি চেয়ারম্যান সোহরাব হোসেন বলেন, রাস্তায় চলাচলের দুর্ভোগের কথা বলে শেষ করা যাবে না। মানুষ যে কী পরিমাণ ভোগান্তিতে আছে যারা এই পথটা ব্যবহার করে তারা ছাডা আর কেউ বুঝবে না। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান, এলজিইডিকে বারবার বলার পরেও কেউ কোনো পদক্ষেপ নিচ্ছে না।
ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান সানটেক এন্টারপ্রাইজের জ্যেষ্ঠ প্রকৌশলী জুলফিকার হায়দার বলেন, জিনিসপত্রের দামের কারণে কাজে কিছুটা বিলম্ব হয়েছিল। আগামী কয়েক দিনের মধ্যে আবারো কাজ শুরু হবে। ২ মাসের মধ্যে সম্পূর্ণ কাজ শেষ করে এলজিইডিকে বুঝিয়ে দেয়া হবে।
মুন্সীগঞ্জ সদর উপজেলা এলজিইডি প্রকৌশলী সফিকুল আহসান বলেন, সড়কটির জাজিরা থেকে মিনাবাজার পর্যন্ত এখানে প্রায় ২ কিলোমিটার রয়েছে। এ অংশটুকুর অবস্থা খুবই খারাপ। কাজ শেষ করতে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে কয়েকবার চিঠি দিয়ে অবহিত করা হয়েছে। এরপরেও তারা কাজ করছে না। তবে এখনো তাদের কাজের সময় রয়েছে।